সত্যবাদিতা বা সততা, সত্যের প্রভাব [ Essays on Truthfulness ] অথবা, সততা একটি মহৎ মানবিক গুণ – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।
Table of Contents
সত্যবাদিতা বা সততা রচনার ভূমিকা:
মানুষের কথায় ও কাজে কোন কিছু গোপন না রেখে সত্য প্রকাশের নামই সত্যবাদিতা। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সত্যবাদিতার মূল্যায়ন হয়ে থাকে। মহামানবদের ভাষায় মানুষের ধর্ম একটি এবং তা হল সত্যবাদিতা। যারা সত্যের পথে থাকে তারা ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক উভয় জীবনে শান্তি ও সম্মান পেয়ে থাকে।
মূল বক্তব্য:
(ক) সত্যবাদিতার সংজ্ঞা ও স্বরূপ :
কপটতা বা মিথ্যাচারের আশ্রয় না নিয়ে, কোন কিছু গোপন বা বিকৃত না করে। সত্যকে অবিকল ও যথার্থভাবে প্রকাশ করার নামই সত্যবাদিতা। সত্যই জ্ঞান, সত্যই ধর্ম। মানুষের সকল প্রকার শুভ চিন্তা, শুভবোধ, জগতের যাবতীয় কল্যাণ, জীবনের সর্বময় পবিত্রতা ও শান্তির উৎস সত্য। এ সভাকে অবলম্বন করে মানব সংসারে যিনি অগ্রসর হন তিনিই সত্যবাদী। তিনিই সৎ মানুষ।
(খ) সত্যবাদিতার সুফল:
সত্যবাদিতা মানব জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ। এ গুণসম্পন্ন লোক কখনও পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে না। সত্যবাদী লোক মাত্রই চরিত্রবান ও মহৎ হয়ে থাকে। তাছাড়া সত্যবাদী লোক সবার বিশ্বাসভাজন হন। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স) এর জীবনী থেকে আমরা জানতে পারি যে, তাঁর বিরুদ্ধবাদীরাও তাঁকে ভালবাসত ও বিশ্বাস করত শুধু তাঁর সত্যবাদিতা গুণের জন্য। তৎকালীন আরবের বর্বর জাতিতে এমন সদগুণের লোক ছিল না বললেই চলে। তাই হযরত মুহাম্মদ (স) কে সবাই ‘আল-আমীন’ বা বিশ্বাসী বলে ডাকত।
একজন দৰিদ্ৰ সত্যবাদী লোকও একজন মিথ্যাবাদী পণ্ডিত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং সমাজে সবার শ্রদ্ধা ও সম্মান পেয়ে থাকে। সত্যকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে মিথ্যাকে পরিহার করতে হয়। মিথ্যাচারী রাখালের গল্প আমরা সবাই জানি। তার জীবনের করুণ পরিণতির মূলে ছিল মিথ্যাচার। মিথ্যাবাদী লোক সর্বনা চরিত্রহীন, ভীতুমন সম্পন্ন হয়। পক্ষান্তরে সত্যবাদী লোক চরিত্রবান ও দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন দুর্জয় সাহসী হয়ে থাকে। মিথ্যা দিয়ে জীবনের খণ্ডকালীন সময় অতিক্রম করা যায়। কিন্তু সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না। তাই জীবনের পথে অগ্রসরমান সৃষ্টির সেরা মানব জাতিকে সত্যব্রত হতে হবে।
(গ) সত্যের প্রভাব:
সত্যের মহিমা দিনে দিনে বিকশিত হয়ে চলেছে। সত্যবাদী লোকের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে। একজন মিথ্যাচারী চরিত্রহীন লোকও জীবনের মোড় পরিবর্তন করতে পারে। পারে সকলের শ্রদ্ধা ও সম্মানের পার হতে। মানব জীবনে সত্যবাদীতার দান তাই অপরিসীম। লোক সমাজে শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও সম্মানের আসন সত্যপ্রিয় ব্যক্তিরাই লাভ করে থাকেন। তাই সত্যবাদী হওয়ার জন্য বাল্যকাল থেকেই অভ্যাস সৃষ্টি করা দরকার। এই মহৎ শুনটির অধিকারী হতে পারলেই মানুষের জন্ম সার্থক হয়, সুন্দর হয়।
উপসংহার :
সত্য সুন্দর বলেই গুগতে সত্যের পথ কন্টক মুক্ত নয়। কিন্তু এ পথ যত দুর্জয়, দুর্গমই হোক না কেন, এ পথ থেকে বিচ্যুত হওয়া মানব জাতির উচিত নয়। সত্য সমাদৃত হয় যুগে যুগে, সব ধর্মে, সব জাতিতে। তাই সত্যের পথে আমাদের অগ্রসর হতে হবে।
আরও পড়ুন: