সওগাত লিপিকা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | গল্প লিখন | ভাষা ও শিক্ষা ,ছোটগল্প (বিকল্প বানান:ছোট গল্প) কথাসাহিত্যের একটি বিশেষ রূপবন্ধ যা দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব এবং একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ছোটগল্পের আকার কী হবে সে সম্পর্কে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেই। সব ছোটগল্পই গল্প বটে কিন্তু সব গল্পই ছোটগল্প নয়। একটি কাহিনী বা গল্পকে ছোটগল্পে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কিছু নান্দনিক ও শিল্পশর্ত পূরণ করতে হয়। ছোটগল্পের সংজ্ঞার্থ কী সে নিয়ে সাহিত্যিক বিতর্ক ব্যাপক। এককথায় বলা যায়- যা আকারে ছোট, প্রকারে গল্প তাকে ছোটগল্প বলে।
সওগাত লিপিকা | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | গল্প লিখন | ভাষা ও শিক্ষা
পুজোর পরব কাছে। ভাণ্ডার নানা সামগ্রীতে ভরা। কত বেনারসি কাপড়, কত সোনার অলংকার, আর ভাণ্ড ভরে ক্ষীরদই, পাত্র ভরে মিষ্টান্ন।
মা সওগাত পাঠাচ্ছেন। বড়ো ছেলে বিদেশে রাজসরকারে কাজ করে। মেজো ছেলে সওদাগর, ঘরে থাকে না; আর কয়টি ছেলে ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া করে পৃথক পৃথক বাড়ি করেছে; কুটুম্বরা আছে দেশবিদেশে ছড়িয়ে। কোলের ছেলেটি সদর দরজায় দাঁড়িয়ে সারাদিন ধরে দেখছে, ভারে ভারে সওগাত চলেছে, সারে সারে দাসদাসী,

থালাগুলি রঙবেরঙের রুমালে ঢাকা। দিন ফুরোল। সওগাত সব চলে গেল। দিনের শেষনৈবদ্যের সোনার ডালি নিয়ে সূর্যাস্তের শেষ আভা নক্ষত্রলোকের পথে নিরুদ্দেশ হল।ছেলে ঘরে ফিরে এসে মাকে বললে, ‘মা, সবাইকে তুই সওগাত দিলি, কেবল আমাকে না। মা হেসে বললেন, ‘সবাইকে সব দেওয়া হয়ে গেছে, এখন তোর জন্য কী বাকি রইল এই দেখ ।
এই বলে তার কপালে চুম্বন করলেন।ছেলে কাঁদোকাঁদো মুখে বললে, ‘সওগাত পাব না?”‘যখন দূরে যাবি তখন সৌগাত পাবি।”‘আর, যখন কাছে থাকি তখন তোর হাতের জিনিস দিবি নে?’ মা তাকে দু হাত বাড়িয়ে কোলে নিলেন; বললেন, ‘এই তো আমার হাতের জিনিস।
আরও দেখুনঃ