সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ | সংলাপ লিখন | ভাষা ও শিক্ষা

সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ এর নমুন তৈরি করে দেয়া হল। এই পাঠটি আমাদের “ভাষা ও শিক্ষা” বিষয়ের “সংলাপ লিখন” বিভাগের একটি পাঠ |  দুই বা ততোধিক ব্যক্তির পারস্পরিক কথােপকথনকে সংলাপ বলা হয়। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত একে অপরের সাথে কথা বাল। লক্ষ করলে দেখতে পাব এর অধিকাংশ কথাই বিচ্ছিন্ন ও অসম্পূর্ণ এবং যথাযথ শব্দ প্রয়ােগ বা বাক্য বিন্যাস সুসংহত নয়।

 

সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ

 

সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ

প্রকাশ : অপসংস্কৃতি বলে চেঁচানো আমাদের একটা ম্যানিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আকাশ : ‘অপ’ শব্দের অর্থ খারাপ। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে খারাপ কিছু দেখলে অপসংস্কৃতি বলা তো অন্যায় নয়, দোষেরও নয়।

প্রকাশ : দ্যাখ, আকাশ, আমরা বড় বেশি রক্ষণশীল। প্রচলিত পুরনো পথে হাঁটতে আমরা অভ্যস্ত। তার একটু ব্যতিক্রম হলেই বা তাতে একটু নতুনত্ব এলেই আমাদের গেল গেল রব। হিন্দি সিনেমার গান, পশ্চিমা রক-পপের অনুপ্রবেশ মাত্রকেই আমরা সর্বনাশের কারণ বলে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকি। অপসংস্কৃতি বলে চেঁচিয়ে দেশ মাথায় করি।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আকাশ : ব্যাপারটা ওভাবে ভাবছিস কেন ?

প্ৰকাশ : কীভাবে ভাববো বল ।

আকাশ : আগে সংস্কৃতি-অপসংস্কৃতির বোধটা পরিষ্কার করে নিই।

প্রকাশ : তাই হোক।

আকাশ : শিক্ষা-দীক্ষা, গান, নাচ, নাটক এসবের একটা সাধারণ নাম হল সংস্কৃতি। একেই ইংরেজিতে বলা হয় কালচার। কেউ বা কালচারের প্রতিশব্দ কৃষ্টি বলেন ৷

প্রকাশ : বুঝলাম। তারপর?

প্রকাশ: সংবাদপত্র, বই, সিনেমা, টেলিভিশন, বেতার, ভিডিও, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।

আকাশ : এগুলোই হল এক অর্থে সংস্কৃতির উপকরণ। এদের ব্যবহারের ও পরিবেশনের দায়-দায়িত্ব অপরিসীম। এরাই মানুষকে শিক্ষা দেয়, মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে, দেশাত্মবোধের উদ্বোধন ঘটায়, পারস্পরিক মমত্ব-সহানুভূতি-সহমর্মিতার বোধ জাগায়, প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার বিকাশ ঘটায়।

আগন্ত : প্রকাশ বুঝেছি, একেই বলে সুস্থ সংস্কৃতি।

 

সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ

 

আকাশ : ঠিক ধরেছিস। বিপরীত হলেই অপসংস্কৃতি। যা মানুষকে বিকৃত রুচির পথে ঠেলে দেয়, অবক্ষয়ের পথে চালিত করে, মানুষের মহৎ ভাবনা-চিন্তার অবলোপ ঘটায়, মানুষের প্রতি মানুষের দায়-দায়িত্ব কর্তব্যবোধ ধ্বংস করে, ঘৃণায় বিদ্বেষে-জিঘাংসায় অমানুষ করে তোলে, তাকে মানুষের শুভবোধের পরিচয় বলবি? তাকে সংস্কৃতি, না অপসংস্কৃতি বলবি ?

প্রকাশ : তা না হয় হল। কিন্তু পশ্চিমা ঝড়ের তাণ্ডব ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করে দেয় বলে কি সারা বছর ঘরের দরজা-জানালা রুদ্ধই থাকবে? বাইরের আলো হাওয়ার অবাধ চলাচলের পথ না থাকলে ঘরের মানুষটা বাঁচবে কী করে?

আকাশ : না, প্রবেশের সুযোগ অবশ্যই থাকবে। তবে অবাঞ্ছিতকে বর্জন করে কেবল বাঞ্ছিতটুকু নেবার যথার্থ গ্রহণী—ক্ষমতা ও সেই নির্বাচনী-মানসিক দৃঢ়তা থাকা দরকার। দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে— এই উদার সমন্বয়ী মনোভাবের মধ্য দিয়েই তে জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি সব কিছুরই উৎকর্ষ সম্ভব।

প্রকাশ : তাহলে বল, বাধাটা কেবল সুস্থতার অন্তরায় যেটুকু।

আকাশ : অবশ্যই ।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment