বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা রচনা [ Bangamata Sheikh Fazilatunnesa Essay ]

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সাহসিনী ও মহান মমতাময়ী নারী। তাঁর জীবন, সংগ্রাম ও অবদান সম্পর্কে জানা প্রতিটি সচেতন নাগরিকের কর্তব্য। নানা ধরনের পরীক্ষায় বঙ্গমাতাকে নিয়ে রচনা লেখার প্রয়োজন হতে পারে, তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা অর্জন করা।

এই উদ্দেশ্যে আমরা নিচে একটি রচনার নমুনা তুলে ধরছি, যা পাঠকদের প্রাথমিক ধারণা দিতে সাহায্য করবে। অনুগ্রহ করে পুরো রচনাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং তারপর নিজের ভাষায় ও চিন্তায় সমৃদ্ধ করে লিখুন। মুখস্থ করা নয়, বরং বোঝার চেষ্টা করুন—এটাই হবে প্রকৃত শ্রদ্ধা ও শিক্ষার পথ।

 

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা রচনা

সূচনাঃ

“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

এই অমর পঙ্ক্তির মাধ্যমে কবি যেমন মানব সভ্যতায় নারীর অসামান্য অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন, তেমনি বাঙালি জাতির ইতিহাসেও এমন এক মহীয়সী নারীর নাম চিরভাসমান—তিনি হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।

তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনসংগীনি, যাঁকে বঙ্গবন্ধু ভালোবেসে ‘রেণু’ নামে ডাকতেন। দুই কন্যা ও তিন পুত্র সন্তানের জননী হয়েও তিনি শুধু একজন গৃহিণী হিসেবে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। বরং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ে তিনি ছিলেন এক নিরব অথচ দুর্দম প্রেরণার উৎস।

শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী নয়, তিনি ছিলেন এক অসাধারণ সংগঠক, যিনি পর্দার অন্তরাল থেকে নেতৃত্বে ও দিকনির্দেশনায় রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। তাঁর সাহস, দূরদর্শিতা ও আত্মত্যাগ বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়সম উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেছে, আর বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে হয়ে উঠেছে এক অন্তর্লীন শক্তি।

বঙ্গমাতার অবদান শুধু পারিবারিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, বরং তা ছিল জাতির ইতিহাস গঠনে এক অনন্য অধ্যায়।

 

বঙ্গমাতার জন্ম ও পরিচয়ঃ

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শেখ জহুরুল হক এবং মাতা হোসনে আরা বেগম। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান ফজিলাতুন্নেছার গায়ের রং ছিল ফুলের মতো কোমল ও উজ্জ্বল, সে কারণে মা আদর করে তাঁকে ‘রেণু’ বলে ডাকতেন। দুর্ভাগ্যক্রমে মাত্র তিন বছর বয়সেই তিনি পিতৃহারা হন এবং পাঁচ বছর বয়সে হারান মাতাকেও। পরবর্তীতে দাদার মৃত্যুর পর তাঁকে লালন-পালনের জন্য আনা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মায়ের কাছে। বঙ্গবন্ধুর মা সায়েরা খাতুন রেণুকে নিজের সন্তানদের মতোই ভালোবাসায় বড় করে তোলেন।

পিতামহ শেখ আবুল কাশেমের সিদ্ধান্তে রেণুর বয়স যখন মাত্র তিন, তখন তাঁর চাচাতো ভাই শেখ মুজিবুর রহমানের (তখন বয়স তেরো) সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ১৯৩৮ সালে, আট বছর বয়সে রেণু এবং আঠারো বছর বয়সে মুজিবের আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়।

 

বঙ্গমাতার শৈশব ও কৈশোরঃ

বঙ্গমাতার শৈশব কেটেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর টুঙ্গিপাড়ার পরিবেশে—পাখির ডাক, গাছপালা ও মধুমতী নদীর ধারে। ছোটবেলা থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর চিন্তাভাবনা, মানবপ্রেম, সামাজিক দায়িত্ববোধ এবং নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। এই সংস্পর্শেই তাঁর মধ্যে গড়ে ওঠে সহানুভূতিশীল, দৃঢ়চেতা এবং প্রজ্ঞাবান নারীর গুণাবলি।

 

বঙ্গমাতার পারিবারিক জীবন:

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও বঙ্গবন্ধুর সংসার ছিল পরিপূর্ণ, প্রীতিময় ও সংগ্রামী। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে জন্মগ্রহণ করেন পাঁচ সন্তান—দুই কন্যা: শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা; এবং তিন পুত্র: শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। বঙ্গমাতা শুধুমাত্র একজন স্ত্রী ও মা নন, বরং তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সহচর ও সহযোদ্ধা।

 

বঙ্গমাতার দৃঢ় মানসিকতা:

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী ও রাজনৈতিক সহচর—দুই দিকেই সমানভাবে শক্তিশালী। তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর সংগ্রামময় জীবনে পাশে থেকেছেন নীরব কিন্তু অদম্য শক্তি হয়ে। শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ কারাবরণ ও রাজনৈতিক জীবনসংগ্রামের সময় তিনি সন্তানদের আগলে রেখে ঘরে বাইরে ছিলেন দায়িত্ববান, বিচক্ষণ ও ধৈর্যশীলা। তাঁর অসীম সাহস, দূরদর্শিতা ও আত্মত্যাগই তাঁকে ইতিহাসে ‘বঙ্গমাতা’ হিসেবে অমর করে রেখেছে।

 

বঙ্গমাতার ত্যাগী মনোভাব:

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত এক নাগাড়ে দুই বছরের বেশি সময় বঙ্গবন্ধু জেলের বাইরে থাকতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতা সংসার সামলে পাঁচটি সন্তানকে মানুষ করেছেন। ছেলেমেয়েদের পড়ার খরচ, নানা রকম প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, আর্থিক সহযোগিতা করা, সমস্যাসংকুল সময়ে আওয়ামী লীগকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা, দলের আলোচনার সারাংশ কৌশলে জেলখানায় পৌঁছে দেওয়া; আবার বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে তুলে ধরা, বঙ্গবন্ধুর মামলার নথিপত্র সংরক্ষণ করা, মামলার খরচ যোগানোর জন্য প্রয়োজনে নিজের গয়না বিক্রি করা; এ সবই তিনি করেছেন নীরবে নিভৃতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও কর্মের ওপর আস্থা রেখে এ দেশের মানুষকে পাকিস্তানি শাসন থেকে মুক্ত করার অভিপ্রায়ে।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকার কারণে বঙ্গবন্ধু সংসারে সময় দিতে পারেননি একেবারেই। বঙ্গমাতাই পালন করেছেন বঙ্গবন্ধুর যাবতীয় দায়িত্ব। পুত্রবধূ ও শ্বশুর-শাশুড়ির পারস্পরিক নির্ভরতার কথা আমরা জানি সেই টুঙ্গিপাড়ার কাল থেকেই। মূলত ফজিলাতুন্নেছাই হয়ে ওঠেছেন পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, আশ্রিতজনসহ বৃহৎ শেখ পরিবারের কেন্দ্রবিন্দু। দেবরের বিয়ে, শ্বশুর-শাশুড়ির চিকিৎসা, ননদদের নানা সমস্যার সমাধান; সব কিছুর চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছেন ফজিলাতুন্নেছা।

 

বঙ্গমাতার অনুপ্রেরণা দানকারী:

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ, সাহস আর অনুপ্রেরণা যুগিয়ে গেছেন আমৃত্যু। কোনো পদ-পদবির অধিকারী না হয়েও বঙ্গমাতা ছিলেন নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য প্রতীক। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘জাতির পিতার জন্য প্রেরণা, শক্তি ও সাহসের উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা।’

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অনন্য ভূমিকার কথা আমরা বিশিষ্টজনদের স্মৃতিচারণা এবং লেখা থেকে জানতে পারি। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।কবির ভাষায় বলতে হয়-

কোনো কালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি
প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, বিজয় লক্ষ্মি নারী।

বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং গবেষক ড. নীলিমা ইব্রাহিম তাঁর লেখা ‘বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ বইটিতে লিখেছেন, “দৈহিক ও মানসিক সব কিছু নিয়েই বঙ্গবন্ধু ছিলেন আনন্দময় পুরুষ। আর এই আনন্দের উৎস তো ঘরের ভেতর ঘোমটার আড়ালে।গভীর আস্থা ছিল বঙ্গবন্ধুর রেণুর প্রতি। সংস্কৃত পণ্ডিতরা যাকে বলেছেন ‘সখা, সচিব’ রেণু ছিলেন তাই। (পৃষ্ঠা : ৭১)

 

বঙ্গমাতা মহাকালের সাহসী নারী:

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে শুধু রাজনৈতিক দিকনির্দেশনাই নয়, ফজিলাতুন্নেছা নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখে, প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতাময়ী জননীর মতো। অসুস্থ মওলানা ভাসানীকে দেখতে ফলমূল, খাবার-দাবার নিয়ে ছুটে গেছেন হাসপাতালে। আবার খন্দকার মোশতাক জেলে থাকাকালীন তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে লন্ডন পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন।

বেগম মুজিব কখনো কোনো দায়িত্ব পালনে পিছপা হননি। পরিচিত, অপরিচিত যে কেউ তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য এলে খালি হাতে ফিরে যায়নি কখনোই। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালে ফজিলাতুন্নেছার জেলখানায় খাবার পাঠানোটা ছিল বিশেষ আলোচনার বিষয়। বঙ্গবন্ধুর সহবন্দি কারও কিছু খেতে ইচ্ছে করলে বঙ্গবন্ধুকে তা জানানো হলে সে খবর পৌঁছে যেত বেগম মুজিবের কাছে।

আর বেগম মুজিব নিজ হাতে রান্না করে খাবার নিয়ে হাজির হতেন জেলখানায়। বঙ্গবন্ধু যখন কারামুক্ত হয়ে বাইরে অবস্থান করতেন, নেতাকর্মী,সাংবাদিকসহ নানা ধরনের লোকজনের আনাগোনায় তখন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি সরগরম থাকত। এ বাড়ি থেকে কখনো কেউ খালি মুখে ফিরে যেতে পারত না।

লেখক-সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীর স্মৃতিচারণমূলক ‘স্মৃতিতে বঙ্গবন্ধু পত্নী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ রচনায় লিখেছেন,‘৩২ নম্বরে এলে ভাবি প্রায়ই চা নিয়ে ঘরে ঢুকতেন। তিনি জানতেন আমি পেটুক। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্য শুধু চা এলেও আমার জন্য সঙ্গে থাকত তার হাতে বানানো মিষ্টি, বিস্কিট, কখনো একটু পুডিং বা এক টুকরো কেক।’

এই রকম আর একটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় গবেষক মহিউদ্দিন আহমদের ‘ইতিহাসের যাত্রী’ বইটিতে। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বিএসএস) প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাংবাদিক আমানউল্লাহর জবানিতে ফজিলাতুন্নেছার আতিথেয়তা, মমত্ববোধ আর মাতৃরূপের এক অনন্য নজির উপস্থাপিত হয়েছে। একবার ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে কোনো একটি অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন। আপ্যায়নপর্বে তিনি মিষ্টিমুখ করেছিলেন, কিন্তু বেগম মুজিব তাকে নিজ হাতে তুলে দিতে পারেননি বলে তাঁকে আবারও মিষ্টি খেতে অনুরোধ করেন। বইটিতে জনাব আমানউল্লাহর ভাষ্যটি বর্ণিত হয়েছে এ ভাবে : ‘বললাম,আমি তো মিষ্টি খেয়েছি। তুমি খাইছ, ঠিক আছে, আমি তো দেই নাই তোমাকে। নাও। এই কথাটি দারুণ টাচ করল। হাউ এফেকশনেট শি ইজ।’

 

বঙ্গমাতার প্রখর কৃতজ্ঞতাবোধ:

বেগম ফজিলাতুন্নেছার চরিত্র মানবিকতা আর কৃতজ্ঞতাবোধের এক অনন্য উদাহরণ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ঘোষিত হলেও বেগম মুজিব পরিবারের সদস্যসহ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দি অবস্থায় ছিলেন। ভারতীয় মিত্র বাহিনীর মেজর তারার হস্তক্ষেপে বাড়ির পাহারায় নিয়োজিত পাকিস্তানি বাহিনীর সৈন্যরা ১৭ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে। বঙ্গবন্ধুর জামাতা এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বর্ণনায় জানা যায় : দুই জন পাকিস্তানি সৈনিকের সহায়তায় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ জামাল বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল সেই দুই জন সৈনিককে যেন কোনো রকম শাস্তি না দেওয়া হয়, সে জন্য বেগম মুজিব মেজর তারাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলেন।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সম্পর্কে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের একটি মন্তব্য বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। একটি প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন ‘তিনি (শেখ ফজিলাতুন্নেছা) আমাদের সময়ের খনা, এই সময়ের বেগম রোকেয়া, এই সময়ের চন্দ্রাবতী। তিনি ইতিহাসের মানুষ।’ এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চারিত্রিক দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা, মানবিকতা, মমত্ববোধ আর ভালোবাসা দিয়ে রচনা করেছিলেন ইতিহাসের এক মহাযজ্ঞ।

 

উপসংহার :

বঙ্গবন্ধুর আজন্ম ছায়াসঙ্গী, সহযোদ্ধা, সকল অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা যে সম্মান আর ভালোবাসায় দুজন দুজনের প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিলেন, ছিলেন পরস্পরের পরিপূরক, মৃত্যুকেও তাঁরা বরণ করে নিলেন একই সঙ্গে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনিও নির্মমভাবে নিহত হন। তাঁদের সকলের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

Leave a Comment