শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে মানপত্র রচনা | মানপত্র | ভাষা ও শিক্ষা , আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যক্তি বা সমষ্টিকে বরণ করা, বিদায় দেওয়া, সংবর্ধনা ও অভিনন্দন জানানোর জন্য যে পত্র রচনা করা হয়, তাকে মানপত্র বলে। মানপত্র সাধারণত বহু দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে পাঠ করা হয়। এ ধরনের পত্রের ভাষা খানিকটা অলংকারমণ্ডিত হতে পারে। তবে এর আয়তন সংক্ষিপ্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। যার বা যাদের উদ্দেশে মানপত্র পড়া হয়, মানপত্রে তার বা তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, কৃতিত্ব প্রভৃতির উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
যখন কেউ নতুন চাকরিতে অথবা নতুন ব্যক্তিগত অবসর গ্রহণের মত পথ ধরে চলছেন, তখন সর্বদা একটি অভিনন্দন পত্র বা নোট পাঠাতে ভাল ধারণা থাকে। এটা তাদের সাফল্যের সাথে চিত্তাকর্ষক যে ব্যক্তি প্রদর্শন একটি দুর্দান্ত উপায় এবং তারা চলে গেছে যখন তাদের মিস্ হবে। এটি আপনার পেশাদারী নেটওয়ার্কগুলিতে যোগাযোগ বজায় রাখার এবং তাদের বজায় রাখার জন্য এটি একটি ভাল ভিত্তিও প্রদান করে।
শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে মানপত্র রচনা
সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির
শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা
ভবিষ্যতের যাত্রা তোমাদের শুভ হোক
বিদায়ী বন্ধুগণ,
‘ভুবনের ঘাটে ঘাটে এক হাটে লও বোঝা শূন্য করে দাও অন্য হাটে।’ ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তোমাদের পদস্পর্শে একদিন মুখর হয়ে উঠেছিল। আজ বেজে উঠেছে বিদায়ের বেদনার সুর। সে সুর এখন মূর্ছিত হচ্ছে কলেজের অঙ্গনে, মূর্ছিত হচ্ছে প্রতিটি প্রাণ।
হে অভিযাত্রী দল,
এই কলেজে তোমাদের স্মৃতিমধুর অনেকগুলো দিন কেটেছে। কঠোর অধ্যবসায়, নিরলস শ্রম ও আন্তরিক আগ্রহে নিজেদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ার সাধনায় তোমরা সর্বদাই সচেষ্ট ছিলে। তোমাদের প্রাণোচ্ছল সাহচর্য আর শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকদের প্রীতিস্নিগ্ধ শিক্ষায় কলেজের দিনগুলো হয়েছে ঐতিহ্যময়। আজ ভবিষ্যতের সিঁড়িতে তোমরা যখন প্রজ্ঞার ছায়া ফেলতে যাচ্ছ তখন বলি, — এই কলেজের স্মৃতিময় দিনগুলো আর প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক অবদানের কথা যেন তোমরা ভুলে না যাও। এই বিদ্যানিকেতনের অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্য যেন হয় তোমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রেরণা।
হে বন্ধুগণ,
আমাদের এই দেশ আজ দারিদ্র্য, অশিক্ষা, সংকীর্ণতা, পশ্চাৎপদতার আঁধারে ঢাকা। তোমরা নতুন শতাব্দীর অগ্রপথিক।
তোমরা দুর্গম পথের দুঃসাহসী অভিযাত্রী দল। উচ্ছল তারুণ্যের প্রাচুর্য তোমাদের মধ্যে বিরাজমান। তোমরা লক্ষ্য অর্জনে অটল, অবিচল। তোমরা অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী। বিশ্বায়নের নবদিগন্তে এদেশে নতুন নতুন অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জনে তোমরা আমাদের প্রেরণা হবে এই প্রত্যাশা নিয়ে কামনা করবো— মহৎ আদর্শে নতুন দেশ ও নতুন বিশ্ব গড়ার সাধনায় তোমরা সফল হও।
তোমরা দেশের আগামী দিনের কর্ণধার। তোমাদের সততা, অধ্যবসায় ও কর্তব্যনিষ্ঠা, সংযত আচরণ, বিনম্র মনোবৃত্তি, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিসার, গভীর পাঠানুরাগ তোমাদের দান করুক মহত্তম চারিত্রিক সম্পদ। তোমরা দেশের হও, দশের হও, বিশ্বের হও। তোমাদের চিন্তা ও কর্ম হোক দেশব্রতী কর্মীর, সৃষ্টিশীল কারিগরের, মানবমুক্তির সৈনিকের। তোমরা সার্থক হও। তোমাদের সাধনা হোক দেশ ও জাতির ঐতিহ্যগর্ব ইতিহাস।
২ মে, ২০০০
ঢাকা
তোমাদের সাথী ছাত্রছাত্রীবৃন্দ
কলেজ, ঢাকা।
আরও দেখুন: