Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎস, গঠন ও অর্থ)- ব্যাকরণ বাংলা ২য় পত্র

maxresdefault শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎস, গঠন ও অর্থ)- ব্যাকরণ বাংলা ২য় পত্র

শব্দের শ্রেণীবিভাগ – শব্দের শ্রেণীবিভাগ বা বাংলা ভাষার শব্দের শ্রেণীবিভাগ, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ অধ্যায়নের গুরুত্বপুর্ন অংশ। আজকে আমরা শব্দের শ্রেণীবিভাগ জানতে গিয়ে জানবো- শব্দের উৎস মূলক শ্রেণীবিভাগ, শব্দের গঠন মূলক শ্রেণীবিভাগ ও শব্দের অর্থ মূলক শ্রেণীবিভাগ।

শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎস, গঠন ও অর্থ)

 

শব্দের উৎস মূলক শ্রেণীবিভাগ, শব্দের গঠন মূলক শ্রেণীবিভাগ ও শব্দের অর্থ মূলক শ্রেণীবিভাগ বিষয়গুলো জানা খুবই মজার। আশা রাখি সবাই মজা পাবে। এই পোষ্টটি এসএসসি স্তরের শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততি (SSC Bangla 2nd Paper), অর্থাৎ নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততি (Class 9 Bangla 2nd Paper) এবং দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততিতে (Class 10 Bangla 2nd Paper) সহায়তা করবে। পাশাপাশি এইচএসসি শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততি (HSC Bangla 2nd Paper), অর্থাৎ একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততি (Class 9 Bangla 2nd Paper) এবং দ্বদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র প্রস্ততিতে (Class 10 Bangla 2nd Paper) সহায়তা করবে। পাশাপাশি এই পোষ্টটি পলিটেকনিক (Polytechnic Bangla) এর বাংলা (৬৫৭১১) বিষয় এ শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে।

 

 

ভাষাবিজ্ঞানে, শব্দ বলতে কোনো ভাষার মৌখিক ও লৈখিক একককে বোঝায়। ব্যাকরণিক সংজ্ঞা মতে, শব্দ বলতে কিছু অর্থবোধক ধ্বনিসমষ্টিকেও নির্দেশ করে, যা একটি বাক্য গঠনের মূল উপাদান। এক্ষেত্রে শব্দকে “পদ” বলে। শব্দ একাধিক বর্ণ ও অক্ষর সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। শব্দ‌কে ব্যুৎপত্তি, গঠন ও অর্থ অনুসা‌রে বি‌ভিন্ন ভাগে ভাগ করা হ‌য়ে থা‌কে । এছাড়া রয়েছে আরও অনেক তথ্য, যা নিম্নে উল্লেখিত ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে।

 

 

শব্দের শ্রেণীবিভাগ (উৎস, গঠন ও অর্থ)- ব্যাকরণ বাংলা ২য় পত্র

 

শব্দ কাকে বলে:

ভাষার মূল উপাদান শব্দ। বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ। যদি একটি নির্দিষ্ট অর্থ একাধিক ধ্বনির সমাবেশে প্রকাশ করা হয় তবে তাকে একটি শব্দ বলে। আবারও বলা যেতে পারে যে একটি শব্দ একটি বিশেষ কৌশলের সাহায্যে উচ্চারিত অর্থপূর্ণ ধ্বনির সমষ্টি। অর্থাৎ যখন এক বা একাধিক বর্ণ একত্রিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে তখন তাকে শব্দ বলে।

অর্থাৎ শব্দগুলো অর্থপূর্ণ বর্ণ বা বর্ণের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন- কলম, এই তিনটি ধ্বনি একত্রে কালাম (ক্+ল্+ম্)। কলম একটি লেখার যন্ত্র বোঝায়।

আবার মনের অনুভূতি প্রকাশের জন্য কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে একটি বাক্য তৈরী হয়। যেমন – মেয়েটি প্রতিদিন কলেজে আসে। এই বাক্যে মেয়েটি, প্রতিদিন, কলেজে, আসে – তাদের প্রত্যেকটি একটি শব্দ। আবার, শব্দগুলিও অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা শব্দের সংমিশ্রণ যা শব্দ ছাড়াই বিশেষ অনুভূতি, বস্তু এবং প্রাণী ইত্যাদি প্রকাশ করে। যেমন- আমি, তুমি, ঘোড়া, গাড়ি, সে ইত্যাদি।

 

 

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

শব্দের শ্রেণীবিভাগ:

পণ্ডিতগণ বাংলা শব্দকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এইগুলো –

 উৎসমূলক শ্রেণীবিভাগ
 গঠনমূলক শ্রেণীবিভাগ
 অর্থমূলক শ্রেণীবিভাগ

 

উৎস অনুসারে শব্দ:

বাংলা শব্দকে তাদের উৎপত্তি অনুসারে ৫ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

 তৎসম শব্দ
 অর্ধ-তৎসম শব্দ
 তদ্ভব বা প্রাকৃত শব্দ
 দেশী শব্দ
 বিদেশী শব্দ

তৎসম শব্দ:

তাৎ মানে “তার” এবং সম মানে “সমান”। তৎসম শব্দের অর্থ সংস্কৃতের সমান। । যে সকল শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলা ভাষায় এসেছে কোন প্রকার পরিবর্তন ছাড়াই তাদেরকে তৎসম শব্দ বলে। যেমন- সিংহ, পুত্র, রাজা, শিশু, মা, আকাশ, শিক্ষা।

অর্ধ-তৎসম শব্দ:

তৎসম অর্থ সংস্কৃত এবং অর্ধ-তৎসম অর্থ অর্ধ-সংস্কৃত। বাংলায় কিছু সংস্কৃত শব্দ সামান্য বা সামান্য পরিবর্তিত হয়ে ব্যবহৃত হয়, এগুলোকে বলা হয় অর্ধ-তৎসম শব্দ। অর্থাৎ মানুষের মুখে উচ্চারণ বিকৃতির ফলে যেসব তৎসম শব্দ গঠিত হয় তাকে অর্ধ-তৎসম বলে। যেমন- কেষ্ট, গিন্নি, গেরাম, চেদ্দা, কিচ্চু ইত্যাদি ।

তদ্ভব শব্দ কাকে বলে

তদ্ভব বা প্রাকৃত শব্দ:

তৎ অর্থ তার , ভব অর্থ উৎপন্ন অর্থাৎ, সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় এসেছে সেগুলো তদ্ভব শব্দ। এদেরকে শুদ্ধ বাখাটি বাংলা শব্দও বলা হয়। যেমন- হাত, চাল, আংটি, গাত্র ইত্যাদি।

দেশি শব্দ:

আমাদের দেশের (বাংলাদেশ) আদি বাসিন্দারা যে শব্দ ব্যবহার করেন তাকে দেশি শব্দ বলে। অর্থাৎ আমাদের দেশে আর্য জনগোষ্ঠীর আগমনের পূর্বে যেসব লোকের বসবাস ছিল তাদের কিছু শব্দ এখনো বাংলা ভাষায় আছে, সেগুলোকে দেশি শব্দ বলা হয়। যেমন- ডাব, কুলা, লাঠি, খাঁচা, পেট, ভাত, কাঠি, তেঁতুল ইত্যাদি।

বিদেশী শব্দ:

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ভাষা থেকে যেসব শব্দ এসেছে তাকে বিদেশী শব্দ বলে। উদাহরণ স্বরূপ –
আরবি: জান্নাত, জাহান্নাম, কলম, জিন, জামিন, জামা, নবী, রাসুল ইত্যাদি।
ফার্সি: সুদ, খরচ, চাকরি, কাপড়, চাদর,ও ইত্যাদি।
ইংরেজি: ব্যাংক, চেয়ারম্যান, স্যার, প্যান্ট, কোর্ট, টিকিট, শার্ট, অফিসার, ভিসা ইত্যাদি।
পর্তুগিজ: জানালা, আনারস, বালতি, রুটি, সাবান ইত্যাদি।
তুর্কি: বাবা, বন্দুক, বিবি, বেগম, দরগা, চাকু, খানম ইত্যাদি।
চাইনিজ: চা, চিনি, এলাচ, ঝড় ইত্যাদি।
বার্মিজ: লুঙ্গি, ছত্রাক, কিয়াং ইত্যাদি।
হিন্দি: ঠান্ডা, পানি, বাচ্চা, খানপিনা, ভরসা ইত্যাদি।
মালয়: গুদাম, সাগো ইত্যাদি।
ইন্দোনেশিয়ান: বাতাবি বর্তমান ইত্যাদি
গুজরাটি: খদ্দর, হরতাল ইত্যাদি।
রাশিয়ান: সোভিয়েত, মেনশেভিক ইত্যাদি
পাঞ্জাবি: চাহিদা, শিখ ইত্যাদি।
এছাড়া বাংলা ভাষায় অন্যান্য ভাষার কিছু শব্দ রয়েছে।

গঠনমূলক শ্রেণীবিভাগ

গঠন অনুসারে শব্দগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
মৌলিক শব্দ
সাধিত শব্দ

মৌলিক শব্দঃ

যে সকল শব্দকে বিশ্লেষণ করা যায় না বা ভাঙা যায় না তাদেরকে মৌলিক শব্দ বলে। যেমন- গোলাপ, নাক, ফল, হাত ইত্যাদি।

যৌগিক শব্দ:

যে সকল শব্দকে বিশ্লেষন বা ভাঙানো যায় তাদেরকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন- √ চল + অন্ত = চলমান, বাঘ + আ = বাঘ, চাঁদ + মুখ = চাঁদমুখ ইত্যাদি।

 

অর্থমূলক শ্রেণীবিভাগ

অর্থগত ভাবে শব্দগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
 যৌগিক শব্দ
 রূঢ়ি শব্দ
 যৌগরূঢ় শব্দ

যৌগিক শব্দ:

যে সকল শব্দের ব্যুৎপত্তিগত ও ব্যবহারিক অর্থ একই থাকে তাদেরকে যৌগিক শব্দ বলে। উদাহরণ স্বরূপ –
 গায়ক= গৈ + অক। অর্থঃ গান করে যে
 কর্তব্য = কৃ + তব্য – অর্থ : যা করা উচিত।
 বাবুয়ানা = বাবু + আনা – অর্থ : বাবুর ভাব।
 মধুর = মধু + র -অর্থ : মধুর মতো মিষ্টি গুণযুক্ত
 দৌহিত্র = দুহিতা+ষ্ণ্য –অর্থ : কন্যার পুত্র, নাতি ৷
 চিকামারা = চিকা+মারা –অর্থ : দেওয়ালের লিখন ।

রূঢ়ি শব্দ :

যে শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অর্থের অনুগামী না হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে। যেমন—হস্তী-হস্ত + ইন, অর্থ-হস্ত আছে যার; কিন্তু হস্তী বলতে একটি পশুকে বোঝায়। গবেষণা (গো+এষণা) অর্থ—গরু খোঁজা। বর্তমান অর্থ ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা ৷

 

যোগরূঢ় শব্দ :

সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরূঢ় শব্দ বলে।

 

 

আরও দেখুন:

Exit mobile version