Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

লিঙ্গ ও লিঙ্গভেদে শব্দভেদ | পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ (লিঙ্গ) | ভাষা ও শিক্ষা

লিঙ্গ ও লিঙ্গভেদে শব্দভেদ – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিভাগের “পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ (লিঙ্গ)” বিষয়ের একটি পাঠ। “মানুষ যে শব্দের উপর ব্যক্তিত্ব আরোপ করতে চেয়েছে তার প্রমাণ ভাষার এই ‘লিঙ্গ কল্পনা’। পুরুষবাচক শব্দ পুংলিঙ্গ বলে চিহ্নিত হল আর স্ত্রীবাচক শব্দ চিহ্নিত হল স্ত্রীলিঙ্গ হিসেবে। ‘চিহ্নিত’ শব্দটি ব্যবহার করলাম, কারণ ‘লিঙ্গ’ আর ‘চিহ্ন’ সমার্থক।

লিঙ্গ ও লিঙ্গভেদে শব্দভেদ | পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ (লিঙ্গ) | ভাষা ও শিক্ষা

কিন্তু যেসব জিনিস অচেতন, তারা সব যদি ক্লীবলিঙ্গ বলে চিহ্নিত হত, তাহলে কথা ছিল না। কিন্তু এই অচেতন জিনিসগুলোর কিছু চিহ্নিত হল পুংলিঙ্গ হিসেবে, কিছু চিহ্নিত হল স্ত্রীলিঙ্গ হিসেবে। লতা, বৃক্ষ, জল— এসবই অচেতন কিন্তু সংস্কৃতে লতা স্ত্রীলিঙ্গ, বৃক্ষ পুংলিঙ্গ, জল ক্লীবলিঙ্গ।

 

 

সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে হিন্দি, পাঞ্জাবি, মারাঠি ইত্যাদি যেসব ভাষা এল তাতে অচেতন পদার্থের এই কাল্পনিক লিঙ্গ রয়ে গেল। হিন্দিতে রোটী স্ত্রীলিঙ্গ, দহী পুংলিঙ্গ। এই কাল্পনিক লিঙ্গ উর্দুতেও রয়ে গেল, তাকে বলা হল ‘জিস্‌ কেয়াসী’ (জিস্‌ = লিঙ্গ, কেয়াসী = কাল্পনিক)। বাংলা, অসমিয়া ও ওড়িয়াতে লিঙ্গ নির্ণয়ে এই কাল্পনিকতা নেই।

বাংলায় যে-শব্দ পুরুষবাচক তা পুংলিঙ্গ, যা শ্রীবাচক তা শ্রীলিঙ্গ, যা প্রাণহীন তা ক্লীবলিঙ্গ। ‘বাবা’ পুংলিঙ্গ, ‘মা’ স্ত্রীলিঙ্গ এবং ‘ঘর’ ক্লীবলিঙ্গ।” ১ • কিন্তু কিছু শব্দ পুরুষ স্ত্রী উভয় বোঝায়। যেমন : সন্তান। “জগতে বা প্রকৃতিতে বস্তুসমূহ পুরুষ, স্ত্রী ও নপুংসক বা ক্লীব— এই তিন জাতি বা শ্রেণিতে পড়ে। বহু স্থলে ভাষাতেও প্রাকৃতিক অবস্থা-অনুসারে নাম-বাচক শব্দগুলিকেও এই তিন শ্রেণিতে ফেলা হয়।

 

 

পুরুষ-জাতীয় বস্তুর নামকে পুংলিঙ্গ, স্ত্রী-জাতীয় বস্তুর নামকে স্ত্রীলিঙ্গ, এবং ক্লীব বা নপুংসক-জাতীয় বস্তুর নামকে ক্লীবলিঙ্গ বলা হয়।” [ জানা দরকার যে, পৃথিবীতে বহু ভাষা আছে যেখানে লিঙ্গের ধারণা বস্তুটির পুরুষবাচকতা, স্ত্রীবাচকতা বা ক্লীববাচকতার ওপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে শব্দে গঠনচরিত্রের ওপরে। এরকম ভাষা হলো উর্দু, হিন্দি, আরবি, রুশ, জর্মন প্রভৃতি ।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

*সব ভাষায় লিঙ্গভেদে শব্দভেদ আছে, বাংলা ভাষায়ও আছে। বাংলা ভাষায় বহু বিশেষ্য পদ রয়েছে যাদের কোনোটিতে পুরুষ ও কোনোটিতে স্ত্রী বোঝায়। যে শব্দে পুরুষ বোঝায় তাকে পুরুষবাচক শব্দ আর যে শব্দে স্ত্রী বোঝায় তাকে স্ত্রীবাচক শব্দ বলে। যেমন- বাপ-মা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, কেউই মৃত্যুর সময় তার কাছে ছিল না। এ বাক্যে বাপ, ভাই ও ছেলে পুরুষবাচক শব্দ আর মা, বোন ও মেয়ে স্ত্রীবাচক শব্দ।

 

আরও দেখুন:

Exit mobile version