যেখানে দেখিবে ছাই | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাববীজটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি, এ ধরনের কবিতার চরণে বা গদ্যাংশে সাধারণত মানবজীবনের কোনাে মহৎ আদর্শ, মানবচরিত্রের কোনাে বিশেষ বৈশিষ্ট্য, নৈতিকতা, প্রণােদনমূলক কোনাে শক্তি, কল্যাণকর কোনাে উক্তির তাৎপর্যময় ব্যঞ্জনাকে ধারণ করে আছে। ভাবসম্প্রসারণ করার সময় সেই গভীর ভাবটুকু উদ্ধার করে সংহত বক্তব্যটিকে পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
যেখানে দেখিবে ছাই / উড়াইয়া দেখ তাই / পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন
পৃথিবীতে কোনো বস্তুকেই তুচ্ছজ্ঞান করা উচিত নয়। অতি তুচ্ছ বস্তুর মধ্যেও হয়তো লুকিয়ে থাকতে পারে বিশাল কোনো সম্ভাবনা। বস্তুর প্রয়োজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়। কাজেই বস্তুর স্বাভাবিক অন্তর্হিত গুণের কথা চিন্তা করে সব জিনিসকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা আৱশ্যক। অতি ক্ষুদ্র বা তুচ্ছ কোনো বস্তুর মধ্যেও লুকিয়ে থাকতে পারে এমন কিছু শক্তি বা সম্ভাবনা, যা মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে উন্নতির চরম শিখরে।
মানুষ সাধারণত বড় বা মূল্যবান জিনিসের প্রতি মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে এবং ছোট ও নগণ্য জিনিসকে তুচ্ছ জ্ঞান করে অবহেলা করে। আসলে তা উচিত নয়, কারণ অনেক ক্ষুদ্র বা তুচ্ছ বস্তুর মধ্যেও অনেক মূল্যবান জিনিস লুকিয়ে থাকতে পারে। “উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, স্বর্ণকার যে ছাই ফেলে দেয়, তা ধুয়েও স্বর্ণকণা পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে ছাই বলতে বোঝানো হয়েছে পৃথিবীর তাবৎ তুচ্ছ অথচ মূল্যবান বস্তুকে। ক্ষুদ্র বলে কোনো বস্তুকে তুচ্ছজ্ঞান করা উচিত নয়। প্রয়োজনে ক্ষুদ্র বস্তুকে যাচাই-বাছাই, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা উচিত। জগতের কোনাে বস্তুকেই তুচ্ছজ্ঞান করা উচিত নয়।

অতি তুচ্ছ বস্তুর মধ্যেও হয়তাে লুকিয়ে থাকতে পারে বিশাল কোনাে সম্ভাবনা।মানুষ সাধারণত বড় বা মূল্যবান জিনিসের প্রতি মােহাবিষ্ট হয় এবং ছােট বা নগণ্য জিনিসকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, অবহেলা করে। আসলে তা উচিত নয়। কারণ মূল্যহীন ছাইয়ের নিচে অমূল্য রতন পাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। কোনাে কিছুর উপরিভাগের দীনতা কিংবা সৌন্দর্যহীনতা দেখে সম্পূর্ণ জিনিসটাকে তুচ্ছ ভাবা ঠিক নয়।
কারণ অনেক সময় অতি সাধারণ জিনিসের ভেতরেই অসাধারণ বস্তু লুকানাে থাকে। আমাদের জগৎ-সংসারে মানুষ সাধারণত সােনার হরিণ ধরার মতাে মহামূল্যবান জিনিসের পেছনে প্রতিনিয়ত ধাবমান। তারা হাতের কাছের সাধারণ জিনিসকে তুচ্ছজ্ঞান করে। বহিরাবয়বের এ সাধারণ জিনিসগুলাের ভেতরেই অসাধারণ মহামূল্যবান জিনিসের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। যেমন, ঝিনুকের ভেতরে মুক্তা পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। কখনাে কখনাে বাহ্যিক অবয়ব, পােশাক-পরিচ্ছদ অতি সাধারণ হলেও অনেক সময় তাদের ভেতরে বসবাস করে অসাধারণ মানুষ।এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, ক্ষুদ্র বলে কোনাে জিনিসকে তুচ্ছ করা উচিত নয়। প্রয়ােজনে তার সত্যিকারের রূপ উদঘাটনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা যাচাই-বাছাই করা উচিত।
আরও দেখুন: