যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি ও যুগ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি ভাষা ও শিক্ষা সিরিজের “ধ্বনিতত্ত্ব” বিভাগ এর “ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব” পরিচ্ছেদের একটি পাঠ।
যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি ও যুগ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি
যুক্তব্যঞ্জন, যুক্তাক্ষর ইত্যাদি মূলত লিখিত ভাষার রূপ থেকে গৃহীত হয়েছে। মুখের ভাষায় যুক্তব্যঞ্জনের পৃথক ধারণা নেই। মুখের ভাষায় ব্যঞ্জন হোক-আর স্বর হোক ধ্বনিগুলো পাশাপাশি আসে এবং সীমাবদ্ধভাবে একে অন্যের উচ্চারণ প্রভাবিত করে। সেগুলো কখনও অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে ধ্বনিপরিবর্তনের সূচনা করে। যুক্তব্যঞ্জন হল প্রধানত শব্দের মধ্যে সৃষ্ট ব্যঞ্জন-পরম্পরা। তবে সব ব্যঞ্জন-পরম্পরাই যুক্ত ব্যঞ্জন হিসেবে বিবেচিত হয় না।
ফলে উচ্চারণের ধারাবাহিকতায় শব্দমধ্যবর্তী লেখার যুক্তব্যঞ্জনগুলোকে প্রথমত দু ভাগে ভাগ করা যায় : (ক) যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি ও (খ) যুগ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি।
(ক) যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি:
দু’টি বা তার চেয়ে বেশি ব্যঞ্জনধ্বনির ভেতরে যদি কোনো স্বরধ্বনি না থাকে, তখন সেই ব্যঞ্জনধ্বনি দুটি একত্রে লেখা হয় এবং তখন তাকে যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন- ব + অ + ক + ত + আ = বক্তা।
এখানে দ্বিতীয় বৰ্ণ ক + ত-এর মূল রূপ পরিবর্তিত হয়ে ক্ত হয়েছে। যুক্ত বর্ণের স্বচ্ছ ও অসচ্ছ রূপ রয়েছে।
যেমন : স্বচ্ছ রূপ : ঙ্ক (ঙ+ক), ঙ্খ (ঙ+খ), স্ত (স+ত), শ্চ (শ+চ), ব্দ (ব+দ), ষ্ট (ষ+ট), স্ট (স+ট) ইত্যাদি। অস্বচ্ছ রূপ : ক্ষ (ক+ষ), হ্ম (হ+ম), ত্র (ত+র), থ (ত+থ), হ্ন (হ+ন), ষ্ণ (ষ+ণ), ঞ্জ (ঞ+জ), জ্ঞ (জ+ঞ), ঞ্চ (ঞ+চ)।
(খ) যুগ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি
যুক্তব্যঞ্জন হল দুটি পৃথক বা ভিন্নবর্গীয় ব্যঞ্জনের যোগ, ‘ক্ল’, ‘ব্রু’ ইত্যাদি; আর যুগ্ম ব্যঞ্জন হল নয়, সেই বর্গের অল্পপ্রাণ মহাপ্রাণের যোগ, যেখানে দুটিই হয় অঘোষ, না হয় ঘোষ, যেমন— ক্ক, ল্ল, থ।

আরও দেখুন: