যতি চিহ্ন বা বিরাম চিহ্ন কী – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিভাগের “বাক্যতত্ত্ব” বিষয়ের একটি পাঠ। যে-কোনো ভাষায় লেখ্য রূপে যতিচিহ্ন অপরিহার্য। মুখে কথা বলার সময় কখনোই কেউ তাড়াতাড়ি হুড়মুড় করে সব বলে ফেলে না। দম নেয়ার জন্যে তাকে মাঝে মধ্যে থামতে হয়; সেই থামায় আবার রকমফের আছে কখনো বেশিক্ষণ থামতে হয়, কখনো-বা অল্পক্ষণ। গলার স্বরের ওঠানামায় বা বলার ঢঙে বক্তার মেজাজ ধরা পড়ে।
যতি চিহ্ন বা বিরাম চিহ্ন কী | বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা
অবাক হওয়া বা প্রশ্ন করা, অনুরোধ করা বা ধমক দেওয়া—ইত্যাদি সবই ফুটে ওঠে কথা বলার ভঙ্গিমার ভেতর দিয়ে। কিন্তু কথা না বলে, যদি লিখেই কাউকে তার বক্তব্য, মনোভঙ্গি ইত্যাদি জানাতে হয়, তখন কথা বলার সময় যে-যে ভাব ও ভঙ্গি দেখিয়েছে, লেখার ভেতরেও সেই ভাব ও ভঙ্গিটাকেই ফুটিয়ে তুলতে হবে।
আর তখনই দরকার পড়বে যতি-চিহ্নের। অর্থাৎ বাক্যের বিভিন্ন ভাব সার্থকভাবে প্রকাশের জন্যে কণ্ঠস্বরের ভঙ্গির তারতম্য বোঝাতে বর্ণের অতিরিক্ত যে-সব চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে বলে বিরাম চিহ্ন। এগুলোকে ভাষা-চিহ্নও বলা হয়। বিরাম-চিহ্ন কথার অর্থ— যে চিহ্নের সাহায্যে কথা বলার সময় জিভের কাজের বিরাম ঘটে বা বিরাম নির্দেশিত হয়।
মনোভাব প্রকাশের সময় অর্থ ভালভাবে বোঝানোর জন্যে উচ্চারিত বাক্যের বিভিন্নস্থানে বিরাম দিতে হয়। লেখার সময়ও বাক্যের মধ্যে বিরাম বুঝিয়ে তা দেখানোর জন্যে কিছু সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এগুলোই বিরাম চিহ্ন বা যতিচিহ্ন বা ছেদচিহ্ন বা ভাষা-চিহ্ন নামে পরিচিত এবং একই অর্থে ব্যবহৃত।

অবশ্য কবিতার ছন্দের ক্ষেত্রে ‘ছেদ’ ও ‘যতি’র মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সংজ্ঞার্থ : বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে বোঝাবার জন্য বাক্যের মধ্যে বা বাক্যের সমাপ্তিতে কিংবা বা বাক্যে আবেগ (হর্ষ, বিষাদ), জিজ্ঞাসা ইত্যাদি প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে বাক্য-গঠনে যেভাবে বিরতি দিতে হয় এবং লেখার সময় বাক্যের মধ্যে তা দেখাবার জন্য যে-সব সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তা-ই যতি বা ছেদ-চিহ্ন বা বিরাম- চিহ্ন
আরও দেখুন: