মুকুট পরা শক্ত | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা

মুকুট পরা শক্ত | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাববীজটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি, এ ধরনের কবিতার চরণে বা গদ্যাংশে সাধারণত মানবজীবনের কোনাে মহৎ আদর্শ, মানবচরিত্রের কোনাে বিশেষ বৈশিষ্ট্য, নৈতিকতা, প্রণােদনমূলক কোনাে শক্তি, কল্যাণকর কোনাে উক্তির তাৎপর্যময় ব্যঞ্জনাকে ধারণ করে আছে।

মুকুট পরা শক্ত; কিন্তু মুকুট ত্যাগ আরও কঠিন

ক্ষমতা অর্জন করা কঠিন। কিন্তু ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো আরও কঠিন। রাজমুকুট ক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতীক। কিন্তু লোভী, ক্ষমতালিপ্সু, উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষ রাজকীয় ক্ষমতা দখলের জন্যে উন্মাদ হয়ে ওঠে। ফলে তার পক্ষে রাজমুকুট ত্যাগ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

 

মুকুট পরা শক্ত; কিন্তু মুকুট ত্যাগ আরও কঠিন

 

মুকুট পরা অর্থাৎ কোনো জাতি বা সমাজের কর্ণধার হওয়া সহজ ব্যাপার নয়। বিশেষ গুণের অধিকারী না হলে সে দায়িত্ব কেউ পালন করতে পারে না। কঠোর সাধনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সর্বসাধারণের আস্থাভাজন হতে পারলেই জাতি ও সমাজের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব হতে পারে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায় যাঁরা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাদের বহু সাধনা, শক্তি ও সামর্থ্যের প্রয়োজন হয়েছে। আর ক্ষমতায় আসার পর তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সে সব কর্তব্য শেষ না করা পর্যন্ত ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। প্রকৃত রাজার কাছে রাজমুকুট এক বিশাল দায়িত্ব।

 

মুকুট পরা শক্ত; কিন্তু মুকুট ত্যাগ আরও কঠিন

 

কেননা অজস্র ঐশ্বর্যের মধ্যেও তাঁকে বিলাসবিমুখ জীবনযাপন করতে হয়। প্রজাদের সুখ-দুঃখ নিয়েই তাঁর সার্বক্ষণিক চিন্তা। এই দৃষ্টিকোণ থেকে রাজমুকুট পরা এক কঠিন দায়িত্ব। অপরপক্ষে লোভী মানুষ একবার ক্ষমতায় আসতে পারলে তার নেশায় সে মত্ত হয়ে ওঠে। এ ক্ষমতার গৌরব থেকে সে কিছুতেই সরে যেতে চায় না। তখন সে অন্যায়ভাবেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেষ্টা করে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ক্ষমতা ও ভোগের মায়া সে ত্যাগ করতে পারে না। কাজেই মুকুট পরা যেমন শক্ত তেমনি মুকুট পরিত্যাগ আরও কঠিন। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন ব্যাপার, কিন্তু তার চেয়েও কঠিন ক্ষমতা ত্যাগ করা। কারণ ক্ষমতায় গেলে মানুষের দায়িত্ব-কর্তব্য বেড়ে যায়, তা ছাড়া ক্ষমতার মোহও ক্ষমতা ছাড়তে বাধা দেয় ।

আরও দেখুন:

Leave a Comment