কাজী নজরুল ইসলাম-এর প্রভাতী কবিতা “ভোর হলো, দোর খোলো” বাংলার সাহিত্যে আলোর প্রতীক হিসেবে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এই কবিতায় তিনি নবজীবনের উদয়, আশা ও উজ্জীবিত সকালকে বর্ণনা করেছেন গভীর আবেগ ও প্রাণবন্ত ছন্দে। কবির স্বাধীনতা ও পরিবর্তনের চেতনার সাথে প্রভাতীর উত্থানকে মিলিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনা ও উদ্যমকে তুলে ধরেছেন। তাই “ভোর হলো, দোর খোলো” কেবল একটি প্রভাতী কবিতা নয়, এটি মানসিক পুনর্জীবনের এক উৎসব, যা পাঠক হৃদয়ে উৎসাহ ও সজাগতার বার্তা বয়ে আনে।
প্রভাতী – কাজী নজরুল ইসলাম
ভোর হলো দোর খোলো
খুকুমণি ওঠো রে!
ঐ ডাকে যুঁইশাখে
ফুল-খুকি ছোট রে!
খুকুমণি ওঠো রে!
রবি মামা দেয় হামা
গায়ে রাঙা জামা ঐ,
দারোয়ান গায় গান
শোনো ঐ, ‘রামা হৈ!’
ত্যজি নীড় করে ভিড়
ওড়ে পাখি আকাশে,
এন্তার গান তারা
ভাসে ভোর বাতাসে।
চুলবুল বুলবুল
শিস দেয় পুষ্পে,
এইবার এইবার
খুকুমণি উঠবে!
খুলি হাল তুলি পাল
ঐ তরী চললো,
এইবার এইবার
খুকু চোখ খুললো।
আলসে নয় সে
ওঠে রোজ সকালে,
রোজ তাই চাঁদা ভাই
টিপ দেয় কপালে।
উঠলো ছুটলো
ওই খোকা খুকি সব,
‘উঠেছে আগে কে’
ঐ শোনো কলরব।
নাই রাত, মুখ হাত ধোও,
খুকু জাগো রে!
জয় গানে ভগবানে
তুষি’ বর মাগো রে!
প্রভাতী কবিতা বিস্তারিতঃ
কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় যেমন অনন্য সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন, শিশুসাহিত্য রচনায়ও তিনি অসাধারণ সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। শিশুশিক্ষামূলক কবিতায় নজরুল কখনো শিশুকে তার কর্তব্যকর্ম সম্পর্কে স্মরণ করে দিয়েছেন, আবার কখনো তাকে আত্মচেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে বলেছেন। কখনো বা মহৎ কর্ম ও জ্ঞানের পথে আহ্বান জানিয়েছেন। নজরুল রচিত জনপ্রিয় শিশুতোষ কবিতা ‘প্রভাতী’ (ভোর হলো)।
প্রভাতী আবৃত্তিঃ