Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ৩ | ভাষাকোষ | শানজিদ অর্ণব

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ৩ – ক্লিন (Blin): এটি একটি কুশীয় ভাষা। ইরিত্রিয়ার কেরেন শহরে এবং এর আশপাশে এ ভাষার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ বাস করে। ভাষাটি বিলিন, বিলেন, বোগো, বোগোস, বেলেন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। গিজ বর্ণমালার একটি ভার্সন দিয়ে এ ভাষা লেখা হয়।

উনিশ শতকের শেষ দিকে মিশনারিরা এটি উদ্ভাবন করেন। ১৮৮২ সালে ক্লিন ভাষার প্রথম লিখিত রূপ ছাপা হয়। ক্লিন এবং ইরিত্রিয়ার অন্য ছোট ভাষাগুলোর জন্য ১৯৮৫ সালে ল্যাটিন বর্ণমালা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় ইরিত্রিয়ান পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট। ১৯৯৩ সালে সরকার ক্লিন ভাষা এবং ল্যাটিনভিত্তিক উচ্চারণ পদ্ধতির আদর্শ রূপ ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করে।

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ৩

ব্লাকফুট (Blackfoot)

ব্লাকফুট বা সিকিসিকা একটি অ্যালগনকুইয়ান ভাষা। এটি ব্লাকফুট নামের আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান গোষ্ঠীর ভাষা। যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা এবং অ্যালবার্টার কানাডীয় রাজ্যে এ ভাষার প্রায় ৮ হাজার মানুষ বাস করেন। ব্লাকফুট বর্ণমালা তৈরি করেন জন উইলিয়াম টাইমস (১৮৫৭-১৯৪৫)। তিনি ছিলেন ইংল্যান্ড থেকে আসা একজন অ্যাংলিকান মিশনারি।

কানাডার (বর্তমান আলবার্টা) উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ব্লাকফুট মানুষের মধ্যে তিনি ১২ বছর (১৮৮৩-১৮৯৫) বাস করেন। জেমস ইভানসের ওজিবাওয়া বর্ণমালার ওপর ভিত্তি করে টাইমস ব্লাকফুট বর্ণমালা তৈরি করেন। তিনি ব্লাকফুট ভাষার একটি ডিকশনারিও তৈরি করেন এবং বাইবেলের বিভিন্ন অংশের অনুবাদ করেন এ ভাষায়। বর্তমানে ল্যাটিন বর্ণমালা প্রধানভাবে ব্যবহৃত হয়।

বুহিদ (Buhid)

এটি একটি অস্ট্রোনেশীয় ভাষা। ফিলিপাইনের মিনদোরো প্রদেশের প্রায় আট হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। বুহিদ বা ম্যাংগায়ান বর্ণমালার উৎপত্তি হয়েছে জাভা, বালি ও সুমাত্রার কাবি লিপি থেকে। কাবি লিপির উৎপত্তি হয়েছে পল্লব লিপি থেকে। পল্লব একটি দক্ষিণ ভারতীয় লিপি, যার উদ্ভব হয়েছে ব্রাহ্মী থেকে। ফিলিপাইনের মিনদোরোতে এখনও বুহিদ বর্ণমালা ব্যবহৃত হয়।

 

 

বারইয়াত (Buryat)

এটি একটি মঙ্গোলীয় ভাষা। রাশিয়ার রিপাবলিক অব বারইয়াত, উসত-ওরাডিন এবং আজিনসক জেলায় প্রধানত এ ভাষা ব্যবহৃত হয়। এর বাইরে উত্তর মঙ্গোলিয়া এবং উত্তর-পশ্চিম চীনেও এ ভাষা ব্যবহৃত হয়। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর সিরিলিক বর্ণমালা ব্যবহারের মাধ্যমে এ ভাষার একটি লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়। এর আগে এ ভাষা লেখা হতো ঐতিহ্যবাহী মঙ্গোলীয় লিপি ব্যবহার করে। ১৯৩১ সালে গ্রহণ করা হয় ল্যাটিন বর্ণমালা। ১৯৩৯ সালে পুনরায় সিরিলিক বর্ণমালা গৃহীত হয়।

বাংলা (Bengali)

বাংলা ভাষায় কথা বলেন প্রায় ২৩ কোটি মানুষ। বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবাংলা, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে প্রধানত ব্যবহৃত হয় এ ভাষা। খৃষ্টপূর্ব সময়কালে ভারতবর্ষে প্রচলিত প্রাকৃত ভাষা অঞ্চলভেদে তিনটি রূপ ধারণ করে।
এগুলো হল: উদীচ্য প্রাকৃত, মধ্যদেশীয় প্রাকৃত এবং প্রাচ্য প্রাকৃত। প্রাচ্য প্রাকৃত থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে উদ্ভব লাভ করে বাংলা ভাষা।

বৈদিক কথ্য ভাষা থেকে জন্ম হয়েছিল প্রাকৃত ভাষার। প্রাকৃত ভাষা থেকে জন্ম হয় মাগধি প্রাকৃতের আর এই মাগধি প্রাকৃত থেকে জন্ম হয় মাগধি অপভ্রংশের। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং জর্জ গ্রিয়ারসন এর মতে, মাগধি অপভ্রংশ থেকে জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে, প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে উদ্ভব হয় মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার। তাঁর মতে, মধ্য ভারতীয় আর্য হলো আদিম প্রাকৃত যার থেকে এসেছে প্রাচ্য প্রাকৃত।

প্রাচ্য প্রাকৃতের পরবর্তী রূপ গৌড়ি প্রাকৃত। গৌড়ি প্রাকৃত থেকে এসেছে গৌড়ি অপভ্রংশ। তার গৌড়িয় অপভ্রংশ থেকে উদ্ভব হয়েছে বাংলা ভাষার। বাংলা ভাষা বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা। এটি দেশের দাপ্তরিক ভাষা।

ভারতের ২৩টি স্বীকৃত অফিসিয়াল ভাষার একটি বাংলা ভাষা। এ ভাষা ভারতের পশ্চিমবাংলা এ ত্রিপুরা রাজ্যের দাপ্তরিক ভাষা। বাংলা ভাষা লেখা হয় বাংলা বর্ণমালা দিয়ে। ধারণা করা হয়, বাংলা বর্ণমালার উদ্ভব হয়েছে ব্রাহ্মী লিপি থেকে। দেবনাগরি লিপির সাথেও সাদৃশ্য আছে বাংলা বর্ণমালার।

বসনিয়ান (Bosnian)

এটি দক্ষিণ স্লাভিক ভাষা। প্রধানত বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনার ২২ লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। ১৯৯০ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে যাওয়ার পর বসনিয়ান একটি স্বতন্ত্র পৃথক ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়। ১৯৯৪ সালে ক্রোয়েশিয়ান ও সার্বিয়ান ভাষার মতো এটিও বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার একটি আনুষ্ঠানিক ভাষায় পরিণত হয়।

সিরিলিক এবং ল্যাটিন উভয় বর্ণমালা দিয়েই এ ভাষা লেখা হয়। ঐতিহাসিকভাবে ১০ম শতাব্দী থেকে বসনীয় সিরিলিক নামে পরিচিত সিরিলিক বর্ণমালা। একটি ভার্সন দিয়ে লেখা হতো এ ভাষা। এ বর্ণমালা একমাত্র বসনিয়াতে ব্যবহৃত হতো।

অটোম্যান যুগে এ ভাষা লেখা হতো পনেরোটি বর্ণমালার একটি ভার্সনের সাহায্যে। প্রথম বসনিয়ান ডিকশনারি তৈরি করেন মুহাম্মদ হেভাজি উসকুফি ১৬৩১ সালে। এ ভাষা ক্রোয়েশিয়ান, সার্বিয়ান ও মন্টোনেগ্রিন ভাষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ
সম্পর্কযুক্ত এবং এ ভাষাগুলোর রয়েছে পারস্পরিক বোধগম্যতা।

১০ শতক পর্যন্ত ব্যবহৃত সিরিলিক বর্ণমালাকে কোন পরিশীলিত নির্দিষ্ট রূপ দেয়া হয়নি, ফলে বেশিরভাগ অক্ষরেরই বিভিন্ন আকার তৈরি হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত আধুনিক বসনিয়ান সিরিলিক বর্ণমালায় অনেক বর্ণই আর ব্যবহৃত হয় না। সঙ্গে বাদ পড়েছে অতিরিক্ত কিছু বর্ণ।

ব্রিটন (Breton)

ব্রিটন একটি সেলটিক ভাষা। ব্রিটানির (Brittany) প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ প্রধানত এ ভাষা ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে অনর্গলভাবে কথা বলতে পারেন ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।

ব্রিটনিকে রোমান আমলে ডাকা হতো আরমোরিকা (Armorica) নামে। এরপর ৬ষ্ঠ শতকে ব্রিটেন বিশেষত কর্নওয়াল থেকে জনগণ সেখানে বসতি করলে এর নতুন নাম হয় ব্রিটনি (এক চিলতে ব্রিটেন)। ১৮৮০ থেকে ২০ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত স্কুলগুলোতে ব্রিটন ভাষা নিষিদ্ধ ছিল, এমনকি এ ভাষায় কথা বললে শিশুদের শাস্তি দেয়া হতো। ১৯৫১ সালে ডেইজোন (Deixonne law) আইন জারি হওয়ার মাধ্যমে অবস্থার পরিবর্তন হয়। এ আইনের মাধ্যমে ব্রিটন ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।

শিক্ষক চাইলে সপ্তাহে ১ থেকে ৩ ঘণ্টা এ ভাষা শিক্ষা দিতে পারেন। এরপর অনেক স্কুল-কলেজ গড়ে উঠেছে এখানে শুধু ব্রিটন ভাষা বা ব্রিটন/ফরাসি ভাষাকে শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসেবে। ৭৯০ খ্রিস্টাব্দে এ ভাষা প্রথম লিখিত হয়। প্রথম লেখা পাণ্ডুলিপিটি ছিল উদ্ভিদবিজ্ঞান সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র ‘Le manuscrit de leyde’।

ব্রিটন ভাষায় প্রথম ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত লেখাটি ছিল একটি নাটক। ১৫৩০ সালে এটি প্রদর্শিত হয়। ১৯ শতকে ব্রিটন সাহিত্যের পুনঃজাগরণ ঘটে এবং বর্তমান সময়েও এর সমৃদ্ধ অবস্থা বজায় আছে। ইতিহাসে ব্রিটনের বিভিন্ন উচ্চারণ পদ্ধতি দেখা যায়। ১৯০৮ সালে এ ভাষার তিনটি উপভাষার kerneveg, leoneg এবং tregerieg উচ্চারণ পদ্ধতি একীভূত হয়। Gwenedeg উপভাষাটি এ যাত্রায় বাদ থাকলেও ১৯৪১ সালে পুনরায় উচ্চারণ পদ্ধতি সংস্কারের সময় এটিকে যুক্ত করা হয়।

বর্তমানে সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টা বেশ কিছু রেডিও স্টেশনে এ ভাষায় অনুষ্ঠান শোনা যায় এবং এক ঘণ্টার সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান হয় টেলিভিশনে। এ ভাষায় বেশ কিছু সাপ্তাহিক এবং মাসিক পত্রিকা রয়েছে। ব্রিটন ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে কর্নিশ ভাষার সঙ্গে। একটু দূরের সম্পর্ক রয়েছে ওয়েলশের সঙ্গে। যদিও এ ভাষাগুলোর মধ্যে কোনো পারস্পরিক বোধগম্যতা নেই। ব্রিটনে অনেক শব্দ এসেছে ফরাসি, ল্যাটিন এবং খুব সম্ভবত গলিশ ভাষাগুলো থেকে, যেগুলো আজ বিলুপ্ত।

ক্যানটোনিজ (Cantonese)

চীনের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চল বিশেষত হংকং, ম্যাকাও, গুয়াংডং, গুনাংজি এবং হাইনানের প্রায় ৭ কোটি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। এছাড়া ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইনেও ব্যবহৃত হয় এ ভাষা। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত চীনাদের অনেকেও কথা বলেন এ ভাষায়। হংকং, ম্যাকাও এবং গুয়াংডয়ের অনেক স্কুলে শিক্ষার মাধ্যম ক্যানটোনিজ। অবশ্য একই সঙ্গে এরা আদর্শ চীনা ভাষা বা চায়নিজ ভাষাও শেখে।

হংকং এবং ম্যাকাও এ ব্যবসা বাণিজ্য, গণমাধ্যম এবং সরকারি কাজের প্রধান ভাষা হলো ক্যানটোনিজ। ১৭ শতক থেকে ক্যানটোনিজ লিপিও রূপ পায়। ক্যানটোনিজ লেখার দুটি আদর্শ পদ্ধতি রয়েছে। একটি আনুষ্ঠানিক ভার্সন এবং অন্যটি চলিত লেখার আনুষ্ঠানিক ভার্সন কথ্য ক্যানটোনিজ থেকে বেশ ভিন্ন কিন্তু তা চায়নিজ ভাষার সাথে বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ। এবং মান্দারিন ভাষীরা তা সহজেই বুঝতে পারে।

অন্যদিকে চলতি রূপটি কথ্য ক্যানটোনিজের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং মান্দারিন ভাষীদের জন্য বোঝা বেশ কঠিন। হংকংয়ে ক্যানটোনিজ লেখা হয় চায়নিজ ভাষা এবং আরও বেশ কিছু উৎস থেকে গৃহীত বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যসহকারে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

কারিয়ান (Carian)

এটি একটি আনাতোলিয়ান ভাষা। খ্রিস্টীয় প্রথম শতক পর্যন্ত আনাতোলিয়ায় (বর্তমান তুরস্ক) এ ভাষা ব্যবহৃত হতো। এ ভাষাটি সম্ভবত লুবিয়ান (Luwian) ভাষার একটি সন্তান এবং লাইডিয়ান (Lydian) ভাষার সঙ্গে এটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত।

চায়নিজ (Chinese)

এ ভাষা সিনো-তিবেতান (Sino-Tibetan) ভাষা পরিবারের চায়নিজ বা সিনিটিক শাখার সদস্য। আধুনিক চায়নিজ ভাষা মধ্যকালীন চায়নিজের বংশধর। মধ্যকালীন চায়নিজ ভাষা প্রচলিত ছিল ৫ম থেকে ১২ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে। মধ্যকালীন চায়নিজের উৎপত্তি হয়েছে ওন্ড চায়নিজ থেকে। খৃস্টপূর্ব ২৫৬ সাল থেকে ওন্ড চায়নিজের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।

বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এ ভাষা ব্যবহৃত হয় প্রধানত চীন, তাইওয়ান এবং সিংগাপুরে। কথ্য চায়নিজ ভাষার রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকার। চায়নিজ ভাষীরা এগুলোকে বলেন ফানগায়ান (Fangyan) বা আঞ্চলিক ভাষা, উপভাষা। চায়নিজ ভাষীরা ভাষাটিকে একটি ভাষা হিসেবে মনে করেন যার অনেকগুলো উপভাষা আছে। এ উপভাষাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোধগম্যতা খুবই কম।

এ কারণে বিভিন্ন দেশের ভাষাবিদগণ চায়নিজ ভাষার উপভাষা হিসেবে চিহ্নিত ভাষাগুলোকে পৃথক ভাষা হিসেবে বিবেচনা করেন। চায়নিজ ভাষার কয়েকটি প্রধান প্রকার বা উপভাষা হলো: মান্দারিন (Mandarin), উ (Wu), মিন (Min), হাক্কা (Hakka), জিয়াং (Xiang), গান (Gan) প্রভৃতি। চীনে সবথেকে বেশি ব্যবহার হয় মান্দারিন।

ক্যায়ুগা (Cayuga)

এটি একটি ইরোকুয়োয়িয়ান ভাষা। কানাডার দক্ষিণ অন্টারিওর গ্র্যান্ড রিভারের তীরবর্তী শখানেক রেড ইন্ডিয়ান এ ভাষায় কথা বলে। নিউইয়র্কে বসবাসরত অল্প কয়েকজন প্রবীণ ইন্ডিয়ানও এ ভাষায় কথা বলেন। এ ভাষার বিভিন্ন রকম উচ্চারণ পদ্ধতি রয়েছে।

সেবুয়ানো (Cebuano)

এটি একটি অস্ট্রোনেশীয় ভাষা। ফিলিপাইনের সেবু, নেগরোস, বোহোল ভিসায়াস এবং মিন্দানায়ের কিছু অংশের প্রায় এক কোটি আশি লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ব্যবহৃত হয় এ ভাষা। এ ভাষা সুগবুহানো (Sugbuhanon) নামেও পরিচিত। স্প্যানিশ মিশনারিদের উদ্যোগে ১৮ শতকে এ ভাষা লিখিত রূপ পায়। এই স্প্যানিশ প্রভাবের কারণে ভাষাটিতে অনেক স্প্যানিশ শব্দের আগমন ঘটে।

সেলটিবেরিয়ান (Celtiberian)

এটি একটি বিলুপ্ত সেলটিক (Celtic) ভাষা। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক পর্যন্ত ইবেরিয়ান (Iberian) উপসাগরীয় এলাকায় ব্যবহৃত হতো এ ভাষা। বর্তমান স্পেনের উত্তরে দুয়েরো, তাজো, জুকার, তুরিয়া এবং এবরো নদীর মধ্যবর্তী এলাকায় ব্যবহৃত হতো এ ভাষা।

চাহা (Chaha)

সেমেটিক এ ভাষা ব্যবহৃত হয় মধ্য ইথিওপিয়ায়। প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন।

চামোরো (Chamorro)

এটি একটি অস্ট্রোনেশিয়ান ভাষা। গুয়াম, উত্তর মেরিয়ানা আইল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। স্প্যানিশ ভাষা থেকে বহু শব্দ চামোরোতে ব্যবহৃত হওয়ায় অনেকেরই একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে এটি বোধহয় একটি স্প্যানিশ ভাষাভিত্তিক ক্রেয়ল (Creole)।

১৬৬৮ সালে এ ভাষা প্রথম লিখিত রূপ পায়। একজন মিশনারি, ফাদার স্যান ভিটোরেজ ল্যাটিন বর্ণমালা ব্যবহার করে চামোরোর একটি উচ্চারণ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। সে সময় থেকে এ ভাষার বিভিন্ন উচ্চারণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।

চাপালাচি (Chapalaachi)

এটি একটি বারবাকোয়ান (Barbacoan) ভাষা। উত্তর ইকুয়েডরের তিন থেকে নয় হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। এ ভাষা চাচি (Chachi) বা কায়াপা (Cayapa) নামেও পরিচিত।

 

 

চেইনি (Cheyenne)

প্রায় ১১ হাজার চেইনি রেড ইন্ডিয়ানের ৩ হাজার চেইনি ভাষায় কথা বলেন। বর্তমানে চেইনি গোষ্ঠীর সদস্যরা দুভাগে বিভক্ত। উত্তর চেইনি, যাদের বসবাস দক্ষিণ-পূর্ব মন্টানার উত্তর চেইনি রিজার্ভেশনে। এদের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। পশ্চিম ওকলাহোমায় বাস করেন বাকি ৩ হাজার দক্ষিণ চেইনি। চেইনি ভাষায় তাদের ভাষাটির নাম Tsehesenestsestotse বা tsisinstsistots। চেইনিরা ডাকে tsitsistas নামে। চেইনি বর্ণমালায় অক্ষর আছে মাত্র ১৪টি। এদের শব্দগুলো বেশ বড় হয়।

চিচেবা (Chichewa)

এটি একটি বান্টু ভাষা। ইংরেজির পাশাপাশি এ ভাষা মালাবির (Malawi) জাতীয় ভাষা। এছাড়া জাম্বিয়া, মোজাম্বিক (এদেশে ভাষাটি চিনানজা নামে পরিচিত) এবং জিম্বাবুয়েতেও এ ভাষা ব্যবহৃত হয়। ৭০ থেকে ৮০ লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। ১৯৭৩ সালে নিউচিচেবা অর্থোগ্রাফি রুলস প্রকাশের মাধ্যমে এ ভাষার বানান পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা হয়।

আরও পড়ুনঃ

Exit mobile version