বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ১১ | ভাষাকোষ | শানজিদ অর্ণব

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ১১ – পাঞ্জাবি (Punjabi): ইন্দো-আর্য এ ভাষায় কথা বলেন ভারত এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের প্রায় সাড়ে ১০ কোটি মানুষ। মধ্যযুগের উত্তর ভারতে প্রচলিত Shauraseni ভাষার বংশধর। ১১ শতকে পাঞ্জাবি পৃথক ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ভারতে এ ভাষা লেখা হয় গুরুমুখী বর্ণমালা দিয়ে এবং পাকিস্তানে শাহমুখী নামক উর্দু বর্ণমালার একটি ভার্সন দিয়ে। ভারতে এটি অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে স্বীকৃত কিন্তু পাকিস্তানে এ ভাষা দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা হলেও সেখানে এ ভাষার কোনো অফিসিয়াল মর্যাদা নেই।

 

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ১১ | ভাষাকোষ | শানজিদ অর্ণব

 

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ১১

পিউরেপচা (Purepecha)

এটি একটি Isolate বা বিচ্ছিন্ন ভাষা। মেক্সিকোর Michoacan রাজ্যের প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। ভাষাটি tarascan নামেও পরিচিত। ১৮ শতকের শুরু থেকে পিউরেপচাসহ অন্যান্য আদিবাসীর স্প্যানিশ ভাষা গ্রহণ এবং নিজস্ব ভাষা ত্যাগে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। এ ধারার পরিবর্তন ঘটে ২০০৩ সালে। ২০০৩ সালে ‘জেনারেল ল অব লিঙ্গুয়িস্টিক রাইটস অব ইনডিজেনাস পিপল’ গ্রহণের মাধ্যমে এ ভাষাসহ মেক্সিকোর অন্যান্য আদিবাসী ভাষা অফিসিয়াল মর্যাদা লাভ করে।

ফ্রাইজিয়ান (phrygian)

ফ্রাইজিয়ান ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের প্রাচীনতম একটি নিদর্শন। এ ভাষার অর্থ এখনও পুরোপুরি উদ্ধার করা যায়নি। এ ভাষার প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতকে। এই নিদর্শনের ফ্রাইজিয়ানকে বলা হয় প্যলিও ফ্রাইজিয়ান। এ রূপটি লেখা হয়েছিল ফোনিশিয় বর্ণমালা থেকে উদ্ভুত এক ধরনের অক্ষর দিয়ে।

পরবর্তীকালের লিখন পরিচিত নিও-ফ্রাইজিয়ান নামে, যা গ্রীক বর্ণমালার একটি ভার্সনে লেখা। এ ভাষা এশিয়া মাইনর এলাকায় ৫ম খ্রিস্টীয় শতক পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা যায়। মিসরের ফারাও সামেটিকাস এ ভাষাকেই পৃথিবীর প্রথম ভাষা বলে চিহ্নিত করেছিলেন।

কোয়েচুয়া (Quechua)

Amerind এ ভাষায় কথা বলেন বলিভিয়া, পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনার প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। এটি ছিল ইনকা সাম্রাজ্যের ভাষা যা ১৬ শতকে স্প্যানিশ দখলদারিত্বের ফলে ধ্বংসের মুখে পড়ে। ইনকারা গিট দেয়া দড়ির (যা quipu নামে পরিচিত) মাধ্যমে তাদের সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বার্তা পাঠাত। দড়ির গিটের আকার, সংখ্যা এবং দড়ির রং বার্তাবাহককে মূল বার্তা স্মরণ রাখতে সহায়তা করত।

সাম্প্রতিক সময়ে গবেষকরা ধারণা করছেন Quipu শুধু স্মৃতিসহায়ক নকশা ছিল না বরং এগুলো ছিল কোয়েচুয়া ভাষায় পাঠানো বার্তার উচ্চারণ অনুযায়ী রেকর্ড বা স্মারক। এ ভাষার প্রথম ছাপা যন্ত্রে প্রকাশিত নিদর্শন হলো Domingo de santo Tomas প্রণীত এ ভাষার ডিকশনারি। এটি প্রকাশিত হয় ১৫৬০ সালে।

কে’কচি’ (Q’eqchi’)

এ মায়া ভাষায় কথা বলে গুয়েতেমালা এবং বেলিজের পাঁচ লাখ মানুষ। এ ভাষার বেশ কয়েকটি বানান পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে অধিক ব্যবহৃত দুটি রীতির একটি তৈরি হয় ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে। ১৯৯০ সালে নতুন রীতি চালু হওয়ার আগে এ পদ্ধতিটি অধিক জনপ্রিয় ছিল। ১৯৯০ সালের রীতিটি বর্তমানে গুয়েতেমালায় এ ভাষার আদর্শ লিখিত রূপ। সরকারি ডকুমেন্ট থেকে লোকসাহিত্য, ধর্মীয় বক্তব্য সবই লেখা হয় এ ভাষায়।

রাগা (Raga)

ভানুয়াতুর (Vanuatu) Pentecost Island-এর ৬ হাজার ৫০০ মানুষ কথা বলেন এ ভাষায়। এটি মালয়া-পলিনেশীয় ভাষা। ভানুয়াতুর জাতীয় ভাষা Bislama থেকে অনেক শব্দ এসেছে এ ভাষায়। অবশ্য Turaga indigenous movement চেষ্টা করছে Bislama ভাষা থেকে আসা শব্দগুলোকে রাগা ভাষায় নিজস্ব শব্দ দিয়ে পুনঃস্থাপিত করতে। ১৯ শতকের শেষভাগে বেশ কয়েকজন মিশনারি এ ভাষার ব্যাকরণগত বর্ণনা এবং শব্দগুলোকে লিপিবদ্ধ করেছেন।

রোমানিয়ান (Romanian)

রোমানস (Romance) এ ভাষায় কথা বলেন রোমানিয়া, মলডোভা এবং ইউক্রেইনের প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। ১৬ শতকে এ ভাষা প্রথম লিখিত রূপ পায়। এ ভাষার প্রাথমিক যুগের লিখিত নিদর্শনগুলোর একটি ১৫২১ সালে Neacsu of Campulung কর্তৃক Brasov-এর মেয়রের নিকট লেখা একটি চিঠি।

রোমানশ (Romansh)

রোমানস (Romance) এ ভাষায় কথা বলেন সুইজারল্যান্ডের সুইস ক্যান্টন অব গ্যারিসনের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এটি সুইজারল্যান্ডের চারটি জাতীয় ভাষার একটি। জুরিখের ভাষাবিদ Heinrich schmid ১৯৮২ সালে এ ভাষার আদর্শ লিখিত রূপ তৈরি করেন যা Rumantsch Grischun নামে পরিচিত। ১৫৫২ সালে এ ভাষায় প্রথম প্রকাশনা প্রকাশিত হয় ছাপার অক্ষরে। ১৫৬০ সালে এ ভাষায় ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’-এর অনুবাদ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে স্কুল এবং গণমাধ্যমে এ ভাষা কিছু মাত্রায় ব্যবহৃত হয়।

রোমানি (Romany)

ইউরোপ এবং যক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬০ লাখ রোমা জনগোষ্ঠী এ ইন্দো-আর্য ভাষায় কথা বলেন। রোমারা ইংরেজিতে জিপসি নামে পরিচিত। এ ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ভারতের পাঞ্জাবি ভাষার সঙ্গে। অনেক ঐতিহাসিকের ধারণা, জিপসিরা প্রথম ভারত থেকেই দুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ওয়ার্ল্ড রোমানি বংগ্রেসে ১৯৯০ সালে এ ভাষার বর্ণমালার আদর্শ রূপ গ্রহণ করা হয়।

রোটুমান (Rotuman)

এটি মালায়ো-পলিনেশীয় ভাষার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার সদস্য। রোটুমা দ্বীপে এ ভাষার ৯ হাজার লোক বাস করেন। ফরাসি এবং ইংরেজ মিশনারিরা সর্বপ্রথম এ ভাষাকে লিখিত রূপ দেন। মিশনারি রেভারেন্ড সি. এম. চার্চওয়ার্ড এ ভাষার ব্যাকরণ এবং ডিকশনারি তৈরি করেন।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

রাশিয়ান বা রুশ (Russian)

এটি একটি পূর্বাঞ্চলীয় স্লাভোনিক (Eastern Slavonic) ভাষা। রাশিয়া এবং সংলগ্ন কয়েকটি দেশের প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এ ভাষা লেখার প্রচলন হয় ১০ম শতকে। পিটার দ্য গ্রেটের (Peter I) আমলে (১৬৭২-১৭২৫) রুশ ভাষা নিয়মিতভাবে লিখিত হতে শুরু করে। মস্কো ডায়ালেক্টকে ভিত্তি করে এ ভাষার লিখিত রূপ তৈরি হয়েছে। ১৯ শতকে তলস্তয়, দস্তয়ভস্কি, গোগল, পুশকিনের মতো লেখকের হাত ধরে রুশ সাহিত্যের বিকাশ শুরু হয়।

সাকাও (Sakao)

ভানুয়াতুর আইল্যান্ড অব এসপিরিটু স্যান্টোর প্রায় চার হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এটি মালয়ো-পলিনেশীয় ভাষার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার স্যান্টো সাব গ্রুপের সদস্য। তোলোমাকো (Tolomako) ভাষার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও ভাষা দুটির মধ্যে পারস্পরিক বোধগম্যতা নেই। সাকাও ভাষীরা তাদের দ্বীপকে Laohi নামে ডাকে।

সাখা (Sakha)

তুর্কি এ ভাষায় কথা বলেন রাশিয়ার সাখা ও সংলগ্ন অঞ্চলের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। ১৯৬২ সালে এ ভাষা প্রথম লিখিত হয়। এটি ছিল ট্রাভেলার এন. উইটসেনের লেখা একটি বই এবং প্রকাশিত হয়েছিল আমস্টারডাম থেকে। ১৯৩৯ থেকে এ ভাষা লিখতে সিরিলিক বর্ণমালা ব্যবহৃত হচ্ছে।

সালার (Salar)

তুর্কি এ ভাষায় কথা বলেন চীনের প্রায় ষাট হাজার মানুষ। সালার জনগোষ্ঠী চীনে পৌছায় ১৪ শতকে। সালার কিংবদন্তী অনুসারে তারা সমরখন্দ থেকে চীনে এসেছিল। এ ভাষায় তিব্বতি এবং চায়নিজ ভাষার প্রভাব রয়েছে।

সামোয়া (Samoan)

অস্ট্রোনেশীয় এ ভাষায় কথা বলেন পশ্চিম সামোয়া এবং আমেরিকান সামোয়ার প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এছাড়া ফিজি, টোঙ্গা, হাওয়াই ইত্যাদি এলাকাতেও সামোয়াভাষীরা বাস করেন। টোঙ্গান ভাষার সঙ্গে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

সাঙ্গো (Sango)

এ ভাষা প্রধানত ব্যবহৃত হয় সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে। এছাড়া চাদ এবং কঙ্গোতেও এ ভাষাভাষী আছেন। এ ভাষায় কথা বলেন প্রায় চার লাখ মানুষ। আর ৫০ লাখ মানুষ এ ভাষা ব্যবহার করেন সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে।

সারামাকান (Saramaccan)

এটি একটি পর্তুগিজভিত্তিক ক্রেয়ল ভাষা। সুরিনামে ২৪ হাজার এবং ফ্রেঞ্চ গায়ানায় প্রায় ২ হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। ইংরেজি, ডাচ এবং আফ্রিকার অনেক ভাষা থেকে শব্দ এসেছে এ ক্রেয়ল ভাষায়।

 

বর্ণনানুক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার বর্ণনা পর্ব ১১ | ভাষাকোষ | শানজিদ অর্ণব

 

সারডিনিয়ান (Sardinian)

রোমানস (Romance) এ ভাষায় কথা বলেন ইতালির সারডিনিয়ান দ্বীপের প্রায় ১২ লাখ মানুষ। এ ভাষায় আছে চারটি উপভাষা-Logudorese, Campidanese, Gallurese এবং Sassarese। এ ভাষাটি প্রাচীন ল্যাটিন ভাষার বংশধর। ২৩৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানরা সারডিনিয়ায় ল্যাটিন ভাষা নিয়ে আসে। এ ভাষা প্রথম লিখিত হয় ১০৮০ খ্রিস্টাব্দে।

স্কটস (Scots)

জার্মান এ ভাষাটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে ইংরেজির সঙ্গে স্কটল্যান্ডের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। ৫ম শতকে এ ভাষা পরিচিত ছিল Inglis নামে। ১৪ শতক নাগাদ এটি স্কটল্যান্ডের প্রধান ভাষা হয়ে ওঠে। এ সময় সরকারি কাজ, সাহিত্যচর্চা সব কাজেই এ ভাষা ব্যবহৃত হতো। ১৭০৭ সালে স্কটিশ এবং ইংরেজ পার্লামেন্ট একীভূত হয়ে যাওয়ার পর স্কটল্যান্ডে সরকারি কাজের ভাষা হয় ইংরেজি। ১৯৯০ সাল নাগাদ সব ক্ষেত্রে স্কটস ভাষার ব্যবহার সীমিত হয়ে আসে।

স্কটিশ গ্যালিক (Scottish Gaelic)

স্কটল্যান্ডের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এ ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে Manx এবং Irish ভাষার সঙ্গে। ভাষাটি চতুর্থ শতকে আয়ারল্যান্ড থেকে স্কটল্যান্ডে এসেছিল। ৯ম থেকে ১১ শতক সময়কালে স্কটল্যান্ডের দক্ষিণ- পূর্বাঞ্চলে এ ভাষা ব্যবহৃত হতো।

১১ শতকের পরে এ ভাষা সরে যায় উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলে। সেলটিক ভাষা যেমন-Breton, Cornish, Welsh-এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। এ ভাষা লেখা হয় মাত্র ১৮টি বর্ণ দিয়ে। প্রত্যেকটি বর্ণের নামকরণ করা হয়েছে কোনো না কোনো গাছের নামে।

সার্বিয়ান (Servian)

সাউথ স্লাভিক এ ভাষায় কথা বলেন সার্বিয়া, বসনিয়া, অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, মন্টেনিগ্রো, ক্রোয়েশিয়া এবং মেসিডোনিয়ার প্রায় ৯০ লাখ মানুষ। এটি সার্বিয়ার দাপ্তরিক ভাষা। সার্ব জাতিগোষ্ঠীর প্রধান ভাষা এটি।

শাবাকি (Shabaki)

ইরাকের শাবাক জনগণ কথা বলেন এ ভাষায়। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের ইন্দো-ইরানীয় শাখার সদস্য। ১৯৮৯ সালের হিসাব অনুসারে শাবাকি সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার। যদিও শাবাকদের দাবি এ সংখ্যা আরও বেশি।

সুমেরিয়ান (Sumerian)

খৃস্টপূর্ব ৪র্থ সহস্রাব্দ থেকে খৃস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দ পর্যন্ত মেসোপটেমিয়ার দক্ষিণাংশে (বর্তমানে আধুনিক ইরাক) ব্যবহৃত হত এ ভাষা। মৌখিক ভাষা হিসেবে আক্কাদিয়ান ভাষা সুমেরিয়ান ভাষাকে প্রতিস্থাপিত করে। তবে ধর্মীয়, শিল্প এবং জ্ঞান চর্চায় লিখিত রূপে এ ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে খৃস্টীয় ১ম শতক পর্যন্ত। সুমেরিয়ান কুনিফর্ম (cuneiform) পৃথিবীর প্রথম লিখন পদ্ধতির অন্যতম।

শান (Shan)

এটি একটি তাই (Tai) ভাষা। মিয়ানমারের শান প্রদেশের প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। চীন ও থাইল্যান্ডেও ব্যবহৃত হয় এ ভাষা। মিয়ানমারে এ ভাষা লিখতে ব্যবহৃত হয় শান লিপি।

শাভানতে (Shavante)

ব্রাজিলের মাতো গ্রোসো রাজ্যের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এ ভাষায় কথা বলেন। এটি Macro-Ge ভাষা পরিবারের সদস্য।

শিলুক (Shilluk)

নিলো-সাহারান এ ভাষায় কথা বলেন দক্ষিণ সুদানের প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ। মালাকাল শহরের চারপাশে নীলনদের পশ্চিম ও পূর্ব তীরজুড়ে বাস করেন শিলুক ভাষীরা।

শোনা (Shona)

নাইজার-কঙ্গো ভাষা পরিবারের বান্টু শাখার সদস্য এ ভাষায় জিম্বাবুয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৯০ লাখ মানুষ কথা বলেন। ২০ শতকের শুরুর দিকে এ ভাষার আদর্শ লিখিত রূপ তৈরি হয়। এ ভাষায় লেখা প্রথম উপন্যাস ও লেখকের নাম Solomon Mutswair, Feso, প্রকাশিত হয় ১৯৫৭ সালে।

শোর (Shor)

তুর্কি এ ভাষায় কথা বলেন সাইবেরিয়ার কেমেরভো প্রদেশের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এ ভাষায় রয়েছে দুটি উপভাষা Mrasu এবং Kondoma । ১৯৩৮ থেকে সিরিলিক বর্ণমালার একটি ভার্সন দিয়ে এ ভাষা লেখা শুরু হয়। বর্তমানে Kemerovo State Universityর Novokuznetsk শাখায় এ ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়।

সিসিলিয়ান (Sicilian)

ইতালির প্রায় ৫০ লাখ মানুষ কথা বলেন এ ভাষায়। এ ভাষায় বেশিরভাগ মানুষ বাস করেন সিসিলিতে। এটি ল্যাটিন ভাষার বংশধর। ২৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানরা ল্যাটিন ভাষা এনেছিল সিসিলিতে। ১১৯৮ থেকে ১২৫০ সালের মধ্যে Frederick II-এর রাজত্বকালে এ ভাষা প্রথম লিখিত রূপ পায়।

সিক্কিমিজ (Sikkimese)

দক্ষিণ তিব্বতি এ ভাষার কথা বলেন সিকিমের ভুটিয়া জনগোষ্ঠীর মানুষ। সিক্কিমিজ ভাষায় আছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। ভাষাটি জংখা ভাষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। তিব্বতি বর্ণমালা ব্যবহার করে এ ভাষা লেখা হয়।

সিলেসিয়ান (Silesian)

পশ্চিম স্লাভোনিক এ ভাষায় কথা বলেন সিলেসিয়া অঞ্চলের প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। সিলেসিয়ার কিছু অংশ পোল্যান্ড এবং কিছু অংশ চেক রিপাবলিকের মধ্যে পড়েছে। পোলিশ ভাষার সঙ্গে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৬ সালে এ ভাষার নতুন বর্ণমালা তৈরি হয়েছে। এ ভাষাটিকে সরকারি পর্যায়ে মর্যাদা দিতে চলছে বিভিন্ন প্রচেষ্টা।

সিল্ট’এ (Silt’e)

সেমেটিক এ ভাষায় কথা বলেন ইথিওপিয়ার আট লাখ ২৭ হাজার মানুষ। ১৯৮০ সাল থেকে ইথিওপীয় লিপি ব্যবহার করে লেখা হয় এ ভাষা।

সিন্ধি (Sindhi)

ইন্দো-আর্য এ ভাষায় কথা বলেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। ভারতে আছে এ ভাষার প্রায় ৩ কোটি মানুষ। এ ভাষা প্রথম লিখিত রূপ পায় ৮ শতকে। ১৫ শতকের শেষ দিকে এ ভাষায় সাহিত্যচর্চা শুরু হয়।

স্লোভাক (Slovak)

Western Slavonic এ ভাষায় কথা বলেন-প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ, যার বেশিরভাগ বাস করেন স্লোভাকিয়ায়। ১৯১৮ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে স্লোভাক সাহিত্য তার স্বর্ণযুগ পার করে।

স্লোভেনিয়ান (Slovenian)

South Slavic এ ভাষায় কথা বলেন স্লোভেনিয়ার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। এ ভাষায় অনেক উপভাষা আছে। আদর্শ স্লোভেনিয়ান ভাষা তৈরি হয়েছে মধ্যাঞ্চলীয় উপভাষা থেকে। এ ভাষায় প্রথম লিখিত নিদর্শন হিসেবে পাওয়া গেছে Freising Manuscripts যা লেখার সময়কাল ১০০০ খ্রিস্টাব্দ। এটি স্লোভেনিয়ার দাপ্তরিক ভাষা।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment