বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি – ভাব-সম্প্রসারণের একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আগ্রহীরা এখন থেকে ধারণা নিয়ে নিজের ভাষায় নিজস্ব ভাষণ তৈরি করবেন। ইংরেজি ‘Amplification’ বোঝাতে বাংলায় “ভাব সম্প্রসারণ’ কথাটি ব্যবহৃত হয়। ভাব-সম্প্রসারণ বলতে বোঝায়, কোনো বাক্যাংশ বা গদ্যাংশের মধ্যে যে ভাবটি সংগুপ্ত থাকে, তা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করে বলা। অনেক সময় বিশেষ কোনো বাক্য বা কবিতার বিশেষ কোনো পক্তির মধ্যেও ভাব-ব্যঞ্জনা লুকায়িত থাকে। সেই ব্যঞ্জনার মর্মোদ্ধার করে সবিস্তারে তা প্রকাশ করাই হলো ভাব-সম্প্রসারণের তাৎপর্য।
বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর
মানব-সভ্যতায় নারীর অবদান কতটুকু? এই প্রশ্নের উত্তর আজ দ্ব্যর্থহীন, চূড়ান্ত এবং প্রমাণিত।মানবসভ্যতার উন্নতির মূলে রয়েছে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এ-পৃথিবীতে নর ও নারী একে অপরের পরিপূরক। মহান স্রষ্টা বিশ্বের আদি মানব-মানবীর আবাসস্থল হিসেবে। পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। পরবর্তীকালে আদি মানব-মানবীর অবদানেই এ জগতে মানুষের আবাদ হয়েছে। তাই নর ও নারী অভিন্ন সত্তা।
সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই নারী— কন্যা-জায়া-জননীরূপে সর্বদা নরের পাশে থেকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। দুঃখ-যন্ত্রণায়, বিপদে-আপদে পরম আত্মজনের মতো পাশে বসে সান্ত্বনা ও আশার বাণী শুনিয়েছে। নারী তার স্বভাবসুলভ স্নেহ-মায়া, সেবা ও যত্ন দিয়ে পুরুষের হৃদয়কে সর্বদা পরম প্রশান্তিতে ভরে দিয়েছে। নারী যদি নরের পাশে না থাকত তাহলে নর কোনোদিনই ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখত না, সমাজ গড়ে উঠত না # এবং সভ্যতাও বিকাশ লাভ করত না। তাই বলা যায়, নর যদি অস্থি হয়, নারী তার মজ্জা। নর যদি দেহ, নারী তার প্রাণ।
উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পর্যায়ক্রমে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে সভ্যতা। প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ হোক, বিশ্বের যেখানে যত মহৎকর্ম তা সম্পাদনের পেছনে পুরুষের ন্যায় নারীরও অবদান রয়েছে। মানুষ এখন একথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বিশ্বাস করে যে, মানব-সভ্যতা গড়ার পেছনে নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ফলে নারীর মর্যাদাও পুরুষেরই সমপর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।

কাউকে বাদ দিয়ে কেউ এককভাবে কৃতিত্বের দাবিদার নয়। একের দানে অন্যে পরিপুষ্ট। আর উভয়ের দানে পরিপুষ্ট আমাদের সভ্যতা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, দর্শন— গোটা পৃথিবী। পৃথিবীর সামগ্রিক অগ্রগতি ও কল্যাণের মধ্যে উভয়ের অবদানই সমান। প্রকৃতপক্ষে পুরুষের শৌর্য, বীর্য আর নারীহৃদয়ের সৌন্দর্য, প্রেম, ভালোবাসা- এ দুয়ের মহিমা একত্র হয়েই বিশ্বের সকল উন্নতি সাধিত হয়েছে।
মনোবল নিয়ে কর্ম সম্পাদনে অগ্রসর হতে হবে। তা হলেই সফলতা আসবে, জীবন সার্থক হবে।
আরও দেখুন: