Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ বিশ্লেষণ

hsc alim class 11 12 bangla e0 3 বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ বিশ্লেষণ

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ এইচএসসি বাংলা তথা একাদশ শ্রেণীর বাংলা বা দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা, আলিম ক্লাস বাংলা প্রথম পত্রের, সাহিত্যপাঠ বই এর।

 

লেখক: মাইকেল মধুসূদন দত্ত

 

‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতা’ কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধকাব্য’ নামক মহাকাব্যের ‘বধো’ নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে নেয়া হয়েছে। এ কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি রাবণের জ্যেষ্ঠ পুত্র মেঘনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং রাবণের ছোট ভাই বিভীষণের বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে সুগভীর ঘৃণা প্রকাশিত হয়েছে।

 

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ বিশ্লেষণ

 

‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতা’ কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে। সর্বমোট নয়টি সর্গে বিন্যস্ত ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র ষষ্ঠ সর্গে লক্ষ্মণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে অসমসাহসী বীর মেঘনাদের।

রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ শত্রুর উপর্যুপরি দৈব-কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। ভ্রাতা কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিবসে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করে নেন।যুদ্ধজয় নিশ্চিত করার জন্য মেঘনাদ যুদ্ধযাত্রার পূর্বেই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করে। মায়া দেবীর আনুকূল্যে এবং রাবণের অনুজ বিভীষণের সহায়তায়, লক্ষ্মণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশে সমর্থ হয়। কপট লক্ষ্মণ নিরস্ত্র মেঘনাদের কাছে যুদ্ধ প্রার্থনা করলে মেঘনাদ বিস্ময় প্রকাশ করে।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে লক্ষ্মণের অনুপ্রবেশ যে মায়াবলে সম্পন্ন হয়েছে, বুঝতে বিলম্ব ঘটে না তার। ইতোমধ্যে লক্ষ্মণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য সময় প্রার্থনা করে লক্ষ্মণের কাছে। কিন্তু লক্ষ্মণ তাকে সময় না দিয়ে আক্রমণ করে। এ সময়ই অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারের দিকে চোখ পড়ে মেঘনাদের; দেখতে পায় বীরযোদ্ধা পিতৃব্য বিভীষণকে। মুহূর্তে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায় তার কাছে। খুল্লতাত বিভীষণকে প্রত্যক্ষ করে দেশপ্রেমিক নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, সেই নাটকীয় ভাষ্যই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ অংশে সংকলিত হয়েছে।

এ অংশে মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয়েছে ঘৃণা।জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও জাতিসত্তার সংহতির গুরুত্বের কথা যেমন এখানে ব্যক্ত হয়েছে তেমনি এর বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রকে অভিহিত করা হয়েছে নীচতা ও বর্বরতা বল।

‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটি ১৪ মাত্রায় অমিল প্রবহমান যতিস্বাধীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রথম পঙ্ক্তির সঙ্গে দ্বিতীয় পঙ্ক্তির চরণান্তের মিলহীনতার কারণে এ ছন্দ ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ নামে সমাধিক পরিচিত। এ কাব্যাংশের প্রতিটি পঙ্ক্তি ১৪ মাত্রায় এবং ৮+৬ মাত্রার দুটি পর্বে বিন্যস্ত। লক্ষ করার বিষয় যে, এখানে দুই পঙ্ক্তির চরণান্তিক মিলই কেবল পরিহার করা হয়নি। যতিপাত বা বিরামচিহ্নের স্বাধীন ব্যবহারও হয়েছে বিষয় বা বক্তব্যের অর্থের অনুষঙ্গে। একারণে ভাবপ্রকাশের প্রবহমানতাও কাব্যাংশটির ছন্দের বিশেষ লক্ষণ হিসেবে বিবেচ্য।

 

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার ব্যাখ্যাঃ

 

আরও দেখুন:

 

Exit mobile version