বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার , ভূমিকা : নববর্ষ বলতে বোঝায় বছরের শুরু। পৃথিবীজুড়ে সব দেশেই নববর্ষ উদযাপিত হয়। দিনটি উদযাপিত হয় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে। আমাদের দেশে পালিত হয় বাংলা নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন। দিনটি আমাদের কাছে নববর্ষ নামে চিহ্নিত। নববর্ষে আমরা অতীত বছরের তিরোধান এবং সমাগত বছরের আবির্ভাবের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে যাই।

বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ

 যে বছর প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চ থেকে বিদায় নিল একদিকে তার সুখ- সুঃখের বহু স্মৃতিমাখা চিত্র বিলীয়মান এবং অন্যদিকে যে বছর প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হলো তার ভঙ্গি, অথচ অনিশ্চিত সম্ভাবনা সুনিশ্চিত রূপে বিদ্যমান। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় গণমুখী ও সর্বজনীন উৎসব। এ দিনে বাংলাদেশের জনসমষ্টি অতীতের সুখ-দুঃখ ভুলে গিয়ে নতুনের আহবানে সাড়া দিয়ে ওঠে।

বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

 

তারা জানে এ নতুন অনিশ্চিত সুনিশ্চিত সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ। তাই মন সাড়া দেয়, চঞ্চল হয়, নতুনকে গ্রহণ করার প্রস্তুতি নেয়। অজান্তে হৃদয় তন্ত্রীতে বেজে ওঠে ভালোবাসার সুর। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, মুছে থাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে সুচি হোক ধরা। রসের আবেশ রাশি, শুষ্ক করি দাও আসি, আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ, এসো এসো এসো হে বৈশাখ।

বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি : মুঘল সম্রাট আকবর তার রাজত্বের ২৯ বছরের সময় তার দরবারের অন্যতম পণ্ডিত জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদ আমর ফতেহ উল্লাহ সিরাজীকে হিজরি সালের সাথে সমন্বয় করে সৌরবর্ষভিত্তিক ‘ফসলি সন’ প্রবর্তনের নির্দেশ দেন। তিনি সম্রাটের নির্দেশ মোতাবেক সৌরমাসভিত্তিক একটি নতুন সালের উদ্ভাবন করেন। এটি মৌসুমভিত্তিক সৌর সন। এর নাম দেয়া হয় ‘ফসলি সন’। সম্রাট আকবর ৯৯৩ হিজরি সন মোতাবেক ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ মার্চ মতান্তরে ১১ মার্চ ‘ফসলি সন’- এর ফরমান জারি করেন। পরবর্তীকালে এ ফসলি সনই বাংলা সন বা বঙ্গাব্দে নামান্তরিত হয়।

নববর্ষ উদযাপন: বাংলা নববর্ষ একটি সর্বজনীন উৎসবের দিন। এটি কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উৎসব নয়। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি যে ধর্মেরই লোক হোক না কেন, বাংলাদেশে যাদের জন্ম, বাংলা ভাষায় যারা কথা বলে, বাংলা নববর্ষ তাদের সকলের উৎসব। এ দেশে বসবাসরত অন্য দেশের লোকেরাও নববর্ষের নানা অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকে।

বাংলা নববর্ষ বহুমাত্রিকতায় পরিপূর্ণ। আমাদের প্রকৃতি ও সমাজ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আমাদের জীবনাচার সবকিছুর সাথেই নববর্ষের যোগ। নববর্ষ ব্যক্তির কাছে ব্যক্তিকে ব্যক্তির কাছে সমষ্টিকে এনে মেলবন্ধন রচনা করেছে। আর তাই কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ই-মেইলের আধুনিক যুগেও আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় পহেলা বৈশাখে সাড়ম্বরে শুভ হালখাতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ডক্টর মুহাম্মদ এনামুল হক তার বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধে লিখেছেন ‘হালখাতা অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখের একটি সর্বজনীন আচরণীয় রীতি। ‘হালখাতা’ নতুন বাংলা বছরের হিসাব পাকাপাকিভাবে টুকে রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের নতুন খাতা খোলার এক আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ। এ আনুষ্ঠানের সামাজিকতা, লৌকিকতা, সম্প্রীতি ও সৌজন্যের দিক একান্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

বৈশাখী মেলা সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সর্বজনীন মিলনোৎসব। নববর্ষকে উৎসব মুখর করে তোলে বৈশাখী মেলা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের এক মহামিলন ক্ষেত্র এই মেলা । বৈশাখ মাসের শুরু থেকে প্রায় সারা মাস ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মেলা বসে। নাচ, গান, সার্কাস, নাগরদোলা ইত্যাদি মেলাগুলোকে আনন্দময় করে তোলার প্রধান উৎস। জমিদারি আমলে নববর্ষের আরও একটি সর্বজনীন অনুষ্ঠান ছিল ‘পুণ্যাহ’। ঐ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জমিদার ও প্রজার মধ্যে দূরত্ব কমে আসত এবং প্রজারা আপ্যায়িত হতো জমিদার বাড়িতে। জমিদারি প্রথা বিলোপের পর ক্রমান্বয়ে ‘সুপ্তাহ’ অনুষ্ঠানও বিলুপ্ত হয়।

বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একডেমী নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ছায়ানট, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, নজরুল একাডেমী এবং দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। সেসব কর্মসূচিতে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য মিছিল, বৈশাখী মেলা ইত্যাদি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন পহেলা বেশাখের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে। এছাড়াও সংবাদপত্রগুলোকে বঙ্গাব্দ, নববর্ষ ও বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে গবেষণাধর্মী প্রবন্ধসহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়।

বর্তমানে নগরজীবনে নগর সংস্কৃতির আদলে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে নববর্ষ উদযাপিত হয়। নববর্ষকে স্বাগত জানাতে তরুণীরা লালপেড়ে সাদা শাড়ি, হাতে চুড়ি, খোপায় ফুল, গলায় ফুলের মালা এবং কপালে টিপ পরে আর ছেলেরা পরে পাজামা ও পাঞ্জাবি। এ দিন সকালবেলা মাটির সানকিতে ইলিশ মাছ বা শুটকি সহযোগে পান্তাভাত খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। পিঠা পায়েসের দোকানগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে। এভাবে লোকজ বর্ষবরণ প্রথাগুলোর কোনো কোনোটির অনুসরণের মাধ্যমে নগরজীবনে গ্রামীণ ঐতিহ্য অনেকটা সংরক্ষিত হচ্ছে।

বাংলা সাহিত্যে নববর্ষ: বাংলা সাহিত্যে নববর্ষের প্রভাব ব্যাপক। বাংলাদেশের ছয় ঋতুর মধ্যে গ্রীষ্ম সবচেয়ে খর তাপের ঋতু। গ্রীষ্ম দিয়ে আমাদের ঋতুচক্রের যাত্রা শুরু হয়। শেষ ঋতু রোমান্টিক ঋতুরাজ বসন্তের পর গ্রীষ্মের আগমন ঘটে। এ ঋতুরই প্রথম মাস বৈশাখ। বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই নববর্ষের যাত্রা শুরু। নববর্ষের ছোঁয়া আছে এমন বাংলা সাহিত্য নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:

১. চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে: মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মকুন্দরাম চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে এর প্রভাব দেখা যায়। চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের ‘কালকেতু উপাখ্যান’ অংশে ‘দেবীর পরিচয় প্রদান প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘অনল সমান পোড়ে বৈশাখের খরা’ আবার ‘কালকেতু উপাখ্যান’-এর যুগ্মরার বার মাসের দুঃখ অংশে আছে-

ভেরাণ্ডার খাম তার আছে মধ্য ঘরে।

প্রথম বৈশাখ মাসে নিত্য ভাঙ্গে ঝড়ে-

পুণ্যকর্ম বৈশাখেতে খরতর খরা।

তরুতল নাহি মোর করিতে পসরা-

পদ পোড়ে খরতর রবির কিরণ।

শিরে দিতে নাহি আঁটে অঙ্গের বসন-

বৈশাখ হৈল আগো মোড়ে বড় বিষ

মাংস নাহি খায় সর্ব লোক নিরামিষ-

 

২. পদ্মাবতী কাব্যে: মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ কবি আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যেও ষড়ঋতুর চমৎকার বর্ণনা রয়েছে। তার মধ্যে আছে বৈশাখ অর্থাৎ নববর্ষ।

মঞ্চযুগের সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য কবি ভারত চন্দ্রের কবিতায়ও গ্রীষ্মের উপস্থিতি আছে। গ্রীষ্মের প্রথম আকর্ষণ বৈশাখ। বৈশাখ মানেই নববর্ষ। এ বৈশাখ নিয়ে রচিত পংক্তিমালা যুগে যুগে বাংলা কাব্য ভাণ্ডারকে বৈচিত্র্যময় করেছে। যুগসন্ধিক্ষণের কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের কবিতায়ও এ দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।

পরবর্তীকালে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীনচন্দ্র সেন, কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিহারীলাল চক্রবর্তী এ ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন।

বাংলা সাহিত্যে ও বাঙালির জীবনে নববর্ষ | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

 

৩. রবীন্দ্রনাথের কাব্য ও নববর্ষ: রবীন্দ্রনাথের বিশাল কাব্য ভাণ্ডারে নানাভাবে নববর্ষের অনুভূতি বিকশিত হয়েছে। ‘চৈতালী’ কাব্যের বহু কবিতায় রূপায়িত হয়েছে নববর্ষের পরিবেশ। রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতিপ্রেমী কবি । বৈশাখের রুদ্ররূপের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি লিখেছেন,

হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ,

ধূলায় ধূসর রক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল,

তপারিউ তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিশাল ভয়াল

কারে দাও ডাক

হে ভৈরব,

হে রুদ্র বৈশাখ।

ছায়ামূর্তি যত অনুচর-

দগ্ধতাম্র দিগন্তের কোনো ছিদ্র হতে ছুটে আসে

কী ভীষণ অদৃশ্য নৃত্যে মাতি উঠে মধ্যাহ্ন আকাশে

নিঃশব্দ প্রখর-

ছায়ামূর্তি তব অনুচর।

৪. রূপচ্ছন্দা কাব্যগ্রন্থ: শাহাদৎ হোসেন নিসর্গপ্রেমিক কবি। বাংলাদেশের প্রায় সব ঋতুই তার কাব্যে উপস্থিত হয়েছে। নববর্ষের কথা তিনি অনুভব করেছেন বৈশাখী চেতনায়। তার ‘রূপচ্ছন্দা’ কাব্যগ্রন্থের ‘বৈশাখ’ কবিতায় সে দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ।

স্বাগত তোমারে আজি হে নতুন উদ্দণ্ড বৈশাখ

ঋতুরূপী রুদ্রের পিনাক।

বসন্ত বিদায় মুখে

ধরণীর বুকে

জাগিয়াছে তোমার আহ্বান

মর্মারিত শুষ্ক পত্রে চিরন্তন আগমনী গান ।

৫. বৈশাখী কাব্যগ্রন্থ: নজরুলের ভাবশিষ্য কবি বেনজীর আহমদের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থের নাম বৈশাখী এর কয়েকটি কবিতায় উপস্থাপিত হয়েছে নববর্ষের অনুভূতি। তার ‘বর্ষ-আবাহন’ কবিতায় আছে—

“বর্ষ অবসান’ ।

এপারে আঁধারে বসি ওপারে আলোর শুনি গান ।

অর্থাৎ কবি হৃদয়ে নতুন বছরের অনুভূতি জেগেছে। তিনি যে আলোর গান শুনতে পেয়েছেন, তা নববর্ষেরই আশা-আকাঙ্ক্ষার গান।

৬. সনেট শতক কাব্যগ্রন্থ: সূফী মোতাহের হোসেন এ সময়ের অত্যন্ত শক্তিশালী ঋতুপ্রেমিক কবি। সনেট আকৃতিতে রচিত তার বহু কবিতায় নববর্ষের অনুভূতি ব্যক্ত হয়েছে। উদাহরণ হিসেব তার সনেটশতক গ্রন্থের বৈশাখী প্রভাত, বৈশাখী, বৈশাখী রজনী, নববর্ষ, বৈশাখী ঝড়ের রাতি, গ্রীষ্মবীন, গ্রীষ্মরাগ প্রভৃতি কবিতার নাম করা যায়। বৈশাখী কবিতায় কবি একদিকে যেমন গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতা ও রুদ্ররূপের বর্ণনা দিয়েছেন, অন্যদিকে কবি রোমাঞ্চিত হয়েছেন নববর্ষের নব উন্মাদনায় ।

নববর্ষ দিনে আজ চিত্তে বাজে গভীর সঙ্গীত

নূতন উঠেছে খুরি নিকে জাগিছে সুন্দর।

নবশ্যাম তৃণ দলে তরু শিরে কাপে থর থর

নবীনের আবির্ভাব স্পর্শ করি অন্তর নিভৃত ।

৭. ফররুখ আহমদের চেতনায় নববর্ষ: ফররুখ আহমদ নববর্ষকে অনুভব করেছেন বৈশাখের রুদ্র রূপের ভেতর দিয়ে। বৈশাখকে তিনি ভেবেছেন ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে। অর্থাৎ নববর্ষ কেবল নতুন উদ্দীপনাই জাগায় না। কখনো কখনো ধ্বংসের দিকেও টেনে নিয়ে যায়। বৈশাখ তাই প্রতিকূল পরিবেশে জীবন সংগ্রামেরও প্রতীক। 

৮. নববর্ষ বৈশাখ: আ. শ. ম. বাবর আলী ছড়ার আঙ্গিকে লিখেছেন ‘নববর্ষ বৈশাখ’। তার মনে গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রকৃতির সৌন্দর্য হারিয়ে যাওয়ার ভয় অর্থাৎ নববর্ষের নিরানন্দ প্রকাশ পেয়েছে তার ছড়ায় । 

এছাড়া আলাউদ্দিন আল-আজাদের বৈশাখী স্তবক ও পয়লা বৈশাখ, আল-মাহমুদের ‘বোশেখ’, জাহানারা আরজুর ‘এই বৈশাখে’ প্রভৃতি কবিতায়ও জীবন সংগ্রামের চেতনায় অভিষিক্ত হয়ে নববর্ষের অনুভূতি বিকশিত হয়েছে। বৈশাখ যেমন ধ্বংসের প্রতীক, তেমনি নববর্ষের নব উন্মাদনাও তারুণ্যেরও প্রতীক। তাই ধ্বংস আর গ্রীষ্মের দাবদাহের পরও কবিরা বৈশাখের মধ্যে আশার আলোর সন্ধান পেয়েছেন । অনেক কবির কবিতা ও ছড়ায় এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

উপসংহার : কেবল সাহিত্য সংস্কৃতিতে নয়, বাংলা নববর্ষের রূপ তার আচরিত অনুষ্ঠানগুলোতেই ধরা পড়ে। নববর্ষ আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে জাগ্রত করে। বর্তমানের মূল্যায়ন ঘটায় জাতির আগামী দিনের রূপরেখাটির দিক নির্দেশনা দেয়। তাই বাংলা নববর্ষ আমাদের গৌরব। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ। নববর্ষ উপলক্ষে সর্বজনীন উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা দেশের এক অবিভাজ্য সাংস্কৃতিকরূপ ফুটে ওঠে। বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে গোটা দেশটা যেন হয়ে ওঠে উৎসব মুখর।

তাই বাংলা নববর্ষকে বুঝতে হলে এদিন প্রতিপালিত অনুষ্ঠানগুলোর একটি মোটামুটি হিসাব নিকাশ করে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রবৃত্ত হতে হবে। আর পড়তে হবে নববর্ষ নিয়ে রচিত আমাদের সাহিত্য। ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকীর ভাষায়, এখন বাংলাদেশে প্রতিবারই শুভ নববর্ষ পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ জাঁকজমকের সাথেই পালন করছে। ভবিষ্যতেও পালিত হবে। শুধু পালন করলেই হবে না। আমাদের ব্যক্তি জীবনে ও জাতীয় জীবনে নববর্ষকে কল্যাণকর করে তোলার জন্য মনোযোগী হতে হবে।

 

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রয়োজন ও নির্ভরযোগ্য সূত্রঃ

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment