বাক্য বিয়োজন | বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা , সহজ, শ্রুতিমধুর এবং সুখপাঠ্য করার উদ্দেশ্যে একটা বাক্যকে ভেঙে দুই বা ততোধিক বাক্যে রূপান্তরিত করার কাজকে বলে বাক্য-বিয়োজন। এটা বাক্য সংযোজনের বিপরীত। নিয়ম : বাক্য-সংযোজন সম্মন্ধে যেসব নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে, বাক্য-বিয়োজনের ক্ষেত্রে সেগুলো বিপরীতক্রমে প্রয়োগ যেহেতু তু যুক্ত বাক্য প্রয়োগ করা যাবে।
বাক্য বিয়োজন | বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা
যেমন : : যেহেতু তুমি আস নি সেহেতু আমিও বেশিক্ষণ তোমার অপেক্ষায় বসে থাকি নি, ফলে এখন তুমি আমার ওপর রাগ করতে পার না । ফলে এ বিযুক্ত বাক, : তুমি আস নি ৷ তাই আমিও বেশিক্ষণ তোমার অপেক্ষায় বসে থাকি নি। সুতরাং এখন তুমি আমার ওপর রাগ করতে পার না। – লক্ষ রাখতে হবে, কোনো বিশাল সংযুক্ত বাক্যে সচরাচর অসমাপিকা ক্রিয়া বেশি থাকে। বাক্য বিয়োজনের সময় এগুলোকে সমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তরিত করে ছোট ছোট অনেকগুলো বাক্য গঠন করা যেতে পারে।
যেমন : সংযুক্ত বাক্য : খাওয়া শেষ হবার পর আমরা হাত মুখ ধুয়ে যাবতীয় তল্পিতল্পা যার যার ঘাড়ে ঝুলিয়ে গৃহস্বামীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আবারও যাত্রা শুরু করলাম । বিযুক্ত বাক্য : আমাদের খাওয়া শেষ হল। হাত মুখ ধুলাম। যাবতীয় তল্পিতল্পা যার যার ঘাড়ে ঝুলালাম। তারপর আমরা গৃহস্বামীর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। অবশেষে আমরা আবারও যাত্রা শুরু করলাম ৷
আধুনিক বাক্যতত্ত্ব আসার আগেই প্রাচীন ভারতে লিখিত ছিল পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী (সি. চতুর্থ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) যাকে আধুনিকোত্তর কাজের একটি উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় যা আধুনিক বাক্যতত্ত্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমে চিন্তার স্কুলটি “প্রথাগত ব্যাকরণ” নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল যা মূলত ডায়নোসিয়াস থ্র্যাক্সের কাজের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।
শতাব্দী জুরে বাক্যতত্ত্বের উপর যে কাজগুলো হয়েছে তা গ্রামেইর জেনারেল(grammaire générale) নামে পরিচিত একটি কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আসতেছে, ১৬৬০ সালে একই শিরোনামের একটি বইয়ে অ্যান্টনি আর্নল্ডের মাধ্যমে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সিস্টেমটি তার মৌলিক ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছিল যেখানে ভাষা হল চিন্তা প্রক্রিয়াগুলির একটি প্রত্যক্ষ প্রতীক এবং সর্বাধিক স্বাভাবিক উপায়ে চিন্তাকে প্রকাশ করার একটি একক ।
যাইহোক, ঐতিহাসিক-তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উন্নয়নের সাথে সাথে উনিশ শতকে ভাষাবিদগণ মানব ভাষাগুলির নিবিড় বৈচিত্র্য উপলব্ধি করতে এবং ভাষা ও যুক্তিবিজ্ঞানের মধ্যে মৌলিক ধারণাগুলির সম্পর্ক নিয় প্রশ্ন করতে শুরু করেছিলেন। এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছিল যে চিন্তাকে প্রকাশ করার সবচেয়ে স্বাভাবিক কোন উপায় ছিল না, এবং সেইজন্য লজিককে ভাষার কাঠামো অধ্যয়ন করার জন্য ভিত্তি হিসাবে নির্ভর করা যেতে পারে না।
আরও দেখুন :