অর্থানুসারে বাক্যে এর প্রকারভেদ | শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের নিয়ম

অর্থানুসারে বাক্যে এর প্রকারভেদ মানুষ মনের ভাব লিখে বা বলে প্রকাশ করার সময় বাক্যে বিভিন্ন অনুভবের প্রকাশ ঘটে এবং অর্থের বিভিন্নতা প্রকাশ পায় । অর্থানুসারে বাক্যকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায় : ১। বিবৃতিমূলক বাক্য। ২। প্রশ্নসূচক বাক্য। ৩। বিস্ময় বা আবেগসূচক বাক্য। ৪। ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য। ৫। আদেশ বাচক বাক্য।

 

অর্থানুসারে বাক্যে এর প্রকারভেদ

অর্থগত ভাবে বাক্যকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: 

  • বিবৃতিমূলক বাক্য
  • প্রশ্নবোধক বাক্য
  • অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
  • আবেগসূচক বাক্য

 

উ কার ব্যবহারের নিয়ম অর্থানুসারে বাক্যে এর প্রকারভেদ | শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের নিয়ম

 

বিবৃতিমূলক বাক্য

যে বাক্যে কোন বক্তব্য সাধারণভাবে বিবৃত বা বর্ণনা করা হয়, তাকে বিবৃতিমূলক বা বর্ণনাত্মক বাক্য বলা হয়। যেমন-

  • সূর্য পূর্বদিকে ওঠে।
  • সে রোজ এখানে আসে।
  • সে এখন আর আবৃত্তি করে না।
  • আজ বৃষ্টি হবে না।

বিবৃতিমূলক বাক্য দুই প্রকার। যথা: হ্যাঁ-সূচক বা অস্তিবাচক বাক্য না-সূচক বা নেতিবাচক বাক্য

হ্যাঁ-সূচক বা অস্তিবাচক বাক্য: যে বাক্যে কোনো ঘটনা, ভাব ও বক্তব্যের অস্তিত্ব বা হ্যাঁ-সূচক অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে হ্যাঁ-সূচক বা অস্তিবাচক বাক্য বলে। যেমন:

  • সেদিনও মুখ ভার করে ছিল রেনু।
  • দিনগুলো বেশ কাটছিল আমাদের।
  • আমরা মিছিলে পা বাড়ালাম।
  •  ওর মা মারা গেছে।

না — সূচক বা নেতিবাচক বাক্য: যে বাক্যে কোন ঘটনায়, কাজে বা ভাবে অস্বীকৃতি, অনস্তিত্ব, নিষেধ বা না-সূচক অর্থ বোঝায়, তাকে না-সূচক বা নেতিবাচক বাক্য বলে। যেমন:

  • সেদিনও রেনুর মুখ প্রফুল্ল ছিল না।
  • আমাদের দিনগুলো খারাপ কাটছিল না।
  • আমরা মিছিলে পা না বাড়িয়ে পারলাম না।
  • ওর মা বেঁচে নেই।

প্রশ্নবোধক বাক্য

সংবাদ দান নয়, বরং সংবাদ পাওয়ার জন্য শ্রোতাকে লক্ষ করে যে বাক্য বলা হয়, তার একটি প্রধান রূপ হচ্ছে প্রশ্নবোধক বাক্য। যে বাক্যে কোনো কিছুর জিজ্ঞাসা বা প্রশ্নসূচক অর্থ প্রকাশ করে, তাকে প্রশ্নবোধক বাক্য বলে। যেমন-

তোমার নাম কী?

বাড়ি থেকে আসছ বুঝি?

কোথায় যাচ্ছ?

কেন এসেছ?

যাবে নাকি?

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

অনুজ্ঞাসূচক বাক্য

যে বাক্যে আদেশ, অনুরোধ, প্রার্থনা, মিনতি ইত্যাদি অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। এতে সাধারণত কর্তাটি উহ্য থাকে। যেমন:

  • আমার কাজটা করে দিন/ দেবেন। (অনুরোধ)
  • প্রভু, দীনের এই প্রার্থনা পূরণ করুন। (প্রার্থনা)
  • বাংলাদেশ যেন জয়লাভ করে। (প্রার্থনা)
  • ভাল ফলের চেষ্টা কর। (আদেশ) কাছে এস (আদেশ)
  • বল বীর, বল উন্নত মম শির। (আদেশসূচক)
  • খোদা, তোমার মঙ্গল করুন। (প্রার্থনা)
  • লক্ষ্মী বাবা, আমার একটা কথা শোন্ (মিনতি) ধর্ম ও ন্যায়ের পথে চল। (উপদেশ)

আবেগসূচক বাক্য

যে বাক্যে বিস্ময়, হর্ষ, শোক, ঘৃণা, ক্রোধ, ভয় প্রভৃতি আবেগ প্রকাশ পায়, তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। আবেগসূচক বাক্য মূলত মনের আবেগের প্রকাশ। যেমন-

  • কী সাংঘাতিক লোক! (বিস্ময়) ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে,, আমি বনফুল গো! (হর্ষ)
  • ছিঃ ছিঃ তোমার এই কাজ! (ঘৃণা) তুমি এত নীচ! (ঘৃণা)
  • হায় হায়! কী যন্ত্রণায় যে পড়েছি। (শোক) এত বড় স্পর্ধা! মুখের ওপর কথা বলে। (ক্রোধ)
  • ওরে বাবা রে, খেয়ে ফেলল রে! (ভয়)

 

বাক্যে এর প্রকারভেদ

 

অর্থগত বাক্যের রূপান্তর

  • অস্তিবাচক থেকে নেতিবাচকঃ

অস্তিবাচকঃ আরও কথা আছে।

নেতিবাচকঃ কথা শেষ হয় নি।

অস্তিবাচকঃ জামিল বাড়িতে আছে।

নেতিবাচকঃ জামিল বাড়িতে অনুপস্থিত নয়।

অস্তিবাচকঃ আজ চাঁদ উঠেছে।

নেতিবাচকঃ আজ চাঁদ না উঠে পারে নি।

অস্তিবাচকঃ তোমার সব জিনিসই দামী।

নেতিবাচকঃ তোমার কোনো জিনিসই সস্তা নয়।

অস্তিবাচকঃ প্রিয়ংবদা যথার্থ কহিয়াছে।

নেতিবাচকঃ প্রিয়ংবদা অযথার্থ কহে নাই।

 

অর্থানুসারে বাক্যে এর প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment