প্রতিবন্ধীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা [ ১০০০ + শব্দ ]

প্রতিবন্ধীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে রচনার একটা নমুনা তৈরি করবো আজ। এই রচনাটি আমাদের “মানবতা শান্তি মৈত্রী” সিরিজের একটি রচনা। আমাদের সকল রচনা শিক্ষার্থীদের ধারণা দেবার জন্য। মুখস্থ করার জন্য নয়। এই রচনা থেকে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র ধারণা নেবেন। তারপর নিজের মতো করে নিজের নিজের ভাষায় লিখবেন।

প্রতিবন্ধীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস | আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দিবস | বাংলা রচনা সম্ভার

 

ভূমিকা :

প্রতিবন্ধী বলতে বোঝায় শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক ইত্যাদি ত্রুটির কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম জনগোষ্ঠীকে। গর্ভকালীন, জন্মকালীন এবং জন্মপরবর্তী নানা কারণে মানুষ প্রতিবন্ধী হতে পারে । প্রতিবন্ধীদের সাধারণত চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকে : (ক) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী

(খ) শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী

(গ) শারীরিক প্রতিবন্ধী

(ঘ) মানসিক বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ।

কারো কারো ক্ষেত্রে অবশ্য একাধিক প্রতিবন্ধিতাও দেখা যায়। বাংলাদেশে উপযুক্ত সব ধরনের প্রতিবন্ধীই আছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের শতকরা দশ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধী। এ হিসাব মতে দেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ লোক প্রতিবন্ধী ।

 

প্রতিবন্ধী শব্দের তাৎপর্য :

প্রতিবন্ধী শব্দের আভিধানিক অর্থ বাধাগ্রস্ত ব্যক্তি। দুর্ভাগ্যক্রমে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক বিকাশের পথ হয়ে যায় রুদ্ধ। শারীরিক অথবা মানসিকভাবে এরা অসুস্থ ও অসহায় জীবনযাপন করে। ব্যক্তি বা সমাজের অবহেলা ঘটলে তা হয় আরো মানবেতর ও করুণ । জন্ম তখন এদের কাছে যেন আজন্ম পাপ হয়েই প্রতিভাত হয়।

প্রতিবন্ধীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য | মানবতা শান্তি মৈত্রী | বাংলা রচনা সম্ভার

 

প্রতিবন্ধী কারা :

সাধারণত শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে যারা সুস্থ নয়, স্বাভাবিক জীবনযাপনে যারা অক্ষম তারাই প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই যারা পৃথিবীর আলো দেখেনি, কিংবা এ সুন্দর পৃথিবীকে দেখার পর কোনো দুর্ঘটনায় যাদের চোখের আলো নিভে গেছে, শব্দ কী যারা জানে না, কিংবা পাখির কাকলি শোনার পর যারা হয়েছে শ্রবণশক্তি হারা, মায়ের ভাষার সুমধুর বোল যার মুখে ফোটে না, যারা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অপূর্ণতা নিয়ে জন্মায় অথবা কোনো দুর্ঘটনায় হয়ে যায় পঙ্গু এরা সবাই শারীরিক প্রতিবন্ধী।

এছাড়াও অনেকে আছে চিন্তাশক্তিহীন, স্মরণশক্তিহীন এদের শারীরিক বিকাশ ঘটেছে, ঘটেনি মানসিক বিকাশ এরা মানসিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধীদের জীবন মর্মান্তিক। জীবনের স্বাভাবিক গতিপথ থেকে ছিটকে পড়ে সমাজের কাছে এরা করুণার পাত্র হয়ে যায়। সহানুভূতিহীন সমাজ এদের প্রতি চরম ঔদাসীন্য প্রদর্শন করলে এরা হয়ে পড়ে দুর্বহ বোঝার মতো।

 

প্রতিবন্ধীদের সমস্যা :

জন্মসূত্রে কিংবা ভাগ্যসূত্রে যেভাবেই হোক প্রতিবন্ধীরা থাকে সমস্যা-জর্জরিত। ব্যক্তিগত সমস্যা ছাপিয়ে প্রকট হয়ে ওঠে পারিবারিক ও সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও অবহেলা । কখনো করুণা, কখনো উপহাসের পাত্র হয়ে এরা একরকম মর্যাদাহীন জীবনযাপন করে। পরনির্ভরশীলতা এদেরকে করে রাখে কুণ্ঠিত। সবসময়ই এরা হতাশার সাগরে ভাসতে থাকে। সামাজিক উৎসব-অনুষ্ঠানে, জগতের আনন্দযজ্ঞে এদের প্রবেশ হয় কুণ্ঠিত। প্রতিবন্ধীরা কেবল শারীরিক বা মানসিক দিক থেকেই পঙ্গু নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও এরা পঙ্গু। অনাদরে অবহেলায় এদের মনে জমে চরম বিতৃষ্ণা। ভালোবাসাহীনতা, অনাদার, উপেক্ষা এদের অভিশপ্ত জীবনকে ঠেলে দেয় অনিশ্চয়তার অন্ধকার পথে। আত্মনির্ভর হতে না পারায় এরা হারিয়ে ফেলে আত্মবিশ্বাস ।

 

প্রতিবন্ধিতার কারণ :

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গড় হিসাব জরিপ অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা দশ ভাগ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। এ প্রতিবন্ধিতা নানাকারণে হতে পারে। যেমন- জন্মগত, অপুষ্টিজনিত, ব্যাধিগত ও দুর্ঘটনাজনিত। দুর্ঘটনা, গর্ভ-পূর্ববর্তী প্রস্তুতির কোনো অসুবিধা, গর্ভকালে, জন্মের সময় ও জন্ম-পরবর্তী রোগব্যাধি, পোলিও, টাইফয়েড, রিকেট ইত্যাদি রোগ, অপুষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা অজ্ঞাত কোনো কারণে সাধারণত প্রতিবন্ধিতা ঘটে থাকে।

 

বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ও এদের উন্নয়ন:

উন্নত দেশে অনেক আগে থেকেই প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে : বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ভারতীয় উপমহাদেশে এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয় অনেক পরে। অবিভক্ত ভারতে প্রতিবন্ধীদের নিজ নিজ পরিবারেই আগলে রাখা হতো এবং পরিবারই তাদের দেখাশোনা করত। যাদের কেউ ছিল না তাদের অনেকে পান্থশালা কিংবা অনাথ আশ্রমে ধর্মীয়ভাবে সেবা পেত। সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত এ ব্যবস্থাই এতদঞ্চলে প্রচলিত ছিল। স্বাধীনতার পূর্বে বাংলাদেশে দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আহত হয়ে বহু মানুষ পঙ্গু হয়ে গেলে তাদের চিকিৎসা ও সেবার প্রয়োজনে ঢাকায় সরকারিভাবে একটি পঙ্গু হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। এরপর মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগে একটি কল্যাণ ও শিক্ষা সমিতি গড়ে ওঠে। এ সমিতি কয়েকজন সমাজসেবী মনোবিজ্ঞানী ও অভিভাবকের উদ্যোগে প্রথমে ঢাকা এবং পরে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড শুরু করে।

কালক্রমে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ প্রচেষ্টায় আরো অগ্রগতি সাধিত হয়। এদের সেবার জন্য বেশকিছু সমাজহিতৈষী সমাজকর্মী, মনোবিজ্ঞানী ও প্রতিবন্ধীদের অভিভাবক এগিয়ে আসেন। সে সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে ভাবতে শুরু করে। এর ফলে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করার জন্য অনেকগুলো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা ও পুনর্বাসন বিষয়ে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক উদ্যোগের পাশাপাশি বিশ শতকের ষাটের দশক থেকে কিছু কিছু সরকারি কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হতে থাকে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শিক্ষা ও পুনর্বাসন বিষয়ক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি কর্মকাণের মধ্যে কোনো সুষ্ঠু সমন্বয় ছিল না। তাই ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন সরকারের সহযোগিতায় একটি জাতীয় প্রতিবন্ধী নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১৯৯৫ সালের নভেম্বর মাসে এই নীতিমালা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভায় ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী নীতিমালা’ হিসেবে অনুমোদিত হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। মানসিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ ও শিক্ষা সমিতি’, যার বর্তমান নাম সুইড, সা বাংলাদেশে ৩৭টি শাখার মাধ্যমে বৃদ্ধি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন (বিপিএফ)* ১৯৮৪ সাল থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া সাভার পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি), টঙ্গী ব্রেইল প্রেস ও কৃত্রিম অঙ্গ উৎপাদন কেন্দ্র (বিপিএএলসি), চট্টগ্রাম কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প (সিএলসিপি), ঢাকা জাকির হোয়াইট কেইন ওয়ার্কস, নীলফামারী ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রসি মিশন (ডিবিএলএম), টঙ্গী আর্টিফিসিয়াল লিখ প্রডাকশন ইউনিট (এএলপিইউ), ঢাকা ইন্টারলাইফ বাংলাদেশ ডিসঅ্যাবিলিটি প্রোগ্রাম (আইএলবিডিপি) প্রভৃতি সংগঠন বেসরকারি উদ্যোগে দেশী-বিদেশী এবং ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রতিবন্দীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে ১৯৯১ সালে মিরপুরে “জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

এ কেন্দ্র বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধি  প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুল ও হোস্টেল, শিক্ষকদের আবাসিক ব্যবস্থা এবং বিশেষ শিক্ষার শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও হোস্টেল পরিচালনা করছে। ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিশেষ শিক্ষা বিভাগ চালু করা হয় ।

জাতিসংঘ এবং এর কিছু অঙ্গসংগঠনও বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করছে। ইউনিসেফ, ইউনেস্কো, আইএলও এবং আরো কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বের জনগোষ্ঠীকে প্রতিবন্ধী সম্পর্কে সচেতন করার অভিপ্রায়ে যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করে, সেসব বাংলাদেশেও পালিত হয়। যেমন, জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এখানে পালন করা হয়। এর উদ্দেশ্য পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের অবস্থা সম্পর্কে সকলকে সচেতন করা, যাতে তারা এদের সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে এবং এদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে ।

আন্তর্জাতিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের গৃহীত উদ্যোগসমূহ সমগ্র বাংলাদেশে বেশ প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসমূহও এ ব্যাপারে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ প্রতিষ্ঠার শর্ত অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যোন্নয়ন ও পুনর্বাসনসহ যাবতীয় দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ উক্ত সনদে স্বাক্ষর করেছে।

১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতিসংঘ প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বিশ্বকর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করে, যা সদস্য রাষ্ট্রসমূহ কর্তৃক অনুমোদিত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ১৯৮৩ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত সময়কে প্রতিবন্ধী দশক হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবন্ধী বিষয়ক বিশ্বকর্ম পরিকল্পনা ও প্রতিবন্ধী দশক পালন, শিশু অধিকার সনদের ২৩ নং ধারা অনুযায়ী প্রতিটি দেশে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহে শিশুদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব অনুধাবন, এসকাপের প্রতিবন্ধী দশক ও ১২ দফা কর্মসূচি পালন এবং প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতিসংঘের ২২ দফা স্ট্যান্ডার্ড রুলস অনুসরণ। জাতিসংঘের এ নীতিমালার মাধ্যমে বাংলাদেশও প্রতিবন্ধীদের সার্বিক উন্নয়ন ও স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ।

উপসংহার :

সমস্যা-জর্জরিত বাংলাদেশ। সুস্থ মানুষেরই এখানে সুষ্ঠু জীবন-বিকাশের পদে পদে বাধা । অভাব, দারিদ্র্যের এখানে নিত্য হাহাকার। বেকার জীবনের দুঃসহ অভিশাপ জ্বালা। তার ওপর প্রতিবন্ধী সমস্যা। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের অবস্থা আরো শোচনীয় । এখানে পথে-ঘাটে ঘুরে বেড়ায় সংখ্যাতীত অন্ধ, খঞ্জ। তাদের কাতর আর্তনাদে আকাশ-বাতাস হয়ে ওঠে বিষাদ-ভারাক্রান্ত। আজও এখানে লক্ষ লক্ষ প্রতিবন্ধী অন্যের কৃপাপ্রার্থী। ভিক্ষাবৃত্তিই ওদের জীবনধারণের একমাত্র মুশকিল আসান।

প্রতিবন্ধীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য | মানবতা শান্তি মৈত্রী | বাংলা রচনা সম্ভার

 

জন্মমুহূর্তেই অভিশাপ যাদের ললাট-লিখন, জীবনের উচ্ছল আনন্দের দিনগুলো মাঝপথেই নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে যাদের হয়ে গেল গতিরুদ্ধ, যারা শুধু পেল, যুগ-যুগান্তের অনাদর আর উপেক্ষা; পতিত অপাঙক্তেয় হিসেবে যারা হলো চিরচিহ্নিত, ধূলিতল হলো যাদের শয়ন শয্যা, যারা বেঁচে থেকেও মৃত, আজকের এই জাগ্রত চেতনার মুহূর্তে আমরা যেন বলতে পারি, এরা আমাদের ভাই, আমাদেরই স্বজন, এদের সঙ্গে আমাদের আজন্ম কালের বন্ধন। প্রতিবন্ধীরা পরিবার, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের গলগ্রহ নয়, নয় করুণার পাত্র, এই পৃথিবীতে তাদেরও কিছু দেয়ার আছে—যদি আমরা তাদের প্রতি সদয় হই এবং তাদেরকে যদি আমরা একটু আদর দিয়ে স্নেহ দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে—তাদেরকে গড়ে তুলি, তাহলেই চির-অবহেলিত প্রতিবন্ধীরা খুঁজে পাবে তাদের দুর্লভ মানব জন্মের একটি গৌরবময় অধ্যায় ।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment