Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

পারিভাষিক শব্দের আবশ্যকতা | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা

পারিভাষিক শব্দের আবশ্যকতা | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা , পৃথিবীর কোনো ভাষাই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। তাই দেখা যায় – প্রয়োজনীয় সব শব্দ সব সময় সব ভাষাতে পাওয়া যায় না। একারণে দেশি বা বিদেশি ভাষা থেকে প্রয়োজনীয় শব্দ সরাসরি বা অনুবাদের মাধ্যমে বা কিছু পরিবর্তিত রূপে গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে।

পারিভাষিক শব্দের আবশ্যকতা | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা

তবে ইচ্ছেমতো যে কোনো শব্দ গ্রহণ করা যায় না। অনেক সময় আক্ষরিক অনুবাদ শ্রুতিমধুর কিংবা যথাযথ অর্থবহ না হওয়ায় মাতৃভাষার প্রয়োজন ও অর্থগত সামঞ্জস্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পারিভাষিক শব্দ গ্রহণ বা রূপান্তর করা হয়ে থাকে। সাধারণত কথাবার্তায় পারিভাষিক শব্দের প্রয়োগ তেমন না হলেও বিশেষ ধরনের কাজ বা পেশার সঙ্গে পারিভাষিক শব্দের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

 

 

যেমন কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা তাঁদের কর্মপরিসরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পারিভাষিক শব্দ ব্যবহার করে থাকেন। যেমন : মাউস, কিবোর্ড, মনিটর, হার্ডডিস্ক, প্রসেসর ইত্যাদি। আবার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ও তাঁদের কাজকর্মে চালান, ইনভয়েস, বিল ইত্যাদি পারিভাষিক শব্দের ব্যবহার করে থাকেন। এভাবে ব্যক্তি, সমাজ ও কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন— “মানুষের জ্ঞানের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে ভাষারও প্রসার ঘটে। মানুষের ক্রমপ্রসারিত জ্ঞানের বিষয়কে ধারণ করার জন্য ‘নানা নতুন শব্দের আবশ্যকতা’ দেখা দেয়।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

প্রাচীনকালে সংস্কৃত, গ্রিক ও চীনা ভাষায় নতুন শব্দের সৃষ্টি হয়েছিল। আধুনিককালে বিভিন্ন জাতির মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান হওয়ায় নতুন শব্দ- সৃষ্টির প্রয়োজন তীব্রতর হয়েছে। ভারতীয় সভ্যতা, ইরানি সভ্যতা এবং আরবি সভ্যতার প্রসারের কালে এইসব সভ্যতার বাহক ভাষার শব্দাবলি অন্যান্য ভাষাকে প্রভাবিত করেছে। এখনো পৃথিবীর উন্নততর ভাষাগুলো অপেক্ষাকৃত অনুন্নত ভাষার ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।” নিচে পারিভাষিক শব্দের প্রয়োজনের কয়েকটি দিক তুলে ধরা হল :

১. জ্ঞান-বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর যথাযথ অনুবাদ করতে হলে অবশ্যই পরিভাষা ব্যবহার করতে হবে।  কেননা উল্লিখিত বিষয়ের সামগ্রিক ব্যাপ্তি বোঝানোর জন্যে প্রয়োজনীয় শব্দসমূহ কোনো একটি নির্দিষ্ট ভাষায় নাও থাকতে পারে।

 

 

২. পরিভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাপর ভাষার শব্দভান্ডারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। এ ছাড়া একটি ভাষার শব্দ অন্য একটি ভাষায় কীভাবে ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কেও জ্ঞান লাভ করা যায়।

৩. পরিভাষার মাধ্যমে ভাষার শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়।

৪. পরিভাষা যেহেতু ভাষার শব্দসংখ্যা বৃদ্ধি করে সেহেতু এর মাধ্যমে ভাষার প্রকাশক্ষমতার উৎকর্ষ সাধিত হয়।

৫. অনুবাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যথাযথ শব্দের দুষ্প্রাপ্যতা। সুতরাং এই সমস্যা সমাধানে পরিভাষাই আর হচ্ছে একমাত্র সহায়ক উপাদান।

৬. পরিভাষার ব্যবহার ভাষার গতিশীলতা বৃদ্ধি করে। ফলে ভাষার সৌন্দর্য অনেকগুণ বেড়ে যায়।

 

মিশ্র শব্দ ও পারিভাষিক শব্দ, বাংলা ব্যাকরণ :

 

আরও দেখুন:

Exit mobile version