Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা | Essay on Environmental pollution and its remedies

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার [ Essay on Environmental pollution and its remedies ] নিয়ে আমরা একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা তৈরি করে দিলাম। আমাদের সকল রচনা শিক্ষার্থীদের ধারণা দেবার জন্য। মুখস্থ করার জন্য নয়। এই রচনা থেকে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র ধারণা নেবেন। তারপর নিজের মতো করে নিজের নিজের ভাষায় লিখবেন।

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা
[ Essay on Environmental pollution and its remedies ]

 

ভূমিকা :

মানুষের বসবাসের যোগ্য এলাকাকে বলে তার পরিবেশ। পরিবেশের সাথে মিলেমিশে মানুষ বা অপরাপর প্রাণীর জীবনের বিকাশ ঘটে। তারা নিজ নিজ পরিবেশ থেকেই বাঁচার উপকরণ সংগ্রহ করে। সেসব উপকরণ থেকে প্রয়োজনীয় অংশ ব্যবহারের পর পরিত্যক্ত অংশ ফিরে যায় সে পরিবেশ। সেখান থেকে তা আবার গ্রহণ করে। এভাবে জীবজগৎ ও তার পরিবেশের মধ্যে বেঁচে থাকার উপকরনের আদান-প্রদান চলে। আদান-প্রদানের ভারসাম্যের ওপর জীবের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। এ ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে তাকে বলা হয় পরিবেশ-দূষণ।

পরিবেশ-দূষণ ও তার প্রতিকার [ Environmental- pollution and remedies ]

পরিবেশ দূষণ কি?

পরিবেশ দূষণ হল মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে পরিবেশের উপাদান অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন। আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ, মাটি দূষণ, খাদ্য দূষণ, আর্সেনিক দূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ, গ্রিন হাউস ইফেক্ট ইত্যাদি সবকিছুই পরিবেশ-দূষণের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুত মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণই পরিবেশ-দূষণের অন্যতম কারণ।

পরিবেশ-দূষণ ও তার প্রতিকার [ Environmental- pollution and remedies ]

পরিবেশ দূষণের শুরু:

মানব সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে পরিবেশ দূষণের শুরু। মানুষ শিখল আগুন জ্বালাতে, বন কেটে করল বসত। সে সাথে, সভ্যতার বিচিত্র বিকাশের প্রতিক্রিয়ায় পরিবেশ হতে থাকল দুষিত।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে শুরু হল নতুন নতুন যুগের সভ্যতা। শুরু হল নগরজীবনের গড়ে ওঠল অসংখ্য শিল্প কারখানা। যানবাহনের প্রাচুর্য দেখা দিল পথে পথে, সবুজ বিপ্লব ঘটাতে এল কীটনাশক। আণবিক ও পারমাণবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে গেল আকাশে-বাতাসে, ফলে পরিবেশ-দূষণ দেখা গেল ব্যাপকভাবে।

পরিবেশ-দূষণ ও তার প্রতিকার [ Environmental- pollution and remedies ]

পরিবেশ দূষণের প্রতিক্রিয়া:

মানুষ যেসব জিনিস ব্যবহার করে তার পরিত্যক্ত বিষাক্ত পদার্থই দূষণের সৃষ্টি করে। বাতাস, পানি ও শব্দ-এ তিন শ্রেণীতে ধণকে ভাগ করা যায়। বাতাসে জীবের অস্তিত্বের ক্ষতিকর পদার্থের মাত্রা বেশি হলে তাকে বলে বায়ু দূষণ ধোঁয়া, ধূলিবাজি, কীটনাশক, তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রভৃতি বায়ু দূষণের প্রধান কারণ। তেলের দহনজাত ধোঁয়া থেকে সালফার ডাই অক্সাইড, যানবাহনের ধোঁয়া থেকে বেঞ্জোপাইরিন নির্গত হয়। এগুলো হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগের কারণ। ধুলো ঘরবাড়ি নষ্ট করে, ধুলো রোগবাহক; কীটনাশক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। আণবিক ও পারমাণবিক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যানসার রোগের কারণ। তা থেকে অঙ্গবিকৃতও হতে পারে।

পানি দূষণ ঘটে খাল-বিলে, নদী-সাগরে। পয়ঃনিষ্কাশনে পানি দূষণ ঘটায়। কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ নদীর পানি দূষিত করে। কীটনাশক পানিতে মিশে, তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল ছড়িয়ে সাগরের পানি দূষিত করে। নাইট্রোজেন সারও পানি দূষণের কারণ। দূষিত পানি সংক্রামক রোগ ছড়ায়। মাছ ও ফসলের মধ্যে বিষ জমে। সেসব খেয়ে মানুষ ভোগে বিষক্রিয়ায়।

যানবাহনে বিকট শব্দ থেকে হয় শব্দ দূষণ। কলকারখানার শব্দ, গাড়ির হর্ন, মাইকের চিৎকার, বোমাবাজির আওয়াজ প্রভৃতি শব্দ দূষণ সৃষ্টি করে মানুষের স্নায়ুবিক বৈকলা, নিদ্রাহীনতা, শিরঃপীড়া, মানসিক রোগ ইত্যাদির কারণ হয়ে ওঠে। এভাবে মানুষের চারদিকে পরিবেশ দূষিত হয়ে জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে।

পরিবেশ-দূষণ ও তার প্রতিকার [ Environmental- pollution and remedies ]

প্রতিকার :

পরিবেশ দূষণে মানুষের স্বাস্থ্যহানি, রোগশোক, অর্থ ও সম্পদের অপচয় ইত্যাদি যেসব ক্ষতি সাধিত হয় তা থেকে মানুষকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার পথ বের করতে হবে। এর জন্য নানা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। বায়ু দূষণের বেলায় কীটনিধনের জৈব নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ, রাসায়নিক পদার্থের শোধন, ধোঁয়ার পরিশুদ্ধিকরণ, বসতি ও শিল্পাঞ্চলের মধ্যে দূরত্ব রাখা ইত্যাদি ব্যবস্থা গৃহীত হতে পারে। পানি দূষণ দূর করার জন্য রাসায়নিক পদার্থ ও ময়লার বিশোধন দরকার। শব্দ দূষণ দূর করতে হলে শব্দ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং সুনাগরিকভার বিকাশ ঘটাতে হবে।

পরিবেশ-দূষণ ও তার প্রতিকার [ Environmental- pollution and remedies ]

উপসংহার:

পরিবেশ দূষণ জাতির জন্য এক মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এ ব্যাপারে সারা বিশ্বে মানুষের সচেতনতার মানসিকতা একান্ত অপরিহার্য। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে এ সমস্যা আরো প্রকট। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে এর মোকাবেলা অভ্যাবশ্যক।

আরও পড়ুন:

Exit mobile version