দ্রুতবিচার আদালত | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার

দ্রুতবিচার আদালত | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার ,  ভূমিকা : সন্ত্রাস দমনে দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ৯ এপ্রিল ২০০২ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ৭ এপ্রিল বিলটি সংসদে উত্থাপিত হবার পর একদিন বিরতি দিয়ে বিলটি পাস করা হয়। রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা বা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, যানবাহন চলাচরে বাধাদান বা ভাঙচুর, সম্পদের ক্ষতিসাধন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করার জন্য বিধান প্রণয়ন করতে এ আইন পাস করা হয়। এ আইনটি সম্পর্কে প্রথমে এ জাতীয় আইনের পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে এর সমালোচনা করলেও বর্তমানে এ আইন এবং তার অধীনে গঠিত দ্রুতবিচার আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের মনোভাব ইতিবাচক।

দ্রুতবিচার আদালত | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার

দ্রুতবিচার আদালত

বিশেষত দ্রুতবিচার আদালত কর্তৃক দেয়া সাম্প্রতিক কতিপয় চাঞ্চল্যকর মামলার রায় দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া দেশের বিচার ব্যবস্থাকে গতিশীল করার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

দ্রুতবিচার আদালত | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার

 

আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধসমূহ : দ্রুত বিচার আইনে যেসব অপরাধকে বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে কোনো প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বা বেআইনি বলপ্রয়োগ করে কোনো ব্যক্তি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা, সাহায্য বা অন্য কোনো নামে অর্থ বা মালামাল দাবি, আদায় বা অর্জন করা বা অন্য কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা আদায় করা বা আদায়ের চেষ্টা করা; স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ বা আকাশপথে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করা বা কোনো যানচালকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যানের গতি ভিন্ন পথে পরিবর্তন করা; ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো যানবাহনের ক্ষতিসাধন করা; ইচ্ছাকৃতভাবে সরকার বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো ব্যক্তির স্থাবর বা অস্থাবর যে কোনো প্রকার সম্পত্তি বিনষ্ট বা ভাঙচুর করা; কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ, অলঙ্কার,

মূল্যবান জিনিসপত্র বা অন্য কোনো বস্তু বা যানবাহন ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বা ছিনতাই করা বা জোর করে কেড়ে নেয়া; কোনো স্থানে, বাড়িঘরে, দোকানপাটে, হাটে-বাজারে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে বা প্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে বা আকস্মিকভাবে বা একক বা দলবদ্ধভাবে শক্তির মহড়া বা দাপট প্রদর্শন করে ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করা বা বিশৃঙ্খলা বা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা;

কোনো সংবিধিবদ্ধ সাঙ্গা বা প্রতিষ্ঠানের দরপত্র জন্ম, বিজনা, গ্রহণ বা দাখিলে জোরপূর্বক বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বা কাউকে দরপত্র গ্রহণ করতে বা না করতে বাধ্য করা; কোনো সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বা তার কোনো নিকটাত্মীয়কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোনো কাজ করতে বা না করতে বাধ্য করা কিংবা তার দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকারের বাধা সৃষ্টি করা।

অপরাধের শাস্তি : কোনো ব্যক্তি উল্লিখিত কোনো অপরাধ করলে তিনি কমপক্ষে ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডও করা হবে। এ আইনে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনকালে সরকার কিংবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোনো ব্যক্তির আর্থিক ক্ষতিসাধন করলে এ জন্য আদালত ক্ষতিগ্রস্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উপযুক্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য দত্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আদেশ দিতে পারবে। এই ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারি দাবি হিসেবে আদায়যোগ্য হবে। কোনো ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা করলে তিনিও অনুরূপ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

একই বিধান কার্যকর হবে মিথ্যা মামলা, অভিযোগ দায়ের ইত্যাদির শাস্তির ক্ষেত্রে। অর্থাৎ যদি কেউ অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটনের কোনো ন্যায্য বা আইনগত কারণ নেই জেনেও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান তাহলে মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি কমপক্ষে ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া তিনি আর্থিক দণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

 

দ্রুতবিচার আদালত | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার

 

এ আইনের অধীনে গঠিত আদালত উপযুক্ত বিবেচনা করলে কোনো অপরাধ সংঘটনের জন্য ব্যবহৃত কোনো যন্ত্রপাতি, অস্ত্র বা যানবাহন এবং উক্ত অপরাধের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ, মালামাল বা সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তির বা তার বৈধ মালিক বা দখলদারের কাছে ফেরত দেয়ার আদেশ দিতে পারবে। 

বিচার পদ্ধতি : আদালত এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে সম্পন্ন করবে। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশ হাতেনাতে ধরে ফেললে বা অন্য কোনো ব্যক্তি ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলে, পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত প্রাথমিক রিপোর্টসহ তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করবে এবং পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধ সম্পর্কে আদালতে রিপোর্ট বা অভিযোগ পেশ করবে। আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করে রিপোর্ট বা অভিযোগপ্রাপ্তির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করবে।

 আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতেনাতে ধরা না পড়লে, অপরাধ সংঘটনের পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যেই রিপোর্ট বা অভিযোগ দাখিল করতে হবে। সেক্ষেত্রে সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে নন এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা এ জন্য সরকারের কাছ থেকে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তি লিখিত রিপোর্ট বা অভিযোগ প্রদান করবে। তাছাড়া অপরাধ সংঘটনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে অবহিত আছেন এমন কোনো ব্যক্তিও আদালতে লিখিত অভিযোগ পেশ করতে পারবেন।

কোনো অপরাধ সম্পর্কে এসব রিপোর্ট বা অভিযোগ আদালত বিচারকাজে গ্রহণ করতে পারবেন। আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। যদি আদালতের এ মর্মে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার গ্রেপ্তার বা তাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়ানোর জন্য পলাতক রয়েছেন বা আত্মগোপন করেছেন এবং গ্রেপ্তারি পারোয়ানা জারির সাত দিনের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তারের কোনো সম্ভাবনা নেই তাহলে আদালত অন্তত একটি বাংলা দৈনিক খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা সাত দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে। উক্ত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে হাজির হতে ব্যর্থ হলে আদালত তার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ সম্পন্ন করবে। তবে তাও হবে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কোনো অপরাধের রিপোর্ট বা অভিযোগ দায়েরের ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে।

আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধসমূহ আমলযোগ্য হবে। কোনো অপরাধের অভিযোগ দায়ের বা প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ, তদন্ত, বিচার-পূর্ববর্তী কার্যক্রম, বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে। এ আইনের অধীনে গঠিত আদালত প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হিসেবে গণ্য হবে এবং এ আদালতের আপিল আদালত হবে এখতিয়ারসম্পন্ন দায়রা আদালত।

জামিন সংক্রান্ত বিধান : ফৌজদারি কার্যবিধিতে ভিন্ন যা কিছু থাকুক না কেন, রাষ্ট্রকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে আদালত কিংবা আপিল আদালত যদি সন্তুষ্ট হয় যে, এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত কিংবা ক্ষেত্রমতো দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিন দেয়া ন্যায়সঙ্গত হবে তাহলে সে সম্পর্কিত কারণ লিপিবদ্ধ করে আদালত কিংবা ক্ষেত্রমতো আপিল আদালত উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারবে। 

বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ওপর প্রভাব : বিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও দার্শনিক রুশো বলেছেন, ‘Justice- delay is justice denied’—বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় তাই ঘটছে। এমতাবস্থায় বর্তমান সরকারের চালু করা দ্রুতবিচার আদালতের কার্যক্রম ইতিমধ্যেই দেশের বিচারব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। যেমন—

প্রথমত, দ্রুতবিচার আদালত চালু হওয়ার ফলে দেশের আদালতগুলোতে দীর্ঘদিনের জমে থাকা মামলার জট খুলে বিচারব্যবস্থাকে সচল করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সচলতা এসেছে। বিশেষ করে প্রচলিত বিচারালয়গুলোকে দ্রুতবিচার আদালত দৈনন্দিন বিচারকার্যে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে । মামলার যে পাহাড় জমা আছে তার মাঝে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারও দীর্ঘদিন পড়ে থাকত, যা বর্তমান দ্রুতবিচার আদালতের মাধ্যমে করা সম্ভব হচ্ছে ।

দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক কারণে দ্রুতবিচার আদালতের সমালোচনা করা হলেও প্রকৃতার্থে এ ব্যবস্থা আইনের আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রে জনগণের ভোগান্তিকে অনেকাংশে হ্রাস করে দিয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক ভোগান্তি ও কালক্ষেপণের বিরক্তি প্রবণতা জনগণকে যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি কতটা বীতশ্রদ্ধ ও বিমুখ করেছিল তা ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ না করলে বোঝা যাবে না। এক্ষেত্রে দ্রুতবিচার আদালতের কার্যক্রম কিছুটা হলেও ইতিবাচক ফল দিতে পেরেছে।

তৃতীয়ত, দেশের স্পর্শকাতর মামলাগুলোর দ্রুততম সময়ে রায় প্রদান করে দ্রুতবিচার আদালত ইতিমধ্যেই জনগণের বাহবা কুড়াতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে গত সরকার ও বর্তমান সরকারের আমলে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা এক্ষেত্রে সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য। এ সকল মামলার রায় যথাসময়ে প্রদান দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রেও অনেক সহায়ক হচ্ছে। 

চতুর্থত, দ্রুতবিচার আদালতের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশিট প্রদান ও বিচারকার্য সম্পাদনের ব্যবস্থা থাকায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে দেশে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের যে আন্তরিকতা রয়েছে তা এ ব্যবস্থার মাধ্যমেই জনগণের নিকট প্রমাণিত হচ্ছে। তাতে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাও অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক বিকাশের জন্য খুবই জরুরি। 

পঞ্চমত, দ্রুতবিচার আদালতের সফল পথচলা দেশে অপরাধ দমনেও বেশ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা আগে যেখানে কোনো খুনী কিংবা এসিড নিক্ষেপকারীকে পুলিশ ধরেও তদন্ত, চার্জশিট প্রদান ইত্যাদির নামে দীর্ঘদিন ঘুরিয়ে এক সময় বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করত। কিন্তু দ্রুতবিচার আদালতের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর বিচারকার্য দ্রুতসম্পন্ন হওয়ায় অপরাধীরা অপরাধ করে পার পাওয়ার ব্যাপারে অনেকটাই সন্দিহান হয়ে পড়েছে। কেননা এ ব্যবস্থার কঠোরতা ও দ্রুততা উভয়ই সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের মাঝে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে।

 ষষ্ঠত, এ ব্যবস্থা প্রমাণ করতে পেরেছে যে, সদিচ্ছা থাকলে অতি দ্রুত সময়ে স্বচ্ছতার সাথে বিচারকার্য সম্পাদন করা সম্ভব। ইতিপূর্বে বিচারকার্য অসম্ভব করার পেছনে যেসব অজুহাত দাঁড় করানো হতো তা এখন আর ধোপে টেকার কথা নয়। বরং এ ব্যবস্থা প্রমাণ করে দিয়েছে সরকার তথা বিচার বিভাগ ইচ্ছা করলে অবশ্যই জনগণের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

উপসংহার : দ্রুতবিচার আদালতের কার্যক্রম দেশের বিচার ব্যবস্থায় নানাভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে তা আজ সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে সত্য। তথাপি এ ব্যবস্থায় বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন না করলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিপরীতে তা বিঘ্নিতও হতে পারে। কেননা বিচারকে দ্রুততর করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং বিচারককে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তাছাড়া এ আইনের যে কোনো রকম রাজনৈতিক প্রয়োগ অবশ্যই এ ব্যাপারে বতর্মান জনগণের উচ্ছ্বাস ও আশাবাদকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। সর্বোপরি দ্রুতবিচার আদালতের বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলার দ্রুততর রায় জনগণের মাঝে ন্যায়বিচার সম্পর্কে যে আশার আলো জাগিয়েছে এ সকল রায়কে দ্রুত কার্যকর না করলে অবশ্যই সকল আয়োজন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা বৃথা প্রতিপন্ন হবে।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment