দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন | সামাজিক সমস্যা ও বিষয়াবলী | বাংলা রচনা সম্ভার

দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন | সামাজিক সমস্যা ও বিষয়াবলী | বাংলা রচনা সম্ভার , ভূমিকা : বাংলাদেশ কিংবা উন্নয়নশীল দেশসমূহ কেবল নয়, বরং বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি আজ উন্নয়নের পথে একটি প্রধান বাধা। দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক অনুন্নয়নের সাথে সাথে বাড়ছে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারছে না, দেখা দিচ্ছে সুশাসনের অভাব।

দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন | সামাজিক সমস্যা ও বিষয়াবলী | বাংলা রচনা সম্ভার

দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন

সাম্প্রতিককালে দাতা দেশ ও সংস্থাসমূহ বৈদেশিক সাহায্য ও ঋণদানের জন্য যেসব শর্ত আরোপ করেছে তার মধ্যে সুশাসন অন্যতম। বলার অপেক্ষা রাখে না, দুর্নীতি রোধ ছাড়া সুশাসনের পথ প্রশস্ত করার কোনো উপায় নেই। ১৩ মার্চ ২০০২ প্যারিসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ দাতাগোষ্ঠীর বৈঠকে ‘সুশাসনের অভাব আর ব্যাপক বিস্তৃত দুর্নীতিকে বাংলাদেশের জাতীয় অনুন্নয়নের প্রধান ইস্যু হিসেবে তুলে ধরা হয়।

দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন | সামাজিক সমস্যা ও বিষয়াবলী | বাংলা রচনা সম্ভার

 

দুর্নীতি: সাম্প্রতিককালে দুর্নীতি একটি বহুল আলোচিত শব্দ। ব্যাপক আলোচনা ও বাস্তবতায় এর মূল অর্থ দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত স্বার্থলাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার।

Social Work Dictionary-তে দুর্নীতির সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে, ‘রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনে সাধারণত ঘুষ, বলপ্রয়োগ, ভয় প্রদর্শন, প্রভাব বিস্তার এবং ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার দ্বারা ব্যক্তিগত সুবিধা অর্জনই দুর্নীতি।’

ওপরের সংজ্ঞানুযায়ী নিম্নোক্ত কার্যাবলীকে দুর্নীতি বলা যায়:

১. ক্ষমতার অপব্যবহার, ২. ঘুষ, ৩. আত্মসাৎ, ৪. ভীতি প্রদর্শন করে আদায়, ৫. প্রতারণা, ৬. প্রভাব বিস্তার, ৭. স্বজনপ্রীতি, ৮. সম্পদের অপব্যবহার, ৯. সরকারি ক্রয়, ১০. দায়িত্ব পালনে অবহেলা ।

দুর্নীতির কারণ : বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি দেশে দুর্নীতি একটি জটিল সামাজিক সমস্যা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। দুর্নীতি আজ আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কান্তি প্রকিউরমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট’ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সরকারি অফিসে ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না। ঘুষ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেন এটা বেতনের অংশ হয়ে গেছে (দৈনিক যুগান্তর, ০৯ জানুয়ারি ২০০১)।

দুর্নীতির ব্যাপারে এখন আর কারো রাখঢাক নেই। দুর্নীতি না থাকলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন, টেন্ডার গৃহীত হয় না, ফাইল নড়ে না, প্রকল্প বাস্তবায়ন বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে, দুর্নীতিই যেন বাংলাদেশের প্রশাসনযন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি। আর এ সম্প্রসারিত দুর্নীতি সংঘটনের বহুবিধ কারণও রয়েছে।

কখনো দারিদ্র্যের কারণে, কখনো লোভের বশবর্তী হয়ে, আবার কখনো দুর্নীতি করার সুযোগ আছে কিন্তু শাস্তির সম্ভাবনা নেই এরূপ পরিস্থিতির কারণে দুর্নীতি সংঘটিত হয়ে থাকে। সুশাসনের অভাব দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে। শাসনব্যবস্থা উন্নত না হলে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক দুর্নীতি বৃদ্ধি পায় । তাছাড়া আইনের অনুশাসনের অনুপস্থিতি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের অসততা ও দুর্বলতা দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ।

জাতীয় উন্নয়ন: সাধারণভাবে জাতীয় উন্নয়ন বলতে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বোঝায়। প্রখ্যাত উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ইয়াং (Young, 1989)-এর মতে, উন্নয়ন হলো কোনো ব্যক্তি বা সমাজের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির একটি জটিল প্রক্রিয়া। অগ্রগতি এই অর্থে যে, এর ফলে ব্যক্তি ও সমাজের জৈবিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা পূরণ হয় এবং সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ ঘটে ।

অর্থনীতিবিদ মেয়ার জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিকে পরিমাপক হিসেবে ধরে উন্নয়নের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন এভাবে, ‘… Economic development is the process whereby the real per capita income of a country increases over a long period of time.

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন দীর্ঘ দেড় দশক ‘উন্নয়ন তত্ত্ব’ চর্চা করার পর উপলব্ধি করছেন যে, শুধু মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি কোনো দেশের উন্নয়নের মাপকাঠি হতে পারে না। কেননা মাথাপিছু আয় বাড়লেও সেই বাড়তি আয়ে জনসাধারণের একটি বড় অংশের কোনো অধিকার না-ও থাকতে পারে । তার মতে, কেবল উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধিনির্ভর অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্থহীন উন্নয়নে পর্যবসিত হতে বাধ্য, যদি সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষ তার সুফল না পায় ।

সুতরাং জাতীয় উন্নয়ন হলো একটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানের উন্নয়নসহ আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোর ইতিবাচক উন্নয়ন ।

দুর্নীতি ও জাতীয় উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা : বাংলাদেশে যে দুর্নীতি ব্যাপকভাবে বিদ্যমান সে কথা আজ সর্বজনস্বীকৃত। দেশের সামগ্রিক অবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত করলে অনুধাবন করা যায় দুর্নীতি কতটা সর্বগ্রাসী রূপ লাভ করেছে। সাবেক সরকারপ্রধান জাতীয় সংসদে দুর্নীতিকে ‘কালব্যাধি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, “ঘুষ না দিলে প্রধানমন্ত্রীর চাকরির সুপারিশেও কাজ হয় না।’ সরকারি প্রশাসনযন্ত্রের প্রতিটি স্তরেই দুর্নীতি দৃশ্যমান। একেবারে নিম্নস্তর থেকে শুরু করে উচ্চস্তর পর্যন্ত সর্বত্রই চলেছে দুর্নীতি। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুলিশ বিভাগে দুর্নীতি চলেছে অসহনীয় মাত্রায়। বিচার বিভাগও দুর্নীতিমুক্ত নয়। নিচে বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রধান কয়েকটি খাত সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:

১. আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় দুর্নীতি : বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান উপকরণ পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সম্পর্কে জনগণের ধারণা অত্যন্ত নেতিবাচক। ডেমোক্রেসি ওয়াচ-এর ২০০০ সালের এক জরিপ থেকে জানা যায়, দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ মনে করে পুলিশ দুর্নীতিপরায়ণ । লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক রিপোর্টেও পুলিশের দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা রকম দুর্নীতির চিত্র বিবৃত হয়েছে।

সংবাদপত্রসমূহে পুলিশের দুর্নীতির ব্যাপক চিত্র প্রায়শ প্রকাশিত হয়। দুর্নীতিপরায়ণ পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজস্ব ব্যক্তিস্বার্থকেই বড় করে দেখে। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার এক জরিপ থেকে দেখা যায়, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ডিআইজি পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আয় তাদের নিজ বেতনের এক হাজার গুণ বেশি (সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব, ১৮ এপ্রিল ২০০২)।

২. শিক্ষা খাতে দুর্নীতি : শিক্ষা খাত বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম বৃহৎ খাত। মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জাতীয় উন্নয়নে শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী তিন দশকেও বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সর্বজনীন, গণমুখী এবং জাতির মেরুদণ্ড গঠনে সহায়ক হতে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও প্রসার নিয়ে কাগজে-কলমে বিস্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, ব্যয় করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা যে তিমিরে ছিল, সে তিমিরেই রয়ে গেছে।

অরাজকতা, অনিয়ম এবং সর্বব্যাপী দুর্নীতি শিক্ষা নামক জাতির মেরুদণ্ডকে সুদৃঢ় করতে পারেনি । এই খাতে দুর্নীতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মার্কশিট জালিয়াতি, ‘ডোনেশন’-এর নামে ঘুষ আদায় এবং ছাত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় ইত্যাদি। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা না থাকায় শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বহুবিধ দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় জাতীয় উন্নয়নের বিষয়টি প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়াটাই স্বাভাবিক।

৩. স্থানীয় সরকার খাতে দুর্নীতি : স্থানীয় সরকার খাতও সরকারের অন্যতম বৃহৎ খাত । স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকার স্থানীয় সরকার খাতকে শক্তিশালী করার জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে স্থানীয় সরকার খাতকে চার স্তরে বিভক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাপক দুর্নীতির কারণে এই খাত কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না। এই খাতের উপখাতের আওতাধীন অফিসগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, জবাবদিহিতা ও তদারকির অভাব এবং ক্যাডার সার্ভিস দ্বন্দ্বের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার অপচয় এবং দুর্নীতি হচ্ছে, জনগণ কোনো কার্যকর সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না।

জবাবদিহিতা এবং তদারকি না থাকায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। এ ক্ষেত্রে এলজিইডি, জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং ওয়াসার অবস্থান সর্বশীর্ষে। অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা সরকারি সহায়তার ভিজিডি, ভিজিএফ, টিআর ইত্যাদি গ্রামীণ কর্মসূচির আওতায় দেয়া বরাদ্দের অধিকাংশই আত্মসাৎ করে থাকেন। এমতাবস্থায় জাতীয় উন্নয়ন হবে কিভাবে?

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

৪. স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি : বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার চিত্র অত্যন্ত নাজুক। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে উন্নয়ন বাজেটের হিসাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হয়েছে। কিন্তু দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি সমগ্র স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্যসেবাকে বিঘ্নিত করছে। বর্তমানে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস এবং পরিবার কল্যাণসহ সার্বিক স্বাস্থ্য খাত দৃশ্যত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত (ইত্তেফাক, ০৫ ডিসেম্বর ২০০০)। দেশের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, যেগুলো তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার দায়িত্বে নিয়োজিত, সেগুলো দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

নির্ধারিত সময়ে রোগীদের সেবা না করে নিজস্ব ক্লিনিক পরিচালনা করা, কমপ্লেক্সে অনুপস্থিত থাকা, হাসপাতালে বসে ফি নিয়ে চিকিৎসা করা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসমূহে রোগী ভর্তি, রোগীদের জিম্মি করে কমিশন আদায়, প্যাথলোজিক্যাল টেস্টের জন্য অর্থ আদায় থেকে শুরু করে প্রতিটি পদেই দুর্নীতি হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে এই খাতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা এবং দায়িত্বে অবহেলার ঘটনাও বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এমতাবস্থায় জাতি কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না ও জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।

৫. বন ও পরিবেশ খাতে দুর্নীতি : বাংলাদেশে বন ও পরিবেশ খাতে দুর্নীতি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। বন বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র সমগ্র দেশের বনভূমির গাছ কেটে উজাড় করে দিচ্ছে। সুন্দরবন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশের বনাঞ্চলে গাছ কাটার এবং কাঠ পাচারের ‘মহোৎসব’ চলছে। অনেকটা খোলামেলাভাবেই এই অবৈধ কাজটি করা হচ্ছে। কখনো কখনো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বন বিভাগের হাজার হাজার একর জমি অবৈধভাবে ইজারা দিচ্ছে।

বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে প্রতি বছর ৩৭ হাজার একর বনভূমি বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে (দৈনিক ইত্তেফাক, ২৩ মে ২০০১)। বন বিভাগের দুর্নীতি বলতে বন অধিদপ্তরের দুর্নীতিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। তাছাড়া এ অধিদপ্তরে ঘুম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সম্পদের অপব্যবহারের ঘটনাও বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

এভাবে বাংলাদেশের প্রতিটি খাতেই কমবেশি দুর্নীতি হচ্ছে। ফলে জাতীয় উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জাতীয় উন্নয়নে দুর্নীতির নেতিবাচক প্রভাব: সাধারণত দুর্নীতির কারণে একটি দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাতীয় উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এই

দুর্নীতির কারণে—

-অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়;

-জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন ব্যাহত হয়;

-দারিদ্র্য বিমোচন সফল হয় না;

-সম্পদের প্রাপ্যতা হ্রাস পায়;

-মানবসম্পদ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় এবং

-গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয় ।

দুর্নীতির কারণে জাতীয় উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার অর্থাৎ রাষ্ট্র তথ্য জনগণ। এছাড়া আলাদাভাবে সমাজের সকল শ্রেণীর লোক কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি করে থাকেন, ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকার। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট ২০০০-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতি কমানো গেলে জনগণের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে।

দুর্নীতি দমনে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা: বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তার মধ্যে দুর্নীতি দমন ব্যুরো অন্যতম, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এ বুরো ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি কমিয়ে আনতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে।

গণতান্ত্রিক শাসনামলের ১২ বছরেও প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। ব্যুরোতে বর্তমানে অনিষ্পন্ন মামলার সংখা প্রায় ৪০ হাজার। সচিব পর্যায়ের আমলা ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃ দুর্নীতি মামলার অধিকাংশই অচল ও স্থবির অবস্থায় পড়ে আছে। ব্যুরোতে দীর্ঘসূত্রতা এত ব্যাপক যে, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে চলে যান কিন্তু মামলার তদন্ত শেষ হয় না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জর্জরিত এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার স্বাধীন নিয়ন্ত্রণশক্তি নেই।

জবাবদিহিতা বাড়ানোর ব্যাপারে মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অফিসের একটি ভূমিকা রয়েছে। সরকারের সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অডিটের মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়ম উদ্ঘাটন করে থাকে। কিন্তু এর ভূমিকাও যথেষ্ট নয় ।

অন্যদিকে জাতীয় সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অডিট রিপোর্টসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ করার নিয়ম থাকলেও দুর্নীতি দমনে এটি কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না ।

দুর্নীতি দমনে সুপারিশ: বাংলাদেশের দুর্নীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা একেবারেই অপ্রতুল। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা গত ক বছর ধরে সরকারকে দুর্নীতি হ্রাস করার উপায় হিসেবে অনেক পরামর্শ দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশও তাদের প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট এবং সেমিনারে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। সরকারের নীতি- নির্ধারকরাও বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। নিচে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনে সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

১. স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন: কার্যকরভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য পুরোপুরি স্বাধীন এবং পর্যাপ্ত ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে, যাতে এই কমিশন যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি ছাড়াই দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

২. প্রশাসনিক সংস্কার: জনপ্রশাসনে সংস্কার দুর্নীতি কমাতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজের সতত পরিবর্তনশীল চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুর্নীতিমুক্ত সমাজের জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সৃষ্টি : স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দুর্নীতি হ্রাস এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্বশর্ত। সরকারের প্রতিটি কাজে যদি স্বচ্ছতা থাকে এবং জনগণ যদি সরকারের সিদ্ধান্ত এবং কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পায় তাহলে দুর্নীতির সুযোগ অনেক কমে আসবে। একই সাথে সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি নিজেদের কাজের জন্য জবাবদিহি থাকেন তাহলেও দুর্নীতি থেকে উত্তরণ অনেকাংশে সম্ভব। এজন্য ১৯২৩ সালের ‘Official Secrets Act’ বাতিল করতে হবে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি করে থাকেন, ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকার। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট ২০০০-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতি কমানো গেলে জনগণের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে।

দুর্নীতি দমনে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকা: বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তার মধ্যে দুর্নীতি দমন ব্যুরো অন্যতম, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এ বুরো ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি কমিয়ে আনতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে।

গণতান্ত্রিক শাসনামলের ১২ বছরেও প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতি দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। ব্যুরোতে বর্তমানে অনিষ্পন্ন মামলার সংখা প্রায় ৪০ হাজার। সচিব পর্যায়ের আমলা ও শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃ দুর্নীতি মামলার অধিকাংশই অচল ও স্থবির অবস্থায় পড়ে আছে। ব্যুরোতে দীর্ঘসূত্রতা এত ব্যাপক যে, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে চলে যান কিন্তু মামলার তদন্ত শেষ হয় না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জর্জরিত এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার স্বাধীন নিয়ন্ত্রণশক্তি নেই।

জবাবদিহিতা বাড়ানোর ব্যাপারে মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অফিসের একটি ভূমিকা রয়েছে। সরকারের সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অডিটের মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়ম উদ্ঘাটন করে থাকে। কিন্তু এর ভূমিকাও যথেষ্ট নয় ।

অন্যদিকে জাতীয় সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অডিট রিপোর্টসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ করার নিয়ম থাকলেও দুর্নীতি দমনে এটি কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না ।

দুর্নীতি দমনে সুপারিশ: বাংলাদেশের দুর্নীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা একেবারেই অপ্রতুল। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা গত ক বছর ধরে সরকারকে দুর্নীতি হ্রাস করার উপায় হিসেবে অনেক পরামর্শ দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশও তাদের প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট এবং সেমিনারে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে। সরকারের নীতি- নির্ধারকরাও বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। নিচে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনে সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

১. স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন: কার্যকরভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য পুরোপুরি স্বাধীন এবং পর্যাপ্ত ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে, যাতে এই কমিশন যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি ছাড়াই দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

২. প্রশাসনিক সংস্কার: জনপ্রশাসনে সংস্কার দুর্নীতি কমাতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজের সতত পরিবর্তনশীল চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুর্নীতিমুক্ত সমাজের জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সৃষ্টি : স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দুর্নীতি হ্রাস এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্বশর্ত। সরকারের প্রতিটি কাজে যদি স্বচ্ছতা থাকে এবং জনগণ যদি সরকারের সিদ্ধান্ত এবং কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পায় তাহলে দুর্নীতির সুযোগ অনেক কমে আসবে। একই সাথে সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি নিজেদের কাজের জন্য জবাবদিহি থাকেন তাহলেও দুর্নীতি থেকে উত্তরণ অনেকাংশে সম্ভব। এজন্য ১৯২৩ সালের ‘Official Secrets Act’ বাতিল করতে হবে।

৪. ন্যায়পাল নিয়োগ: সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিয়ে ন্যায়পাল পদ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য ন্যায়পালের পদ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

৫. আলাদা বিচারালয়: তদন্ত থেকে শুরু করে রায় ঘোষণা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলায় বছরের পর বছর সময় লেগে যায়। মামলার এ দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম প্রধান কারণ আদালতের স্বল্পতা বা পর্যাপ্ত বিচারকের অভাব। তাই দুর্নীতি মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রুত পরিচালনার জন্য আলাদা বিচারালয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ দুর্নীতির মামলা দ্রুত সুরাহা না হওয়া দুর্নীতি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ।

৬. শাস্তি: দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের দেশে শাস্তির ব্যবস্থা অপ্রতুল। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির জন্য বিভাগীয় শাস্তি হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাময়িক বরখাস্ত বা বদলির আদেশ দেয়া হয়। সাময়িক বরখাস্তপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেন-দরবার করে পুনরায় চাকরিতে বহাল হন। আর শাস্তি হিসেবে বদলি’ কতটুকু কার্যকর—তাও বিবেচনা করে দেখার দাবি রাখে।

৭. সুশীল সমাজের ভূমিকা: দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে সে দল ও সুশীল সমাজের । সুশীল সমাজ এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ।

৮. গণমাধ্যমের ভূমিকা: সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের Working Paper the Media’s Role in Curbing Corruption-423, The role of the media is critical in promoting good governance and controlling corruption. It is not only raises public awareness about corruption, its causes, consequences and possir le remedies but also investigates and reports incidences of corruption (WB, 2001) । দুর্নীতি দমনে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সত্যিকার অর্থে দুর্নীতি দমন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমসমূহ কার্যকর অস্ত্র হিসেবে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

দুর্নীতি বনাম জাতীয় উন্নয়ন | সামাজিক সমস্যা ও বিষয়াবলী | বাংলা রচনা সম্ভার

 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, দুর্নীতি যে কোনো দেশের জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম প্রধান অন্তরায়। তাই দুর্নীতি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সর্বত্র সততার আবহ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পরিমণ্ডল। প্রতিটি ব্যক্তি যদি তার কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছ থেকে সততার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব পালন করেন এবং প্রতিটি ব্যক্তিকে যদি জনগণ ও তার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করানো যায়, তাহলে দুর্নীতি থেকে দেশবাসী রক্ষা পেতে পারে। এর ফলে দেশে যেমন সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগ” হতে পারে, তেমনি জাতীয় উন্নয়নও হতে পারে ত্বরান্বিত।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment