তালগাছ কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘তালগাছ’ কবিতাটি বাংলা শিশুসাহিত্যের একটি জনপ্রিয় ও চিরকালীন কবিতা। এটি তার সহজপাঠ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কবি শিশুর চোখ দিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশকে সহজ ও মমতাময় ভাষায় তুলে ধরেছেন। ‘তালগাছ’ কবিতায় একটি উঁচু তালগাছের একাকী দণ্ডায়মান অবস্থান, তার মাথা তুলে আকাশ স্পর্শ করার আকাঙ্ক্ষা ও গাম্ভীর্যকে বর্ণনা করা হয়েছে। শিশুরা এই কবিতা পড়ে তালগাছের সৌন্দর্য ও প্রকৃতির বিশালতাকে উপলব্ধি করতে শেখে। কবিতার ছন্দ, শব্দচয়ন ও রূপকল্প অত্যন্ত সরল ও মধুর, যা শিশুদের মনে আনন্দ জাগায় এবং তাদের কল্পনাশক্তিকে উদ্দীপ্ত করে।

 

বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের

 

তালগাছ কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
উঁকি মারে আকাশে।
মনে সাধ, কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়,
একেবারে উড়ে যায়;
কোথা পাবে পাখা সে?
তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে
গোল গোল পাতাতে
ইচ্ছাটি মেলে তার, –
মনে মনে ভাবে, বুঝি ডানা এই,
উড়ে যেতে মানা নেই
বাসাখানি ফেলে তার।
সারাদিন ঝরঝর থত্থর
কাঁপে পাতা-পত্তর,
ওড়ে যেন ভাবে ও,
মনে মনে আকাশেতে বেড়িয়ে
তারাদের এড়িয়ে
যেন কোথা যাবে ও।
তার পরে হাওয়া যেই নেমে যায়,
পাতা কাঁপা থেমে যায়,
ফেরে তার মনটি
যেই ভাবে, মা যে হয় মাটি তার
ভালো লাগে আরবার
পৃথিবীর কোণটি।

তালগাছ কবিতাটির মূলভাবঃ

তালগাছের মনের ইচ্ছা নিয়ে কবিমনের কল্পনার কথা বলা হয়েছে ‘তালগাছ’ কবিতায়। তালগাছকে দেখলে মনে হয় সে যেন এক পায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। কবি ভাবেন তালগাছ বুঝি আকাশে উড়াল দিতে চায়। কিন্তু তার তো আর পাখির মতো ডানা নেই। তাই নিজের পাতাগুলোকেই ডানা হিসেবে ভেবে নেয় সে। বাতাস বইলে ডানাগুলো মেলে সে যেন আকাশে উড়ে বেড়ায়। বাতাস থেমে গেলে তালগাছের মনের ইচ্ছার পরিবর্তন হয়। তখন পৃথিবীর পরিচিত কোণটিকেই তার ভালো লাগে।

তালগাছ কবিতা আবৃত্তিঃ

 

 

 

Leave a Comment