তমসার তীরে নগ্ন শরীরে কবিতাটি কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর লেখা একটি কবিতা।সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ – ২৩ অক্টোবর ২০১২) বিশ শতকের শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষার জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন।
তমসার তীরে নগ্ন শরীরে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
চিত্ত উতলা দশদিকে মেলা সহস্র চোখ
আমাকে এবার ফিরিয়ে নেবার জন্য এসেছে?
আর দুটো দিন করুণ রঙিন
পথ ঘুরে দেখা
হবে না আমার? পুরোনো জামার ছিঁড়েছে বোতাম?
তমসার তীরে নগ্ন শরীরে
দাঁড়ালাম আমি
পাশে নেই আর মায়া-সংসার আকাশে অশনি
নদীটি এখন বড় নির্জন
জলে শীত ছোঁওয়া
কে জানে কোথায় ন্যায়-অন্যায় সহসা লুকালো
এক অঞ্জলি জল তুলে বলি,
হে আঁধারবতী,
বহু ঘুরে-ঘুরে স্বপ্নে সুদূরে দেখা হয়েছিল
দুঃখ ক্ষুধায় এই বসুধায়
হয়েছি হন্যে
কখনো দাওনি সুধার চাহনি ফিরিয়েছো মুখ!
মনে আছে সব? শেষ উঃসব
আজ শুরু হবে
মেশাবো এ জলে মন্ত্রের ছলে অতি প্রতিশোধ
শরীর জানে না কে কার অচেনা
তাই ছুঁয়ে দেখা
এ অবগাহন শরীর-বাহন চির ভালোবাসা!
সুনীল সম্পর্কে আরও তথ্য:
সুনীল বাংলা ভাষায় এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। সুনীল আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তার কবিতার বহু পঙ্ক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল “নীললোহিত”, “সনাতন পাঠক”, “নীল উপাধ্যায়” ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।
সুনীলের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের মাদারীপুরে। মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ একা এবং কয়েকজন এবং ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: