ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা | ভাষণ | ভাষা ও শিক্ষা

ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা | ভাষণ | ভাষা ও শিক্ষা আজকের এই মহতী অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, মঞ্চে উপবিষ্ট সম্মানিত আলোচকবৃন্দ এবং উপস্থিত সুধীবৃন্দ, যান্ত্রিক সভ্যতা বিশ্বমানবকে দিয়েছে ভোগসুখের অঢেল প্রাচুর্য। ভোগ্যসম্পদে আর বিলাস-ব্যসনে গা ভাসিয়ে দিয়ে মানুষ হয়েছে সৌভাগ্যগর্বে গর্বিত। বন্ধুগণ, কোনো সভ্যতাই মানুষকে দেয় নি অবিমিশ্র সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, শান্তি ও সুস্থিরতা। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর যান্ত্রিক সভ্যতা তার ব্যতিক্রম নয়। সেও আমাদের জীবনে প্রসারিত করেছে বহুবিধ সংকটের কালোছায়া। তার মধ্যে ভয়াবহ পরিবেশদূষণ অন্যতম।

 

ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা

 

ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা 

 

এই পরিবেশদূষণের ফলেই আজকের দিনে আমাদের নোংরা পরিবেশে জন্ম নিয়েছে এক ভয়াবহ আতঙ্কময় জীবাণু বহনকারী ক্ষুদ্র পতঙ্গ এডিস মশা যার দংশনে মানুষ ডেঙ্গু-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে সুধী, ক্রমবর্ধমান এই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবের ভাবনায় সারা দেশের মানুষ আজ দুশ্চিন্তিত, প্রতিকারের চিন্তায় উদ্ভ্রান্ত, এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কত আলোচনা, কত বৈঠক, কত সমাবেশ। আনন্দের কথা, আমরা আজ সেরকম মহৎ প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে কীভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে এডিস মশার হাত থেকে তথা ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে পারি সেই পর্যালোচনায় ও প্রতিকারের উপায় উদ্ভাবনে এখানে সমবেত হয়েছি এবং বলতে দ্বিধা নেই, এমন একটি সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

 

ডেঙ্গুজ্বরের প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা 

 

বন্ধুগণ, আজ আমরা যে রোগটি সম্পর্কে এতটা চিন্তিত, তার জন্যে মূলত আমরাই দায়ী, কেননা ডেঙ্গু জ্বরের কোন প্রতিষেধক নেই, আছে প্রতিরোধের উপায়। আমাদের প্রথমেই জানতে হবে, ডেঙ্গু-জ্বর কেন হয়? আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, এডিস মশাই এই জীবাণুটি বহন করে এবং এই মশা যখন মানুষকে কামড়ায় তখন ডেঙ্গু-জীবাণু মানুষের, রক্তে প্রবেশ করে, ফলে আমরা ডেঙ্গু-জ্বরে আক্রান্ত হই। তাহলে আমাদের এই জ্বর থেকে মুক্তি পেতে হলে এডিস মশা থেকে রেহাই পেতে হবে।

আর এজন্যে আমাদের কতকগুলো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সুধী, প্রথমেই এডিস মশার বংশবিস্তার রোধকরে বাসা-বাড়ির আশেপাশে যেখানে এডিশ মশা সহজেই বংশ বিস্তার করতে পারে সেরকম স্থান, যেমন- ডোবা, নর্দমা, ড্রেইন, বাড়ির ছাদে অথবা অন্য কোথাও ডাবের খোলস, বাটি, ভাঙা কৌটা যেখানে সহজে পানি জমতে পারে এরকম পাত্র, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কেননা, এসব স্থানেই এডিস মশা বংশ বিস্তার করে থাকে। দ্বিতীয়ত, মশা নিধনের জন্যে ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। তৃতীয়ত, ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। এডিস মশা সাধারণত বিকেলের দিকে গৃহে প্রবেশ করে এবং মানুষকে কামড়ায় বলে সে-সময়টুকু সতর্ক থাকতে হবে। সর্বোপরি আমরা যদি আমাদের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখি তাহলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে আমরা জীবনধারণ করতে পারব, অন্যদিকে এডিস মশার হাত থেকেও রক্ষা পাব।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সুধীবৃন্দ, আমাদের পরিবেশ শিক্ষা ও পরিবেশ-সচেতনতা আজ অত্যন্ত জরুরি। সরকারের ভাবনা থাকলেও পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দিষ্ট প্রকল্প ও কর্মসূচি হাতে থাকা চাই, এবং তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে নিষ্ঠাভরে বাস্তবায়িত করার কাজে অগ্রণী হওয়া আবশ্যক। প্রত্যেকের সচেতন প্রয়াসে ও কর্মনিষ্ঠায় কোনো কাজই গুরুভার হয় না। একথা তো ঠিকই, পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব কেবল কোনো ব্যক্তিবিশেষের নয়, কোনো সংস্থার নয়, সরকারের নয় বরং সবারই। আমরাই আমাদের পরিচ্ছন্ন পরিবেশের রক্ষী। সকলের সক্রিয় ও সযত্ন প্রচেষ্টায় দূষণ-নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, সম্ভব এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং ডেঙ্গু-জ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া। ধন্যবাদ সবাইকে।

আরও দেখুন:

Leave a Comment