জীবন ও সাহিত্য | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

জীবন ও সাহিত্য | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার ,  ভূমিকা : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজকে অবলম্বন করেই তার জীবন, ধ্যান-ধারণা ও আদর্শ গড়ে ওঠে এবং সামাজিক সম্পর্ক ও পটভূমিকে কেন্দ্র করেই মানুষের কল্পনা ও ভাবনা বাস্তব রূপ লাভ করে। এই সামাজিক মানুষই সাহিত্য সৃষ্টি করে থাকে। কাজেই সাহিত্য জীবনের প্রতিফলন না হয়েই পারে না। কিন্তু জীবনের হুবহু নকল বা প্রতিচ্ছবি কখনও সাহিত্য নয়। জীবনের সাথে সাহিত্যের সম্পর্ক অভি নিষিদ্ধ এবং একটি অপরটির পরিপূরক বটে। কিন্তু তাই বলে দৈনন্দিন জীবনের ফটোগ্রাফি কখনও সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করতে পারে না। তাই রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘সাহিত্য ঠিক প্রকৃতির আরশি নহে।

জীবন ও সাহিত্য | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

জীবন ও সাহিত্য

সামাজিক উপকরণ নিয়ে সাহিত্য রচিত হয় বটে, কিন্তু তার সাথে লেখকের ভাব ও কল্পনার সংযোগ ঘটা চাই। লেখকের ব্যক্তিমানসের স্পর্শেই রচনা সাহিত্য হয়ে ওঠে। ব্যক্তিজীবন যদি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তবে সাহিত্য সৃষ্টি কখনও সার্থক হতে পারে না। বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক ম্যাথু আর্নল্ড কাব্যের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যা বলেছেন ব্যাপক অর্থে তা সাহিত্য সম্বন্ধেও বলা যায়, ‘Poetry is the criticism of life under the conditions fixed by laws of poetic truth and poetic beauty.’ কাব্য সাহিত্য জীবনের সমালোচনা বটে, কিন্তু তাকে পদে পদে কাব্যের সত্য ও সৌন্দর্যের অনুশাসন মেনে চলতে হয়।

জীবন ও সাহিত্য | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

 

কাব্যের বা সাহিত্যের সত্য ও প্রকৃত সত্য এক নয় । এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের এ উক্তিও স্মরণীয়, ‘সাহিত্যের মা যেমন করিয়া কাঁদে, প্রকৃতির মা তেমন করিয়া কাঁদে না। তাই বলিয়া সাহিত্যের মার কান্না মিথ্যা নহে। আমরা জানি বরং অধিকতর সত্য।

‘শ্রীকান্ত’ নামে কোনো লোক এই সংসারে নাও জন্মাতে পারে বা আমাদের পরিচিত কারো নাম শ্রীকান্ত থাকতেও পারে কিন্তু শরৎচন্দ্র নিজের কল্পনার তুলে দিয়ে যে শ্রীকান্তকে অঙ্কিত করেছেন তা কি বাস্তব জগতে আমাদের জানা বা অজানা যে কোনো শ্রীকান্ত নামধারী ব্যক্তি থেকে অধিকতর সত্য নয়? কেষ্টা নামে কোনো ভৃত্য থাকা অসম্ভব নয় কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ‘পুরাতন ভৃত্য’ কবিতায় যে কেষ্টাকে এঁকেছেন তা নিছক কাল্পনিক চিত্র হলেও তা কি অধিকতর জীবন্ত ও অধিকতর সত্য নয়? যে কোনো সাহিত্য বিচারের সময় জীবনের তথা বাস্তবের সত্য ও সাহিত্যের সত্যের পার্থক্য স্মরণ রাখতে হবে।

যে সাহিত্যে এই চিরন্তন মনুষ্যত্বের রূপ ফুটে ওঠে তাই মহৎ সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করে এবং সাহিত্যের ইতিহাসে তা ক্ল্যাসিক নামে অভিহিত হয়ে অমর হয়ে বিরাজ করে। এই সাহিত্যে জীবনের রূপায়ণ ভিন্ন হতে পারে কিন্তু তার সুর ও বাণী অভিন্ন। তাই ইউরোপ-আমেরিকার লোকও রামায়ণ- মহাভারত পড়ে মুগ্ধ হয়, আমরাও ইলিয়ড-অডেসি পড়ে আনন্দ পেয়ে থাকি। শেক্সপিয়র বা গ্যেটের রচনা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে আর ইউরোপ আমেরিকার লোকের মন আলোড়িত হয় রবীন্দ্রনাথ বা ইকবালের রচনা পাঠ করে। দেশ-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে একই মনুষ্যত্বের সুরে সব মানুষের মন বাঁধা বলে এটা সম্ভবপর হয়।

সমাজের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ : জীবিকা নির্বাহ ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের তাগিদেই একলা আদিম মানুষ সমাজের আদিম রূপ প্রতিষ্ঠা করেছিল। মানব সভ্যতার আদিতে মানুষের সবচেয়ে বড় কিংবা একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল প্রকৃতি। শিকার করতে গিয়ে হিংস্র জন্তু- জানোয়ারের আক্রমণ ঠেকানো একা মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিল না।

অনেক মানুষের সমন্বয়ে দল বা গোষ্ঠী গঠন করে শিকার, ফলমূল সংগ্রহ, বাসস্থান নির্মাণ ইত্যাদি কাজ অধিক সফলভাবে করতে পারত আদিম মানুষ। তাছাড়া, বিপুল ও বিরূপ পৃথিবীতে একাকিত্ব এড়ানোর জন্যও মানুষ অপরিহার্যভাবে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে চাইতো। এসব তাগিদ থেকেই পৃথিবীতে সমাজ সংগঠনের গোড়াপত্তন হয়েছিল।

সভ্যতার পরবর্তী পর্যায়ে কৃষির আবিষ্কার ও পরিবার গঠনের ফলে সমাজের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, তার মধ্যে বিন্যাসের জটিলতা দেখা দিতে থাকে । মানুষে মানুষে সম্পর্কের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তৈরি হতে থাকে সামাজিক মূল্যবোধসমূহ এভাবে আদিম সাম্যবাদী সমাজ, সামন্ততন্ত্র, পুঁজিতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে সমাজের রূপ বিবর্তিত হয়।

সাহিত্যের উৎপত্তি ও বিবর্তন : সাহিত্যের সাথে ভাষার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তাই পারস্পরিক ভাব প্রকাশ ও যোগাযোগের তাগিদেই মানুষ ভাষা সৃষ্টি করেছিল। আর ভাষা সৃষ্টির সাথে সাথেই ঘটে সাহিত্যের আর্বিভাব। অবশ্য বহুদিন পর্যন্ত সে ভাষা ও সাহিত্যের লিখিত রূপ ছিল না। আদিম মানুষ গুহার দেয়ালে, পাথরে, পশুপাখি, মানুষ ও শিকারের দৃশ্য এঁকে রাখতো প্রাকৃতিক রং-তুলির সাহায্যে।

সেই সঙ্গে মুখে মুখে রচনা করতো টুকরো কবিতা, যা বিশেষ মুহূর্তের ভাব ও বিশেষ দৃশ্যের চিত্রকল্পকে ফুটিয়ে তুলতো নিখুঁতভাবে। পরবর্তীকালে এসব কবিতা পূজা, তন্ত্র, যাদুবিদ্যা ইত্যাদির উপকরণে পরিণত হয়। বস্তুত আদিম সাহিত্য বিভিন্নভাবে ধর্ম কিংবা, আচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কবিতা তথা সাহিত্যের একটি রূপ আমরা ভারতীয় বৈদিক যুগে শ্লোক ও পুরাণের মধ্যে দেখি।

আদিম সাহিত্যের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল অলৌকিক ও অবিশ্বাস্য ঘটনার সমাহার। বৈদিক যুগের ভারতীয় সাহিত্যে কিংবা মহাভারত, রামায়ণ প্রভৃতি পৌরাণিক মহাকাব্যের বিপুল অংশ জুড়ে রয়েছে অলৌকিক ঘটনা ও চরিত্রের বর্ণনা ও তাদের কর্মকাণ্ডের বিবরণ। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগে অনুরূপ অবাস্তব ও অলৌকিক ঘটনা ও চরিত্রের সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়। বস্তুত মধ্যযুগ পর্যন্ত সাহিত্য মূলত ধর্মনির্ভর।

সাহিত্য ও জীবনের স্বরূপ: মানুষ সজীব ও চলিষ্ণু। তার জীবন, তার ধ্যান-ধারণা ও আদর্শ চিরকাল একভাবে অচল অটল নয় । যুগে যুগে তার পরিবর্তন হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে বুদ্ধিবৃত্তি ও সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে শুধু নয়, মানসচেতনায়ও বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সেই পরিবর্তন মানুষের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনকে ডিঙ্গিয়ে সাহিত্যশিল্পেও প্রতিফলিত হয়েছে । রামায়ণ-মহাভারত বা আরব্য উপন্যাসের যুগের মানুষের জীবন আর শেক্সপিয়রের  যুগের মানুষের জীবন এক নয় এবং শেক্সপিয়রের যুগের জীবন আর রবীন্দ্রনাথ-নজরুল ইসলামের যুগের জীবনের আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। প্রত্যেক জীবনের ছবি বা তার প্রতিফলন সেই যুগের সাহিত্যে না হয়ে পারে না ।

কিন্তু মানুষের মধ্যে একটি চিরন্তন ধর্ম আছে যাকে আমরা ব্যাপক অর্থে মনুষ্যত্ব বলি। এই মনুষ্যত্বের ক্ষেত্রে সব মানুষ এক। শিক্ষা-দীক্ষা ও সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মনুষ্যত্বেরও বিকাশ ঘটে এবং যুগ পরিবর্তনের ফলে তার প্রকাশেও রূপ পরিবর্তন ঘটতে পারে । কিন্তু একই মনুষ্যত্বের অঙ্কুর সব মানুষের মধ্যেই নিহিত আছে। যে সাহিত্যে এ চিরন্তন মনুষ্যত্বের রূপ ফুটে ওঠে তাই মহৎ সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করে এবং সাহিত্যের ইতিহাসে তা ক্লাসিক নামে অভিহিত হয়ে থাকে।

জীবনের ঘটনা, অনুভূতি, জিজ্ঞাসা বা আশা-আকাঙ্ক্ষা সাহিত্যের বিষয়বস্তু। সাহিত্য অধু জীবনের পরিচয় বহন করে না, জীবনের নিয়ামকও হয়ে থাকে। জীবনকে তখন সাহিত্য শুধু রস-সিক্ত করে না, তাকে রূপায়িত ও নিয়ন্ত্রিতও করে। এভাবে সাহিত্য মহত্তর জীবনের প্রেরণা জাগিয়ে থাকে। তাই বলা যায় যে, সাহিত্য ও জীবন পরস্পরের পরিপূরক। যে কোনো দেশের সামাজিক জীবন ও সাহিত্যের দিকে তাকিয়ে দেখলেই এর সত্যতা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। সামাজিক জীবন উন্নত অথচ সাহিত্যে অনুন্নত এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল করে। মোটকথা সাহিত্য জীবনকে উন্নতির পথ করে দেয় এবং জীবন সাহিত্যকে অগ্রসর হওয়ার উপকরণ ও প্রেরণা যুগিয়ে থাকে ।

জীবন ও সাহিত্য | ভাষা ও সাহিত্য | বাংলা রচনা সম্ভার

 

জীবন ও সাহিত্যের সম্পর্ক : সাহিত্যকে মোটামুটিভাবে দু ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে Realistic বা বাস্তববাদী ও Idealistic বা আদর্শবাদী। জীবনকেও দু ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। সংসারে আদর্শবাদী মানুষ যেমন আছে, তেমনি এমন মানুষেরও অভাব নেই যারা কোনোরকম আদর্শবাদের ধার ধারে না। অধিকাংশ মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত গতানুগতিকভাবেই জীবনযাপন করে যায়। উত্তরাধিকার সূত্রে তারা জীবনকে যেভাবে পেয়েছে সেভাবেই যাপন করে।

একদিন যথাসময়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সংসার থেকে বিদায় গ্রহণ করে। কোনোরকমের জীবন দর্শন, স্বপ্ন বা ভাবাদর্শ এদেরকে কিছুমাত্র বিচলিত করে না। সমাজ-সংসার, জাতি-দেশ রসাতলে যাক তাতে তাদের কিছুমাত্র মাথা ব্যথা হয় না। অন্যদিকে বহু আদর্শবাদের লোক আছেন—বিশেষ কোনো জীবন দর্শনের যারা অনুসরণকারী নিজেদের ভাবাদর্শের জন্য যারা প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দিতে কুণ্ঠিত হন না। এই আদর্শবাদীদের ত্যাগ ও সাধনার জীবন হয় সুন্দর ও মহৎ। এরাই প্রবর্তন করেন নতুন ধর্ম, প্রতিষ্ঠা করেন নতুন সভ্যতা, গড়ে তোলে নতুন সমাজ জীবন। এদের স্মরণ করে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন,

শুধু জানি, সে শুনেছে কানে

তাহার আহ্বান গীত, ছুটেছে সে নির্ভীক পরাণে

সংকট আবর্ত মাঝে নিয়েছে সে বিশ্ব বিসর্জন

নির্যাতন লয়েছে বক্ষ পাতি; মৃত্যুর গর্জন

শুনেছে সে সংগীতের মতো।

 

উপরে বর্ণিত দুরকম জীবনই সাহিত্যের উপকরণ হয়েছে। যে জীবনই বর্ণিত হোক, কাল্পনিক হলেও তা সম্ভবপর কল্পনা হওয়া চাই। অর্থাৎ বাস্তব জীবনে তা ঘটা যেন অসম্ভব না হয়। বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কহীন আজগুবি ও অলৌকিক কাহিনী কখনও মানুষের মনে আবেদন সঞ্চার করে না।

আবার সাহিত্যের সাথে জীবনের সম্পর্ক নিয়ে সাহিত্যিক সমাজে নানা মতবাদও প্রচলিত আছে। একদল সাহিত্যিক আছেন যারা শুধু শিল্পসৌন্দর্যেরই ভক্ত; তারা বলেন, জীবনের অর্থাৎ মানুষের জন্যই শিল্প । এদের মতে, মানবকল্যাণই সাহিত্যের প্রধান উদ্দেশ্য।

জীবনের ক্ষেত্র বিশাল ও ব্যাপক। সভ্যতার, বিশেষ করে বস্তুবাদী সভ্যতার বিস্তৃতির সাথে মানবজীবনের জটিলতা ও রহস্য অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের সাহিত্যের প্রধান বিষয়বস্তু ছিল নরনারীর প্রণয়, তার সংঘাত ও প্রতিক্রিয়া। বস্তুর অবসরভোগী সমাজে এটাই ছিল বড় ঘটনা এবং সেদিন সাহিত্যও ছিল এই অবসরভোগী সমাজের অবসর বিনোদনের বস্তু। বিত্তবান এ অবসরভোগীদের কেন্দ্র করেই সেদিন সর্বত্র সামাজিক জীবন আবর্তিত ও আলোড়িত হতো।

তাই সাহিত্যে হয়েছিল তার প্রতিফলন। আজ অবসরভোগী সমাজ নিশ্চিহ্ন ও শক্তিহীন। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও গণতন্ত্রের আবির্ভাবের ফলে এখন শ্রমিক অর্থাৎ মেহনতি জনতাই সব দেশের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এদের জীবনের বিচিত্র ঘটনা ও সমস্যা আজ অত্যন্ত বড় হয়ে উঠেছে। আধুনিক জীবন সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। এই শ্রমিক শ্রেণীর জীবনও তাই আজ সাহিত্যের বিষয়বস্তু। অন্ন-বস্ত্রের সমস্যাই এদের জীবনের সমস্যা, তাই আধুনিক সাহিত্য, এমনকি কাব্যেও এ সমস্যারই ছায়াপাত হচ্ছে। জীবনের সাথে সাহিত্যের সম্পর্ক যে কত নিবিড় ও গভীর এটা তার এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

উপসংহার : এ কথা সত্য যে অন্ন-বস্ত্রের সমস্যা সমাধান সাহিত্যের ধর্ম নয়, সাহিত্যের কাজও নয়। জীবনের মহত্ত্ব ও সৌন্দর্যের দিকে ইঙ্গিত করা ও তার রস-মূর্তি গড়ে তোলাই সাহিত্যের প্রধান ধর্ম। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের অভাব-অভিযোগ ও প্রাণধারণের নিত্যবস্তু থেকে বঞ্চিত হলে মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য চর্চা নিছক বিলাস হয়ে দাঁড়ায়।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এজন্যই সাহিত্যিক জীবনে প্রাথমিক চাহিদা ও প্রয়োজনকে বিস্তৃত হওয়া উচিত নয় । বলা বাহুল্য, মানুষের জন্যই সাহিত্য। সে মানুষই যদি সুস্থ ও সুন্দর জীবনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে সমস্ত সাহিত্যকর্মই নিষ্ফল হতে বাধ্য। মোটকথা সাহিত্য ও জীবন শুধু পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল নয়; পরস্পরের পরিপূরকও বটে।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment