ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে ছোট ভাইয়ের কাছে চিঠি | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা

ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে ছোট ভাইয়ের কাছে চিঠি | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , চিঠি ছিল পাঠচর্চা, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা, বিতর্কমূলক লেখা বা সমমনা অন্যদের সাথে আইডিয়া বিনিময়ের পদ্ধতি। কিছু লোক চিঠিকে মনে করতো কেবল লেখালেখি। আবার অন্যরা মনে করে যোগাযোগের মাধ্যম। বাইবেলের বেশ কয়েকটি পরিচ্ছেদ চিঠিতে লেখা।

 

ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে ছোট ভাইয়ের কাছে চিঠি

 

ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে ছোট ভাইয়ের কাছে চিঠি

কলেজ ছাত্রাবাস, চট্টগ্রাম

১২ ডিসেম্বর, ২০০০

স্নেহের ‘ক’

আমার আদর ও স্নেহ নিও। শীতকালীন ছুটিটা তুমি কীভাবে কাটাবে সে সম্পর্কে পরামর্শ চেয়ে আমাকে চিঠি লিখেছ। সময়ের সদ্ব্যবহার সম্পর্কে তোমার সচেতনতা দেখে আমি খুশি হলাম। আমি তোমাকে জীবনের বড় ছুটিগুলো শিক্ষাসফরে কাটানোর পরামর্শ দেব। জ্ঞান লাভের উপায় বা মাধ্যম হলো দুটি। একটি হল বই পড়া, অন্যটি দেশভ্রমণ। বই পড়ে তত্ত্বগত জ্ঞান লাভ করা যায়। আরো জানা যায় অনেক তথ্য। কিন্তু এগুলোই যথেষ্ট নয়। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের উক্তিটিও স্মরণযোগ্য :

‘বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি / দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী- মানুষের কত কীর্তি, কত নদী-গিরি সিন্ধু-মরু, / কত-না অজানা জীব কত-না অপরিচিত তরু রয়ে গেল অগোচরে। ’ তাই, কোনো কিছু প্রত্যক্ষ দেখে অভিজ্ঞতা লাভ করা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।

 

ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে ছোট ভাইয়ের কাছে চিঠি

 

প্রাচীনকালে যখন বই সহজলভ্য ছিল না, তখন জ্ঞানপিপাসু মানুষ দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়তেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা আজ আমাদের জন্যে অতীতকে জানার সূত্র হয়ে গেছে। ফলে এর মাধ্যমে অতীতের স্মৃতি, জীবনযাত্রা, কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায় শিক্ষাসফরের উদ্দেশ্য হল— বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা, বাইরের পরিবেশ থেকে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা। বইয়ের পাঠের সঙ্গে বাইরের দৃষ্টান্ত যদি মিলিয়ে দেখা যায় তবে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে, ভিত পাকা হয়। সোনারগাঁ, ময়নামতি, পাহাড়পুর, সুন্দরবন এসব যদি নিজের চোখে দেখা যায় তবে বইয়ের বিবরণ জীবন্ত হয়ে মনের পটে স্থায়ী হয়ে থাকে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সেক্ষেত্রে দেশভ্রমণের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য শিক্ষা সফরের ফলে একদিকে যেমন গতানুগতিক ও নিয়মবদ্ধ জীবনের বাইরে নির্মল বায়ুতে আনন্দ লাভ করা যায়, অন্যদিকে নতুন নতুন জ্ঞান লাভ করাও সম্ভব হয়। এবারের ছুটিতে যদি শিক্ষাসফরে যাও তা হলে, বগুড়ার মহাস্থানগড়কে বেছে নিতে পার। বগুড়া জেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ করতোয়া নদীর তীরে এবং ঢাকা-দিনাজপুর বিশ্বরোডের পাশে এই ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানগড় অবস্থিত। প্রাচীনযুগের বহু ধ্বংসাবশেষ এখানে বিদ্যমান। এটি পুরাকীর্তির অন্যতম নিদর্শনস্থল। গত বছর শিক্ষা সফরে গিয়ে এ পুরাকীর্তি প্রত্যক্ষ করে আমার যে অনুভূতি জন্ম নিয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টকর। আজ আর নয়। আমি ভালো আছি। বাসার বড়দের প্রতি সালাম ও ছোটদের প্রতি স্নেহ জানিও।

আরও দেখুন:

Leave a Comment