কী ভুল লিখি কেন লিখি?

কী ভুল লিখি কেন লিখি? প্রশ্নটি নিয়ে আজ আলাপ করবো। বাংলা ভাষা লিখতে গেলে শিক্ষার্থীদের ভুলের অন্ত থাকে না। সব ভুলই ব্যাকরণগত। তাই শব্দ ও বাক্যের নির্ভুল। প্রয়োগের জন্যে প্রয়োজন ভাষা দক্ষতা। শব্দ ও বাক্যের শুদ্ধ প্রয়োগবিধির জন্যে একক কোনো সূত্র বা নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি বেঁধে দেয়া সম্ভব নয়। কেননা ভাষা দক্ষতা অর্জনের জন্যে ভাষা ও ব্যাকরণের সব ক’টি বিষয় সম্পর্কে বহু ধারণা থাকতে হবে।

কী ভুল লিখি, কেন লিখি?

কী ভুল লিখি কেন লিখি?

বর্তমান বইটির প্রতিটি অধ্যায়ে ব্যাকরণ-সম্পর্কিত, যে আলোচনা করা হয়েছে তা এ সম্পর্কিত মৌলিক ধারণা তৈরির জন্যে সহায়ক। তবে বাংলা লিখতে গিয়ে আমরা সচরাচর যে ভুলগুলো করে থাকি সে সম্পর্কে নিচে অল্প-বিস্তর আলোচনা করা হল। শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়ে এসব ভুল লক্ষ করলে নির্ভুল বাংলা লিখতে পারবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

কী ভুল লিখি :

ক. বানানের অনুদ্ধি বা বাক্যে ব্যবহৃত শব্দাবলি নির্ভল লেখার ক্ষেত্রে ;  খ. বাক্যগঠনের ক্ষেত্রে বাক্যে পদের অপপ্রয়োগ ; গ. বাক্যে পদবিন্যাসের ক্ষেত্রে ; ঘ. সাধু ও চলিত রীতির মিশ্রণজনিত ত্রুটি।

 

কী ভুল লিখি, কেন লিখি? | বানানের অশুদ্ধি | বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ | ভাষা ও শিক্ষা

 

বানানের অশুদ্ধি

বানানের অশুদ্ধির প্রধান কারণ হল আমরা মুখে শব্দাবলি যেমন বলি তেমনি লিখি। এক্ষেত্রে কোনো শব্দ যদি ভুল উচ্চারণের অভ্যাস থাকে তাহলে লিখতে গিয়ে অশুদ্ধ উচ্চারণের প্রভাবে ভুল বানান লেখা হয়। যেমন অনেকেই বলে মুখস্ত, অভ্যস্থ, বিপদগ্রস্থ, ভূমিষ্ট, ঘনিষ্ট, মুষ্ঠি এবং লেখেও তাই। অথচ শব্দগুলো হবে মুখস্থ, অভ্যস্ত, বিপদগ্রস্ত ভূমিষ্ঠ, ঘনিষ্ঠ মুষ্টি। এসব ভুলের জন্যে বাংলা ভাষায় একই ধ্বনির জন্যে যে একাধিক হরফ (যেমন : ই-ঈ, উ-উ, ণ-ন, জ-য, ত-ৎ, শ-ষ-স- ইত্যাদি) রয়েছে তা এবং যুক্তব্যঞ্জনবর্ণসমূহ প্রভাব বিস্তার করে সবচেয়ে বেশি।

 

কী ভুল লিখি, কেন লিখি? | বানানের অশুদ্ধি | বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ | ভাষা ও শিক্ষা

 

তবে বানানের যথাযথ নিয়ম জানা না থাকলে বানানে ভুল হবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। কোনো শব্দের বানান লিখবার সময়ে সন্দেহ দেখা দিলে শব্দটা কীভাবে তৈরি হয়েছে মাথা খেলিয়ে তা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যেমন : “ভূগোল’ শব্দের বিশেষণ লেখা হয় ভৌগলিক। অথচ এই বানান ভুল। ভুলটা ধরে ফেলাও কিন্তু সহজ। মূল শব্দে, মানে বিশেষ্য পদটিতে তো গ-য়ে ও-কার ছিল, তা হলে বিশেষণে গো না হয়ে গ কেন হবে। অবশ্যই হবে “ভৌগোলিক’। আবার গীতাঞ্জলী পুষ্পাঞ্জলী শ্রদ্ধাঞ্জলী — তিনটি বানানই ভুল, হবে : গীত + অঞ্জলি = গীতাঞ্জলি, পুষ্প + অঞ্জলি = পুষ্পাঞ্জলি, শুদ্ধা + অঞ্জলি = শ্ৰদ্ধাঞ্জলি। তাই বানান ভুল পরিহারের জন্যে আমাদের নিম্নলিখিত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। যেমন :

১. বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হরফসমূহ অর্থাৎ ধ্বনি, বর্ণ, অক্ষর এবং যুক্তব্যঞ্জনবর্ণগুলো চিনে নিতে হবে। পাশাপাশি জেনে নিতে হবে উচ্চারণ পদ্ধতি সম্পর্কে।

২. ণত্ব-বিধান ও ষত্ব-বিধান বানানের সঙ্গে যেহেতু সরাসরি সম্পর্কযুক্ত, তাই এ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে।

৩. ‘পদ পরিবর্তন’ (বিশেষ করে বিশেষ্য থেকে বিশেষণ্য, সখি, প্রত্যয়, সমাস, উপসর্গ-ঘটিত নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। প্রায় সমোচ্চারিত শব্দের মধ্যে যে বানান পার্থক্য রয়েছে সে সম্পর্কেও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment