কলেজের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা , ‘ক’ কলেজ— একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ, রাজনীতি ও দুর্নীতির কলুষমুক্ত থেকে উন্নত শিক্ষা বিতরণই যার বৈশিষ্ট্য। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি খুব অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের মধ্য দিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে। এই কৃতিত্বের পেছনে রয়েছে শিক্ষার বিশেষ উপাদান- শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পরিবেশ শিক্ষাক্রম, বিদ্যালয় এবং পরিবার ইত্যাদির সুষম সমন্বয় এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম।
কলেজের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা
০১. বিগত এইচ. এস. সি পরীক্ষাগুলোতে ২০০৫ সালে শতকরা ৯০%, ২০০৬ সালে ৯৭% এবং ২০০৭-২০১০ সাল পর্যন্ত ১০০% উত্তীর্ণ হয়েছে। খেলাধুলা, শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ড ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও এ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বেশ কটি পদক অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে কলেজটির অধ্যক্ষ সরকারিভাবে শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষকের মর্যাদা এবং এবছর কলেজটি আখ্যায়িত হয়েছে শ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে। এ সব কিছুর মূলে রয়েছে কলেজটির মানসম্মত শিক্ষা এবং শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ। ০২. শহরের কিছুটা বাইরে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এই কলেজটিকে ঘিরে রয়েছে নানাজাতের শতাধিক গাছপালা। কলেজের ভেতরের সুপরিসর সবুজ মাঠ, তার চতুর্দিকে সাড়িবদ্ধ ফুলের বাগান। সবমিলিয়ে একটি মনমুগ্ধকর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রথম দর্শনেই যে কেউ বলবে — শিক্ষার পরিবেশ এমনই হওয়া উচিত। এ তো গেল বাইরের পরিবেশ।
ভেতরের পরিবেশ আরও সুশৃঙ্খল। ০৩. রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত এ কলেজটির ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৮০০। ইংরেজি এল আকৃতির বহুতলবিশিষ্ট ভবনটির মধ্যে একটি বিশাল গ্রন্থাগারও রয়েছে। রয়েছে ছাত্রাবাস, বিজ্ঞানাগার, হলরোমসহ খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় সব আধুনিক ব্যবস্থা ০৪. “ভালো শিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভালো শিক্ষক। একজন ছাত্রের জীবনে শিক্ষকের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। শিক্ষকের প্রাণ, আনন্দ, আদর্শ, স্বপ্ন সবকিছুই ছাত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। একজন ছাত্র/ছাত্রীর বিদ্যালয়ে উপস্থিতির আগ্রহটা অনেকটা নির্ভর করে শিক্ষকের ওপর’। কলেজ অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঘনিষ্ঠ প্রয়াস-প্রচেষ্টায়ই কলেজটি আজ গৌরবে ধন্য । ০৫. কলেজের পঠন-পাঠনে আনা হয়েছে ভিন্নতা। রাজনীতি ও ধূমপান যেমন নিষিদ্ধ তেমনি নিষিদ্ধ করা হয়েছে কোচিং ও প্রাইভেট-টিউশনি।
কলেজের পঠন-পাঠনে আজকের এই নির্মম বাজার অর্থনীতির যুগেও এ কলেজের শিক্ষকগণ আত্মোৎসর্গিত আদর্শবাদী ও বিজ্ঞ। তাঁরা শিক্ষার্থীর সহায়ক বন্ধু, পরামর্শদাতা, অভিভাবক, হিতৈষী ও পথপ্রদর্শক। তাঁদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ভালোবাসা, আদর্শ অবকাশ ও স্বপ্নে ভরপুর; বিদ্যালয় মানে বন্ধু, বিদ্যালয় মানে অবকাশ, বিদ্যালয় মানে অন্তরঙ্গতা, আনন্দ বা স্বপ্ন। প্রতিবছরই বিশেষ কতকগুলো লক্ষ্য সামনে রেখে কলেজ পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষক মহোদয় শিক্ষাক্রম পরিচালনা করেন। ০৬. কলেজটিতে যথাসময়ে পাঠ্যক্রম সম্পাদন করা হয়।
তাছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন দেহে-মনে-প্রাণে আত্মায় পরিপূর্ণ বিকাশের মধ্য দিয়ে পূর্ণ সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠতে পারে, অর্থাৎ জ্ঞানার্জনের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যার্থী সমাজমনস্ক ও সমাজপ্রাণ হয়ে ওঠতে পারে তার জন্য নৈতিক শিক্ষা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, শান্তি শৃঙ্খলা প্রভৃতি নানা বিষয়ে তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়।

সর্বোপরি প্রীতিস্নিগ্ধ এক নির্মল পরিবেশ কলেজটিকে আরও অন্য দশটা কলেজ থেকে করেছে পৃথক, করেছে গৌরবমণ্ডিত। জ্ঞানার্জনে আত্মনিয়োগই একজন ছাত্রের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য। ‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ’- অধ্যয়নই ছাত্রদের একমাত্র তপস্যা— এই তপস্যা, ও সাধনার জন্য যে পরিবেশের প্রয়োজন তার সবটুকুই এ কলেজে বিরাজমান। তাই এ কলেজ অতীতের স্বর্ণোজ্জ্বল সাক্ষী, বর্তমানের সারথি, ভবিষ্যতের পাথেয়।
আরও দেখুন: