Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

কবি আল মাহমুদের একুশের কবিতা

১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অন্যতম শক্তিশালী সাহিত্যিক প্রস্তাবনা হলো “একুশের কবিতা”। এই কবিতা রচয়িতা সদ্যপ্রয়াত বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবি আল মাহমুদ, যিনি বাংলা কবিতায় নিজস্ব কণ্ঠস্বর, স্বতন্ত্র ভাবনা ও অনুপম রূপবন্ধ দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।

“একুশের কবিতা” শুধু একটি কবিতা নয়—এটি এক অন্তর্গত আর্তি, ইতিহাসের পেছনে থাকা মানুষের কান্না, এবং মাটি ও মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারীদের প্রতি এক অসামান্য শ্রদ্ধার্ঘ্য। কবিতাটিতে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ, বাঙালির আত্মপরিচয় ও জাতীয়তাবোধ হৃদয়স্পর্শী রূপে প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রতিটি চরণেই ভাষার জন্য রক্তদানের অনবদ্য বেদনা ও অহংকার ছড়িয়ে আছে।

আল মাহমুদের এই অমর কাব্য বাংলা ভাষার আন্দোলনের স্মারক হিসেবে গণ্য হয়। “একুশের কবিতা” আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি অস্তিত্বের উৎস, আত্মমর্যাদার প্রতীক।

এই কবিতাটি আজও একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পাঠে, চর্চায়, আলোচনা ও আবৃত্তিতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। আল মাহমুদের এই সৃষ্টি চিরকাল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহাসিক ধন হিসেবে বিবেচিত হবে।

একুশের কবিতা – আল মাহমুদ

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
দুপুর বেলার অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায় ?
বরকতের রক্ত।

হাজার যুগের সূর্যতাপে
জ্বলবে এমন লাল যে,
সেই লোহিতেই লাল হয়েছে
কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে !

প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে
ছড়াও ফুলের বন্যা
বিষাদগীতি গাইছে পথে
তিতুমীরের কন্যা।

চিনতে না কি সোনার ছেলে
ক্ষুদিরামকে চিনতে ?
রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে
মুক্ত বাতাস কিনতে ?

পাহাড়তলীর মরণ চূড়ায়
ঝাঁপ দিল যে অগ্নি,
ফেব্রুয়ারির শোকের বসন
পরলো তারই ভগ্নী।

প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী
আমায় নেবে সঙ্গে,
বাংলা আমার বচন, আমি
জন্মেছি এই বঙ্গে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

একুশের কবিতা আবৃত্তি:

 

 

Exit mobile version