এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা

এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা : সম্প্রতি ঝিনাইদহ শহরে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। গত দুই মাসে চারটি ডাকাতি, তিনটি খুনের ঘটনাসহ ছোট-বড় কয়েকটি চুরির ঘটনাও ঘটেছে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ভাঙচুর, খুনখারাবিসহ শহর এলাকায় ছিনতাই নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মার্চ তারিখে শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত চৌধুরী বাড়িতে একদল ডাকাত এসে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক বাসার ভেতর ঢুকে প্রায় ৫াঁচ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ ১ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। একই রাতে উপশহর এলাকায় একটি বাড়িতে ডাকাতি হয়। ডাকাতরা একজনকে হত্যাসহ প্রায় দু লক্ষ্যাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

 

এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা

এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা

ঝিনাইদহে সম্প্রতি একটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় চরমপন্থী বলে কথিত একদল সন্ত্রাসী শহরের একটি বাড়িতে হানা দিয়ে একই পরিবারের দুজনকে খুন করে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। উঠতি বয়সী ছেলেরা এখানে বেপরোয়া জীবনযাপন করছে তারা পাড়ার যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে জটলা পাকায়, অশোভন অঙ্গভঙ্গি করে এবং নানা প্রকার আপত্তিকর মন্তব্য ছোঁড়ে। তারা বয়স্ক নারী-পুরুষকে যখন তখন লাঞ্ছিত করে। তারা প্রায় প্রতিদিনই মারামারি আর ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত থাকে। দোকান ভাঙচুর, হোটেল ভাঙচুর এ-এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

এলাকার বাসিন্দারা তাদের ভয়ে সব সময় তটস্থ থাকে। সন্ধ্যার পর এখানকার রাস্তায় যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এখানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এ মাস্তানরা সংঘবদ্ধভাবে পথচারীকে হয়রানি করে। অস্ত্র দেখিয়ে তারা ঘড়ি, অর্থ, ব্যাগ ইত্যাদি ছিনতাই করে। মাঝে মাঝে দোকানে দোকানে চাঁদা ওঠায়। এলাকার ব্যবসায়ী কিংবা ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে নেয়। যারা চাঁদা দিতে চায় না, তাদের তারা বেদম মারধর করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সম্প্রতি তারা টোবাকো কোম্পানির এক ঠিকাদারের বাসায় আক্রমণ চালায় এবং বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। জীবনের ভয়ে ওই ঠিকাদার অভিযোগ করা তো দূরের কথা টু শব্দটিও করে নি।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

রাতে তারা যেখানে-সেখানে আড্ডা জমায়। রাত দশটার পরে রাস্তা দিয়ে কোনো ভদ্রলোক হেঁটে যেতে পারে না। সন্ধ্যায় যখন লোডশেডিং হয় তখনই তারা উৎসব জমিয়ে ফেলে। এলাকাটি ক্লাইম জোন হিসেবে পরিচিত এবং এখানকার অনেক খবর ইতোপূর্বে পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয় নি। বরং পত্রিকায় ছাপা হলে তাদের অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তাই এলাকার জনগণ মুখ বুজে সব সহ্য করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণের মধ্যে এসব অপরাধের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং পুলিশের উপর তাদের আস্থা কমে গেছে বলে অনেকে মনে করেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, শহরে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর নয়।

পুলিশী টহলের ব্যাপকতা নেই এবং কোনো ছিনতাইমূলক ঘটনায় বা কোনো গোলযোগে পুলিশ খবর পেলেও তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয় না। অনেক ভুক্তভোগী নিরাপত্তার অভাবে থানায় মামলা দায়ের করে না। আর যারা মামলা করে তাদের ব্যাপারেও তেমন কোনো অগ্রগতি সাধিত হয় না। জনগণ অপরাধমূলক ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে মহল্লায় মহল্লায় নৈশ প্রহরার ব্যবস্থা করেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটাতে পারে নি।

 

এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা

 

স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে স্বীকারোক্তি পাওয়া গেছে। থানা কর্তৃপক্ষের ধারণা রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্যই সাম্প্রতিককালে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। থানায় পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় টহল ব্যবস্থা জোরদার করা যাচ্ছে না, অপরাধী ধরা ও তদন্ত কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে গ্রেফতারকৃত অপরাধী কোর্টে গিয়ে সহজেই জামিন পেয়ে ফিরে এসে পুনরায় অপরাধে লিপ্ত হয়। এ অবস্থায় এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপনের লক্ষ্যে শান্তিপ্রিয় মানুষ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহানুভূতিসাপেক্ষে ও তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিক্ষা করছে। আমরা আশা করব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় জরুরি পদক্ষেপ নেবেন।

আরও দেখুন:

Leave a Comment