এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিকার প্রার্থনা করে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র | আবেদন পত্র | ভাষা ও শিক্ষা , ইংরেজিতে এগুলোকে Official Letter বলে। এই ধরনের পত্রের বিষয় নানাবিধ হতে পারে। যেমন : ছুটির আবেদন, চাকরির জন্য আবেদন, অভাব-অভিযোগ বা সমস্যাদির ব্যাপারে সরকারি কর্তৃপক্ষকে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, পত্রিকা সম্পাদকের কাছে পত্র লিখন ইত্যাদি। এই শ্রেণির পত্রে কেবল বক্তব্য-বিষয় প্রাধান্য পায়, ভাবাবেগ প্রকাশের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। বক্তব্যের পারম্পর্য রক্ষা, ভাষার স্পষ্টতা ও শুদ্ধির ওপর সতর্ক ও যত্নবান হতে হয়। পত্রের নির্ভুল কাঠামো অনুসৃতি অপরিহার্য।
একটি নির্দিষ্ট গঠন কাঠামো- নিয়ম অনুসরণ করে কর্তৃপক্ষের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে যে পত্রের মাধ্যমে আবেদন করা হয়, তাদেরকে দরখাস্ত বা আবেদনপত্র বলা হয়ে থাকে। আবেদন পত্র লেখার নিয়ম নিয়ে কোনো বিষয় অজানা থাকলে বা মনে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও অন্য কারো সাহায্য গ্রহন করতে অস্বস্তিবোধ হয়। কারন শিক্ষাগত যোগ্যতার বিপরীতে কারো কাছে এধরনের সহযোগিতা চাওয়াটা বিব্রতকর মনে ওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
তাই আমাদের উচিৎ আবেদনপত্র লেখার নিয়মগুলো সঠিকভাবে আয়ত্বে নিয়ে আসা। কিভাবে দরখাস্ত লিখতে হয়, কোন আবেদনপত্রের ফরম্যাট কেমন হবে, কি ধরনের তথ্য সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে, সেসব বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করা।
এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিকার প্রার্থনা করে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র
তারিখ : ১৬ মে, ২০০০
বরাবর
নির্বাহী প্রকৌশলী,
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, দেবিদ্বার, কুমিল্লা।
বিষয় : দেবিদ্বার উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রসঙ্গে।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমরা দেবিদ্বার উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের অধিবাসী নিম্নোক্ত বিষয়ে আপনার সদয়-দৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
আমাদের গ্রামটি একটি বর্ধিষ্ণু ও জনবহুল গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় পাঁচ হাজার লোক বাস করে। দু’বছর আগে গ্রামটিতে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুৎবিভ্রাট এই এলাকার একটি নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ধ্যা হলেই এই এলাকা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। শুধু সন্ধ্যার পর নয়, দিনেও এখন সমানে লোডশেডিং হচ্ছে। এ কারণে আসন্ন এইসএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। ভেপসা গরম সহ্য করে মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অন্যদিকে বিদ্যুৎ নির্ভর চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য আজ ধ্বংসের মুখে।
দু-একটি ডিজেল চালিত জেনারেটর থাকলেও এতে জ্বালানি খরচ বেশি হওয়ায় তা কল-কারখানায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎবিভ্রাট -এর সঙ্গে লো-ভোল্টেজের কারণে মেশিনারি জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক পরিবার আজ পথে বসতে চলেছে। গত ১৫ দিন ধরে চরম বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বোরো চাষ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। চাহিদার মাত্র ৩০-৪০% বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্যুতের অনিয়মের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যে অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা দিয়েছে তাতে জীবন বাঁচানোই কঠিন । এভাবে বিদ্যুৎ সংকট চলতে থাকলে একসময় যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে তা বর্ণনাতীত। অতএব, জনাব সমীপে আকুল আবেদন এই যে, অনুগ্রহপূর্বক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিকার করে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা বাধিত হব।
নিবেদক
গ্রামবাসীর পক্ষে
“খ”, লক্ষ্মীপুর, দেবিদ্বার, কুমিল্লা।
আরও দেখুন: