Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

একরাত্রি ছোট গল্প || রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

e0a68fe0a695e0a6b0e0a একরাত্রি ছোট গল্প || রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একরাত্রি ছোট গল্প ছোট গল্প রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ছোট গল্পের সংকলন “গল্পগুচ্ছ” থেকে নেয়া। একরাত্রি গল্পটি বিশ্বভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

 

একরাত্রি ছোট গল্প

একরাত্রি ছোট গল্প এর বিষয় বস্তু ঃ

‘একরাত্রি’ গল্পের নায়কের বাল্যকালের খেলার সাথী ছিল সুরবালা। উভয়ের পরিবারের মধ্যে যে সম্প্রীতি বজায় ছিল তাতে বড় হলে একটা বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তোলা অসম্ভব ছিল না। বয়োপ্রাপ্ত হয়ে নায়ক পড়াশুনার উদ্দেশ্যে কলকাতায় চলে লে। সেখানে সে স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে বাল্যসখী সুরবালাকে ভুলতে বসল। এদিকে সুরবালার পিতামাতা নায়কের সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব দিলে পাত্রপক্ষ রাজি হলেও নায়ক সে প্রস্তাবে কান দিল না। সে তখন দেশোদ্ধারে ব্যস্ত। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের কাছে সামান্য গ্রাম্য মেয়ে সুরবালা তুচ্ছাতিতুচ্ছ বলে পরিগণিত হলো।

 

 

পাত্রীপক্ষ মনোক্ষুণ্‌ন হয়ে নোয়াখালীর রামলোচন উকিলের সাথে সুরবালার বিবাহ দিলে সে স্বামীর ঘর করতে চলে গেল। নায়ক দেশোদ্ধারের নেশায় মত্ত রইল। হঠাৎ নায়কের পিতার মৃত্যু হলে দেশোদ্ধার ছেড়ে তাকে বিধবা মা এবং অরক্ষণীয়া বোনদের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সংসারে ফিরতে হলো। অনেক চেষ্টা তদবিরের পর নায়ক নোয়াখালীর এক এন্ট্রেন্স স্কুলের সেকেন্ড মাস্টারীর চাকরি যোগাড় করে সেখানে চলে গেল। তার বাল্যসখী সুরবালা ও গারিবালডি হওয়ার স্বপ্ন মাস্টারির মধ্যে তলিয়ে গেল। ঘটনাচক্রে নায়ক যে-স্কুলে চাকরি পেল তারই সন্নিকটে সুরবালার স্বামী রামলোচন উকিল সুরবালাকে নিয়ে বসবাস করতেন।

নায়ক এ খবর জানার পর রামলোচনের সাথে পরিচিত হলো এবং অবসরে তাঁর বাসায় গল্প করতে যাতায়াত শুরু করল। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো সুরবালা নায়কের সামনে আসে না। পাশের ঘরে তার অস্তিত্ব নায়ক তার সমস্ত সত্তা দিয়ে অনুভব করে, কিন্তু প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্ত্বেও তার সাক্ষাৎ পায় না। অথচ এই সুরবালা তার কী না হতে পারত? কিন্তু আজ সে তার কেউ নয়। তাকে দেখার অধিকারও নায়ক হারিয়েছে। এ মানসিক অস্থিরতার মধ্যে একদিন রাতে দুর্যোগ শুরু হলো। প্রচণ্ড ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সমগ্র অঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেল।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

নায়ক জানত সুরবালার স্বামী গৃহে নেই, সে একাকি অবস্থান করছে। বানের জল ঘরে ঢুকলে নায়ক ঘর থেকে বেরিয়ে পুকুরপাড়ের উঁচু ঢিবির উপর গিয়ে আশ্রয় নিল। এ সময়ে অন্য দিক থেকে সুরবালাও আশ্রয় নেওয়ার জন্য সেই ঢিবিতে এল। কেউ কোনো কথা বলতে পারল না। রাত প্রায় শেষ হয়ে এলে ঝড় থেমে গেল। সুরবালা কোনো কথা না বলে বাড়ি চলে গেল।

নায়কের সমস্ত ইহজীবনে কেবল ক্ষণকালের জন্য যে একটি অনন্ত রাত্রির উদয় হলো তা তার আয়ুর সমস্ত দিনরাত্রির মধ্যে তার তুচ্ছ জীবনের একমাত্র চরম সার্থকতা। এই রাত্রিটিই নায়কের জীবনের একমাত্র স্মরণীয় রাত্রি হিসেবে পরিগণিত হয়ে রইল।

 

একরাত্রি ছোট গল্প সম্পূর্ণ ঃ

 

আরও দেখুন:

Exit mobile version