“উত্তম ও অধম” একটি অনন্য ও হৃদয়স্পর্শী কবিতা, যেখানে পিতা ও কন্যার সহজ কথোপকথনের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে মানবিকতা, নৈতিকতা ও জীবনবোধের গভীর বার্তা। কবিতাটি শুধু কাব্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং পাঠককে ভাবায়—কে উত্তম, কে অধম? কে প্রকৃত মানুষ?
এই কবিতায় একজন বাবা তাঁর মেয়েকে সহজ ভাষায় শেখান, কেবল বিদ্যার গরিমা মানুষকে উত্তম করে তোলে না—মানুষ হতে হলে দরকার সহানুভূতি, শ্রদ্ধাবোধ, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিক মূল্যবোধ। মেয়েটি প্রশ্ন করে, “কে উত্তম, কে অধম?”—আর তার উত্তরে বাবার সরল ও সত্য কথাগুলো আমাদের সামনে তুলে ধরে আদর্শ মানুষের প্রতিকৃতি।
এই কবিতা শুধু শিশু-কিশোরদের জন্য নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে মানবিক হওয়ার শিক্ষা দেয়। এটি আমাদের শেখায়, আসল বড়ত্ব জ্ঞানে নয়, মননে—আর সত্যিকারের শিক্ষা, মানুষকে মানুষ হতে শেখায়।
“উত্তম ও অধম” তাই কেবল একটি কবিতা নয়, এটি এক মানবিক দর্শনের নাম—যা সমাজের প্রতিটি পাঠকের অন্তরে আলো জ্বালায়।
উত্তম ও অধম কবিতা – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
দিল পথিকের পায়
কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে
বিষ লেগে গেল তাই।
ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা
বিষম ব্যথায় জাগে,
মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়
জাগে শিয়রের আগে।
বাপেরে সে বলে র্ভৎসনা ছলে
কপালে রাখিয়া হাত,
তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারে
তোমার কি নাই দাতঁ?
কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল
“তুই রে হাসালি মোরে,
দাঁত আছে বলে কুকুরের পায়ে
দংশি কেমন করে?”
কুকুরের কাজ কুকুর করেছে
কামড় দিয়েছে পায়,
তা বলে কুকুরে কামড়ানো কিরে
মানুষের শোভা পায়?