উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০০৭ এর ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা ,প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন: কোনো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, কার্যাবলি, ঘটনা বা অবস্থা যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয়, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে। এই ধরনের প্রতিবেদন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ভ্রমণ অথবা গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন, কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে গোলযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর ষান্মাসিক, বার্ষিক কিংবা দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন, কোথাও সংঘটিত দুর্ঘটনা, চুরি, ডাকাতি কিংবা লুটপাট সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০০৭ এর ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করে প্রতিবেদন
কলেজ পরিচালনা কমিটির আদেশক্রমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিম্নে “ক’-কলেজের
ফলাফল বিপর্যয়ের” কারণ চিহ্নিত করে তার একটি প্রতিবেদন পেশ করা হল ।
প্রতিবেদনের লক্ষ্য : ১। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০০৭-এর ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করণ ২। প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান।
তথ্যানুসন্ধান : ১। তথ্যানুসন্ধানের লক্ষ্যে প্রথমেই অকৃতকার্য ছাত্রদের তালিকা তৈরি করা হয়;
২।প্রকাশিত ফলাফল ও বোর্ড থেকে প্রাপ্ত নম্বর সংগ্রহ করা হয়;
৩। তালিকানুযায়ী অকৃতকার্য ছাত্রদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ৪। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা এবং
৫। বিষয়-শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
কারণ চিহ্নিতকরণ :
উল্লিখিত তথ্যানুসন্ধান ও পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০০৭-এর ফলাফল বিপর্যয়ের
ক্ষেত্রে যে সব কারণ চিহ্নিত করা গেছে তা নিম্নরূপ :
১। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মাত্র এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। একাধিক বিষয়ে কেউ-ই অকৃতকার্য হয় নি।
২। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় এটি স্পষ্ট হয় যে, প্রশ্নপত্রের ধরনে আমূল পরিবর্তন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা-প্রস্তুতি কেমন হওয়া প্রয়োজন সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিতে ব্যর্থ হয়। ৩। পাঠ্যবই ভিত্তিক প্রশ্ন হওয়ার কারণে এবং প্রশ্নের ধরনেও পরিবর্তন থাকায় শিক্ষার্থীরা সঠিক প্রশ্নোত্তর করতে পেরেছেবলে মনে হয় না। কারণ অনেক শিক্ষার্থীই প্রশ্নে কী চাওয়া হয়েছে অর্থাৎ প্রশ্নোত্তরটি কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে নি।
৪। বছর বছর সিলেবাস পরিবর্তন, আধুনিকায়ন, পাঠ্য বইয়ের সংশোধন ইত্যাদি কারণগুলোও বিশেষভাবে শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
৫। পাঠ্য বিষয়ের পঠন-পাঠনেও শিক্ষকদের ব্যর্থতা রয়েছে। এ বিষয়ে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বলেন যে, এটির জন্য অনুচ্ছেদের ৪ নম্বরে বর্ণিত কারণসমূহ দায়ী। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা গাইড ও নোট বই ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর মুখস্থ করার কারণেও তারা এই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।

সুপারিশ
১। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর তাদের সিলেবাস সম্পূর্ণ করতে হবে।
২। শ্রেণিভিত্তিক পাঠদানকে অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে।
৩। টিউটোরিয়াল পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পঠন-পাঠনের মান নিশ্চিত করতে হবে।
৪। শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ যাতে বছরের শুরুতেই সংশোধিত ও নতুন পাঠ্যপুস্তক, সিলেবাস শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারে সে বিষয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
৫। বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ৬। বিজ্ঞান-বিষয়ের শিক্ষক সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য কম করে হলেও দুজন শিক্ষক প্রয়োজন।
সর্বোপরি পঠন-পাঠনে ছাত্র-শিক্ষক ও কলেজ কর্তৃপক্ষ সবাইকে অধিকতর সচেতন হতে হবে।
বিনীত
সদস্য, কলেজ পরিচালনা কমিটি,
…কলেজ, বগুড়া।
আরও দেখুন: