আমার জীবনের লক্ষ্য, জীবনের লক্ষ্য [ My Aim in Life ] অথবা, জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।
Table of Contents
আমার জীবনের লক্ষ্য রচনার ভূমিকা:
প্রত্যেকের জীবনেই কোন না কোন লক্ষ্য থাকে। লক্ষ্যহীন জীবন হালছাড়া নৌকার মত। হালছাড়া নৌকা যেমন কোনদিনই নির্দিষ্ট ঘাটে পৌঁছে না, লক্ষ্যহীন জীবনও তেমনি কোনদিন অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে না।
মূল বক্তব্য:
(ক) আমার জীবনের লক্ষ্য:
আমি একজন ছাত্র। ভবিষ্যত জীবনের লক্ষ্য এখন থেকেই পাকাপোক্ত করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। আমার জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য আমি একজন আদর্শ শিক্ষক হব। দেশের ভাগ্যাহত অন্ধ লোকনের অন্তরে আমি শিক্ষার আলো জ্বালাতে চাই। অন্ধ মানুষের চোখে আমি সত্য ও জ্ঞানের আলো ফোটাতে চাই।
(খ) অনুরূপ লক্ষ্যের কারণ:
আমার বন্ধু-বান্ধবেরা অনেকেই ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যবসায়ী হয়ে হঠাৎ বড়লোক হতে চায়। আবার কেউ চায় উকিল-ব্যারিস্টার হতে। কিন্তু তাদের সবারই লক্ষ্য দ্রুত বড়লোক হওয়া বা অর্থ সম্পত্তির মালিক হওয়া। কিন্তু আমি জানি ডাক্তারেরা ফি না দিলে রোগী দেখে না, ব্যবসায়ীরা ক্রেতা ঠকায়, উকিলেরা মিথ্যা মামলায় উৎসাহিত করে। একমাত্র শিক্ষকতা পেশাকেই আমার পবিত্র বলে মনে হয়।
পরের সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে স্নেহ-আদর দেয়ার পেশা আর দ্বিতীয়টি নেই। আমি দেখেছি, ডাক্তারকে মানুষ অভিশাপ দেয়, উকিলকে গালি দেয়, ইঞ্জিনিয়ারকে ঘুষ খাওয়ার অপবাদ দেয়। কিন্তু একমাত্র শিক্ষককেই সমাজের সর্বস্তরের লোকেরা অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করে, ভালবাসে।
নিজের সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্ব পরমাত্মীয়ের মত নির্ভরশীলতার সাথে একমাত্র শিক্ষকের হাতে তুলে দিয়েই তারা নিশ্চিন্তে ঘুমুতে পারেন, অন্য কারও হাতে নয়। সমাজ শিক্ষকদেরকে দ্বিতীয় জন্মদাতার সম্মানে ভূষিত করেছে। এর চেয়ে বড় সম্মান আর কোন পেশায় নেই। তাই আমি আমার জীবনের লক্ষ্য হিসেবে শিক্ষকতার পেশাকেই বেছে নিয়েছি।
(গ) লক্ষ্যে পৌঁছার পর করণীয়:
আমি শিক্ষক হয়ে গ্রামাঞ্চলের কোন স্কুলে থাকতে চাই। আমি গ্রামের স্কুলে পড়াশুনা করছি বলে এখানকার জনমানুষের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছি। এখানকার অধিকাংশ লোকই অশিক্ষিত। তারা সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠানো বিলাসিতা মনে করে। বরং মাঠের বা ব্যবসার কাজে লাগানোই লাভজনক মনে করে। আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিভাবকদের বুঝিয়ে তাদের স্কুলমুখো করতে চাই। তাছাড়া গ্রামের বয়স্ক লোকদেরকে তাদের অবসর সময়ে আমি লেখাপড়া শেখাতে চাই। এভাবে তাদের অন্তরে শিক্ষার আলো একবার জ্বেলে দিতে সক্ষম হলে তা আর কখনও নিভবে না। তারা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে, ভালমন্দ বুঝতে শিখবে। এভাবেই আমি জনসেবা করার সুযোগ পাব।
উপসংহার:
নিরক্ষর অশিক্ষিত লোকের বুকে আলো জ্বালাতে, তাদের মুখে ভাষা ফোটাতে আমি শিক্ষকতার মহান পেশা বেছে নিয়েছি। সমাজকে শিক্ষাদানের পাশাপাশি কুসংস্কার মুক্ত করে গড়ে তোলাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। খোদা আমার সহায় হোন।
আরও পড়ুন: