অপাদান কারক | অধিকরণ কারক | কারক ও বিভক্তি | ভাষা ও শিক্ষা

অপাদান কারক | কারক ও বিভক্তি | ভাষা ও শিক্ষা , যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে। যেমন : তিলে তেল হয়। গাছ থেকে পাতা পড়ে। জমি থেকে ফসল পাই। পাপে বিরত হও। বিপদ থেকে বাঁচাও। সোমবার থেকে পরীক্ষা শুরু।

অপাদান কারক

অপাদান কারক নির্ণয়ের জন্যে ক্রিয়াপদ ধরে ‘কোথা থেকে’, ‘কী থেকে’, ‘কীসের থেকে’ এসব প্রশ্ন করতে হয় এবং তার উত্তরে অপাদান কারক জানতে পারা যায়। যেমন : বিপদে মোরে রক্ষা করো। কোথা থেকে? বিপদে (=বিপদ থেকে), তাই ‘বিপদে’ অপাদান কারক। যেমন- সুখের চেয়ে শান্তি ভাল। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু । . অপাদান কারকে বিভিন্ন বিভক্তি ছাড়াও ‘হইতে’, ‘হতে’, ‘থেকে’, ‘দিয়া’, ‘দিয়ে’ ইত্যাদি অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। ~ অপাদান কারকে বিভক্তির প্রয়োগ হয়। প্রথমা বা শূন্য বিভক্তি : গাড়ি ঢাকা ছাড়ল। বাড়ি ঘুরে এসো। সবাই বাঘকে ভয় করে। বাবাকে ভয় করি না। দ্বিতীয়া বিভক্তি ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না। ষষ্ঠী বিভক্তি সপ্তমী বিভক্তি দুধে ছানা হয়।

অধিকরণ কারক

পাঠাগারে পড়ে। বাক্যে যে পদে ক্রিয়ার আধারকে বোঝায় তাকে বলে অধিকরণ কারক। ক্রিয়াপদ ধরে কোথায়, কোন স্থানে, কখন, কোন সময়ে, কবে, কোন বিষয়ে বা ব্যাপারে— এসব প্রশ্ন করলে তার উত্তরে অধিকরণ কারক পাওয়া যায়। যেমন : পড়ুয়ারা ক্লাসে পড়ে। কোথায় পড়ে? ক্লাসে অর্থাৎ ক্লাসের মধ্যে। তাই ক্লাসে অধিকরণ কারক । তারা সকালে পড়ে। —কখন পড়ে? সকালে। ‘সকালে’ অধিকরণ কারক। এরকম— – বুড়ীগঙ্গার তীরে ঢাকা মহানগরী। পাতায় পাতায় পড়ে নিশির শিশির। অধিকরণ কারকের প্রকারভেদ অধিকরণ কারক প্রধানত তিন প্রকারের হয়। যেমন— কালাধিকরণ : যে অধিকরণে ক্রিয়ার কাল বোঝায় তাকে কালাধিকরণ বলে।

 

অপাদান কারক | অধিকরণ কারক | কারক ও বিভক্তি | ভাষা ও শিক্ষা

 

যেমন— কাল সকালে এসো। বসন্তে ফুল ফোটে। আধারাধিকরণ : যে অধিকরণে ক্রিয়ার আধার বা স্থান বোঝায় তাকে আধারাধিকরণ বলে। যেমন- পুকুরে মাছ আছে। তুমি এ পথে যেয়ো। আধারাধিকরণ তিন ভাগে বিভক্ত : ক. ঐকদেশিক খ. অভিব্যাপক গ. বৈষয়িক। ক. ঐকদেশিক : বিরাট স্থানের যে কোনো অংশে ক্রিয়া সংঘটিত হলে তাকে ঐকদেশিক আধারাধিকরণ বলে। যেমন— পুকুরে মাছ আছে। বনে বাঘ আছে। খ. অভিব্যাপক : উদ্দিষ্ট বস্তু যদি সমগ্র আধার ব্যাপ্ত করে বিরাজমান থাকে, তবে তাকে অভিব্যাপক আধারাধিকরণ বলে। যেমন— সাগরে জল আছে। তিলে তৈল আছে।

 

অপাদান কারক | অধিকরণ কারক | কারক ও বিভক্তি | ভাষা ও শিক্ষা

 

গ. বৈষয়িক : বিষয়-বিশেষে বা কোনো বিশেষ গুণে কারও কোন দক্ষতা বা ক্ষমতা থাকলে সেখানে কঙ্গো বৈষয়িক আধারাধিকরণ হয়। যেমন— শফিক অঙ্কে ভাল, কিন্তু ইতিহাসে কাঁচা। ভাবাধিকরণ : যদি কোনো ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য অন্য ক্রিয়ার কোনোরূপ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তবে তাকে G. ভাবাধিকরণ বলে। কার ভাবাধিকরণ সর্বদাই সপ্তমী বিভক্তির প্রয়োগ হয় বলে একে ‘ভাবে সপ্তমী’ বলা হয়। যেমন— – সূর্যোদয়ে অন্ধকার দূরীভূত হয়। কান্নায় শোক মন্দীভূত হয়। ‘অধিকরণ কারকে বিভক্তির প্রয়োগ প্রথমা বা শূন্য বিভক্তি শফিক চাটগাঁ থাকে। তুমি এখন বাড়ি যেতে পার তৃতীয়া বিভক্তি পঞ্চমী বিভক্তি পথ দিয়ে চল। বড় রাস্তা দিয়ে যেও। ছাদ থেকে পানি পড়ে। বাড়ি থেকে টাকাটা চেয়ে দেখ ৷ সপ্তমী বিভক্তি : আহারে রুচি নেই। এ বাড়িতে কেউ নেই।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আরও দেখুন:

 

Leave a Comment