স্বদেশ প্রেম , বাঙালীর স্বদেশ প্রেম প্রতিবেদন রচনা । Essay on Country love

স্বদেশ প্রেম , বাঙালীর স্বদেশ প্রেম [ Essay on Country love ] অথবা, স্বদেশপ্রেমের শিক্ষা – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।

 

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

স্বদেশ প্রেম রচনার ভূমিকা :

প্রতিটি মানুষের সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল তার নিজের মাতৃভূমি। নিজ দেশের আলাে, জল, মাটির স্পর্শে আমাদের সকলের ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা। দিন শেষে একটি পাখি তার নীড়ে ফিরে যায়, কারণ সে তার আশ্রয়স্থলকে ভালোবাসে।

দেশপ্রেম মানুষের সহজাত একটি প্রবৃত্তি। এটি প্রতিটি মানুষের অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। শৈশব থেকে যে মাটিতে আমাদের বেড়ে উঠা তার প্রতিটি ধূলিকণা আমাদের নিকট অতি প্রিয় ও পবিত্র। স্বদেশপ্রেম প্রতিটি মানুষকে দেশের কল্যাণে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।

স্বদেশপ্রেম কিঃ

আমরা যে দেশে জন্মগ্রহণ করি সেটি আমাদের মাতৃভূমি। এই মাতৃভূমির সাথে আমাদের সম্পর্ক ভীষণ গভীর। জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, মমত্ববোধ হচ্ছে স্বদেশপ্রেম। উন্নত, শান্তিময় দেশ গড়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে সে দেশের নাগরিকদের দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থাকতে হবে। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত বলেছেন-

‘স্বদেশের শাস্ত্রমতে, চল সত্য ধর্ম পথে।

সুখে কর জ্ঞান আলোচন।

বৃদ্ধি কর মাতৃভাষা,

পুরাও তাহার আশা।

দেশে কর বিদ্যা বিতরণ।

স্বদেশপ্রেমের উৎসঃ

প্রতিটি মানুষ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে নিজেকে। নিজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই সৃষ্টি হয় স্বদেশপ্রেমের। কারণ, জন্মের পর আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হচ্ছে মা ও মাতৃভূমি। তাই, মাতৃভূমির প্রতি আমাদের সকলের গভীর মমত্ববোধ সৃষ্টি হয়। মাছকে যেমন জল থেকে তুলে আনলে ছটফট করতে থাকে তেমনি নিজ মাতৃভূমি থেকে দূরে গেলে মানুষ স্বদেশের প্রতি গভীর আবেগ অনুভব করতে পারে। কবির ভাষায়-

“স্বদেশের প্রেম যত সেই মাত্র অবগত

বিদেশেতে অধিবাস যার,

ভাব তুলি ধ্যানে ধলে, চিত্রপটে চিত্র করে

স্বদেশের সকল ব্যাপার।”

অজান্তেই বেজে উঠে-

“আমার কুটির খানি

সে যে আমার হৃদয় রাণী”

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

স্বদেশপ্রেমের রূপরেখাঃ

আমরা যে দেশে জন্মগ্রহণ করি, সে দেশে বেড়ে উঠি সে দেশের মাটি, জল, বাতাস, সেখানকার জনবসতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছুর সাথে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে৷ স্বদেশের প্রতিটি ধূলোকণার সাথে আমাদের সম্পর্ক আত্নিক। কোন কিছুর মাপকাঠিতে এই ভালোবাসা পরিমেয় নয়। স্বদেশের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয় মাতৃভূমির প্রতি শ্রদ্ধা। এই শ্রদ্ধাকে সাথে নিয়ে মানুষ তার দেশের কল্যাণে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ভাষায়-

”মনে মনে স্থির ভাবে কর প্রণিধান।

যাহাতে দেশের হয় কুশল বিধান ॥ “

স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তিঃ

স্বদেশপ্রেম আমাদের অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে৷ যখন দেশের উপর শত্রুপক্ষের আঘাত আসে বা কেউ দেশের সম্মানে আঘাত হানে, তখন আমরা বুঝতে পারি স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা কতটা গভীর। তখন নিজের দেশের তরে নিজের জীবনকেও তুচ্ছ গণ্য হয়৷ দেশপ্রেম প্রকাশিত হয় নিজ দেশের মানুষের বিপদে পাশে থাকার মাধ্যমে। যখন বিদেশি শত্রু দেশের স্বাধীনতায় আঘাত হানে তখন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শত্রুপক্ষের মোকাবেলা করা হচ্ছে দেশপ্রেম। কবিগুরু বলেছেন-

‘যে তােমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তােমায় ছাড়ব না মা,

আমি তােমার চরণ –

মা গাে, আমি তােমার চরণ করব শরণ, আর কারাে ধার ধারব না মা ॥

কে বলে তাের দরিদ্র ঘর, হৃদয়ে তাের রতনরাশি –

আমি জানি গাে তার মূল্য জানি, পরের আদর কাড়ব না মা।

মানবজীবনে স্বদেশপ্রেমের প্রভাবঃ

স্বদেশপ্রেম মানবীয় গুণাবলির মধ্যে অন্যতম। দেশের প্রতি অনুগত একজন কখনো অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা করতে পারে না৷ তার মাধ্যমে দেশের, সমাজের কোন উন্নতি না হলেও কোন ক্ষতি হয়না। স্বদেশপ্রেমে মন থেকে সংকীর্ণতা দূর করে সে মনে সঠিক আলোর দিশা জাগ্রত করে।

একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক নিজের সকল স্বার্থত্যাগ করে দেশের মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসে৷ দেশেপ্রেম একজন মানুষের মনকে প্রকৃত মনুষ্যত্বের সঙ্গায় সঙ্গায়িত করার ক্ষমতা রাখে। প্রকৃত দেশপ্রেমিকের চোখে তার দেশ সকল দেশের সেরা৷ কবি সমুদ্র গুপ্তের ভাষায়-

“স্বদেশপ্রেম থেকে বিশ্বপ্রেম। যে নিজের দেশকে ভালােবাসে, সে বিশ্বপ্রেমিক, মানব-প্রেমিক মানবতাবাদী।”

অন্ধ স্বদেশপ্রেমঃ

দেশের নাগরিকদের মধ্যে স্বদেশপ্রেম বিরাজমান থাকা অবশ্যই সকল রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর। কিন্তু এই স্বদেশপ্রেম যদি কোন নাগরিকের মধ্যে উগ্রতা সৃষ্টি করে তবে তা হতে পারে ভয়ানক। আমার দেশকে আমি ভালোবাসি তাই আমি অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি কামনা করবো- এমন মনোভাব কখনো কোন রাষ্ট্রের জন্য শুভ ফলাফল বয়ে আনতে পারে না।

এমন স্বদেশপ্রেম কখনোই প্রকৃত দেশপ্রেম হতে পারেনা, এটিকে বলা যেতে পারে অন্ধ স্বদেশপ্রেম। প্রতিবেশীর হাড়ি পুড়িয়ে যেমন কখনো কেউ মানসিক শান্তিতে খেতে পারেনা, তেমনি অকারণে অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি করে কোন রাষ্ট্রের পক্ষে উন্নয়নের শিখরে আরোহন সম্ভব নয়। অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি কামনা মানে নিজের পায়ে কুড়াল মারা তা কবিগুরুর নিম্নোক্ত উক্তি থেকে বোঝা যায়-

যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাঁধিবে যে নীচে

পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।

স্বদেশপ্রেমের উপায়ঃ

প্রকৃত দেশপ্রেম প্রকাশ পায় দেশের জন্য কিছু করার তীব্র ইচ্ছের মাধ্যমে। আমরা সকলে নিজের অবস্থান থেকে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারি। যদি আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হই, দেশের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই তবে সেটি হবে আমাদের তরফ থেকে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। প্রত্যেক দেশে এমন কিছু মানুষ থাকে যারা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশের ক্ষতি সাধনে পিছপা হয়না। কবি আব্দুল হাকিম এই ধরনের মানুষকে পশুর সাথে তুলনা করে বলেছেন-

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন,

কে বলে মানুষ তারে? পশু সেই জন।

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

স্বদেশপ্রেমের শিক্ষাঃ

স্বদেশপ্রেম মানুষকে ত্যাগী হতে শিক্ষা দেয়। “ভোগে নয়, ত্যাগেই সুখ” এই কথাটি সেই ব্যক্তি বিশ্বাস করে যার মনে দেশের জন্য অগাধ ভালোবাসা থাকে৷ দেশপ্রেম মানুষকে সংকীর্ণতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে উদারমনা হওয়ার শিক্ষা দেয়। দেশপ্রেমে বিশ্বাসী নাগরিক সর্বদা অন্যের কল্যাণে এগিয়ে আসতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকে৷ কারণ সে জানে দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা। কবি গোবিন্দ চন্দ্র দাস বলেছেনঃ

জননী জন্মভূমি তোমারি পরশে জীবন

দিতেছে জীবন মোরে নিশ্বাসে নিশ্বাসে ।

সুন্দর মুখ উজ্জ্বল তপন ।

হেরেছি প্রথমে আমি তোমারি আকাশে

তেজীয়ে মায়ের কোলেতে শিখিয়াছি

ঝুলি খেলা তোমারি ধূলিতে ।

ছাত্রজীবন ও স্বদেশপ্রেমঃ

কোন দেশের ভবিষ্যৎ কান্ডারী সে দেশের ছাত্ররা। তারাই একটি দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। ছাত্রদের কর্তব্য স্বদেশপ্রেম শুধু বইয়ের পাতাতে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তব জীবনে তার চর্চা করা৷ বলা হয়ে থাকে ছাত্রজীবন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। যদি ছাত্ররা দলবদ্ধ ভাবে দেশের জন্য কাজ করার শপথ নেয় তবে সেটি হবে প্রকৃত দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। যদি তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তবে সেটি হবে প্রকৃত দেশপ্রেম। বিদ্রোহী কবির ভাষায়ঃ

“কারার ঐ লৌহ কপাট

ভেঙে ফেল কররে লোপাট

রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী।”

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

সাহিত্য ও দেশপ্রেমঃ

মাইকেল মধুসূদন দত্ত নিজের ভাষাকে গুরত্বহীন জ্ঞান করে পাড়ি জমিয়েছিলেন ভিন দেশে। বিদেশ পাড়ি জমানোর পর তিনি তার প্রতিভার কোন মূল্য সেখানে পান নি৷ নিজ ভুল বুঝতে পেরে নিজ দেশে ফিরে এসে দেশমাতৃকাকে উৎসর্গ করে তিনি লিখেছেন-

বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে?

সাহিত্য মানবজীবনের প্রতিচ্ছবি। কবিতা, উপন্যাস আমাদের জীবনধারাকে বইয়ের পাতায় পরিস্ফুট করে৷ রবীন্দ্রনাথ, নজরুল তাদের কলমে বাংলার রূপ তুলে ধরেছেন৷ জাহানারা ইমামের “একাত্তরের দিনগুলো, হুমায়ুন আহমেদের ” আগুনের পরশমণি ” আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে। মহাকবি কায়কোবাদ তার বাংলা আমার কবিতায় লিখেছেনঃ

বাংলা আমার

আমি বাংলার,

বাংলা আমার জন্মভূমি

গঙ্গা ও যমুনা,

পদ্মা ও মেঘনার

বহিয়াছে চরণ চুমি ।

স্বদেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত:

কোন এক স্বাধীন দেশের গল্প রচনার পেছনে অনেক মহৎপ্রাণের আত্মত্যাগ জড়িয়ে থাকে৷ এ উপমহাদেশে শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, তিতুমীর, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাস বসু প্রমুখ ব্যক্তি দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন অকাতরে। দেশপ্রেম তাদের মৃত্যুর পরেও অমর করে রেখেছে৷ আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন, ভিয়েতনামের হো-চি-মিন, রাশিয়ার লেনিন ও স্টালিন, ইতালির গেরিবল্ডি প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ স্বদেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

৫২ এর ভাষা আন্দোলন ও স্বদেশপ্রেমঃ

১৯৪৭ এর দেশ বিভক্তির পর বর্তমান বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের অংশ( পূর্ব পাকিস্তান)। বাঙ্গালীর দেশপ্রেমে প্রথম আঘাত আসে তখন যখন পশ্চিম পাকিস্তান উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। রফিক, সালাম, জব্বারের মত তরুণেরা এই অন্যায় ঘোষণাকে প্রশ্রয় দেয়নি।

১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে তারা সেদিন দেশ মাতৃকার টানে, মায়ের ভাষার সম্মান রক্ষার্থে নেমেছিল রাজপথে। সেদিন এই দেশপ্রেমিক তরুণদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের বাংলা ভাষা৷

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং ২০১০ সালে জাতিসঙ্গের সাধারণ পরিষদ ‘এখন’ থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হবে’ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অতুলপ্রসাদ সেনের সুরে সুর মিলিয়ে আমরা বলতে পারি৷

“মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!”

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

স্বদেশ প্রেম ও বিশ্বপ্রেমের মধ্যে সম্পর্কঃ

‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা

তোমাতে বিশ্বময়ী-তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।’

কবিগুরুর এই দুটো লাইনে আমরা স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেমের সম্পর্ক অনুধাবন করতে পারি৷ স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ ব্যতীত আর কিছু নয়। ধরুন, আপনি শুধু চাইছেন আপনার নিজ দেশ ভালো থাকুক, আর অন্য সব দেশ সংঘাতের মধ্যে দিয়ে দিন পার করুক৷ তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার মন সংকীর্ণতার বেড়াজালে আটকে আছে৷ মূলত, স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম একসূত্রে গাঁথা। স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে সৃষ্টি হয় বিশ্বপ্রেমের।

১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বিশ্বপ্রেমঃ

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভিনদেশিদের এগিয়ে আসা প্রমাণ করে দেয় স্বদেশপ্রেমের সাথে বিশ্বপ্রেমের সম্পর্ক কতটা নিবিড়। ডাচ বংশদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ওডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের গণহত্যার ভয়াবহতার কিছু ছবি গোপনে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন।

আগস্ট মাসের দিকে তিনি টঙ্গীতে বাটা কোম্পানির ভিতরে গেরিলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং টঙ্গী ও এর আশপাশ এলাকায় বেশ কয়েকটি সফল গেরিলা হামলা চালিয়েছিলেন৷

বিখ্যাত ভারতীয় সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসন কর্তৃক পরিচালিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ বিশ্বমন্ডলে স্বাধীনতাকামী বাঙালীর সংকটের কথা তুলে ধরেছিল। এমনই অনেক বিদেশীর সব ভুলে আমাদের দেশের জন্য এগিয়ে আসা সেদিন বিশ্বকে মনে করিয়ে দিয়েছিল স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম একসূত্রে আবদ্ধ৷

স্বদেশ প্রেম ও মূল্যবোধঃ

মূল্যবোধের সাথে স্বদেশপ্রেম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। স্বদেশপ্রেম পুরো জাতিকে স্বার্থত্যাগ করে দেশের কল্যাণে কাজের শিক্ষা দান করে। স্বদেশপ্রেমে দীক্ষিত জাতি সর্বদা অন্যায় থেকে বিরত থাকে কারণ স্বদেশপ্রেম মূল্যবোধের শিক্ষা প্রদান করে। মানুষের আচরণ পরিচালনাকারী নীতি ও মানদণ্ড সাধারণত মূল্যবোধ নামে পরিচিত। আর স্বদেশপ্রেম এই মূল্যবোধকেই জাগ্রত করে।

স্বদেশ প্রেম রচনা । Essay on Country love । প্রতিবেদন রচনা

উপসংহারঃ

স্বদেশপ্রেম মানে দেশের সকল জনগণ একত্রিত হয়ে হিংসা ভেদাভেদ, সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ভুলে দেশের কল্যাণে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করবেন৷ যে জাতি যতটা একতাবদ্ধ তাদের উন্নয়ন ঠিক ততটাই মজবুত। জনগণ দেশের ভিত্তি আর দেশপ্রেম এই ভিত্তির মূলস্তর। উইলিয়াম এইচ বার্নহাম বলেছেন-

“দেশপ্রেমের মূল কথা হচ্ছে জনগনের কল্যাণে ব্যক্তিগত স্বার্থকে ত্যাগ করা ।”

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment