সূর্যতামসী কবিতা – জীবনানন্দ দাশ [ জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা ]

সূর্যতামসী কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশ এর “জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা ” সংকলনের অংশ।জীবনানন্দ দাশ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত (১৯৫৩) হয়। ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি।

জীবনানন্দ দাশ এর জন্ম জয়ন্তীতে অসীম শ্রদ্ধা
জীবনানন্দ দাশ এর জন্ম জয়ন্তীতে অসীম শ্রদ্ধা

সূর্যতামসী কবিতা – জীবনানন্দ দাশ

কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর;
কোথাও ভোরের বেলা র’য়ে গেছে— তবে।
অগণন মানুষের মৃত্যু হ’লে— অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন্ সিন্ধুর স্বর:
মরণের— জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।
একটি রাত্রির ব্যথা স’য়ে—
সময় কি অবশেষে এ-রকম ভোরবেলা হ’য়ে
আগামী রাতের কালপুরুষের শস্য বুকে ক’রে জেগে ওঠে।
কোথাও ডানার শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর—
দক্ষিণের দিকে,

 

উত্তরের দিকে,
পশ্চিমের পানে।
সৃজনের ভয়াবহ মানে;
তবু জীবনের বসন্তের মতন কল্যাণে
সূর্যালোকিত সব সিন্ধু-পাখিদের শব্দ শুনি;
ভোরের বদলে তবু সেইখানে রাত্রি-করোজ্জ্বল
হ্বিয়েনা, টোকিও, রোম, মিউনিখ— তুমি?
সার্থবাহ, সার্থবাহ, ওই দিকে নীল
সমুদ্রের পরিবর্তে আটলান্টিক চার্টার নিখিল মরুভূমি!
বিলীন হয় না মায়ামৃগ— নিত্য দিকদৰ্শিন;
অনুভব ক’রে নিয়ে মানুষের ক্লান্ত ইতিহাস
যা জেনেছে— যা শেখেনি—
সেই মহাশ্মশানের গর্ভাঙ্কে ধূপের মতো জ্ব’লে
জাগে না কি হে জীবন— হে সাগর—
শকুন্ত-ক্রান্তির কলরোলে।

সূর্যতামসী কবিতা | জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা | জীবনানন্দ দাশ

 

আরও দেখুনঃ

 

সূর্যতামসী কবিতা | জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা | জীবনানন্দ দাশ

Leave a Comment