বিপরীত শব্দের আবশ্যকতা নিয়ে আজকের আলোচনা। সকল ভাষার মতো বাংলা ভাষাতেও বিপরীত-শব্দের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। ভাষার গাঁথুনি শক্ত করতে হলে এবং প্রকাশক্ষমতা বাড়াতে হলে আমাদের শব্দের ভাণ্ডার বাড়ানো অপরিহার্য।
বিপরীত শব্দের আবশ্যকতা
বিপরীত-শব্দের অধ্যয়ন আমাদের শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধিতে যথেষ্ট সহায়ক। নিচে এর প্রয়োজনের দিকগুলো তুলে ধরা হল :
১। বিপরীত ভাববোধক শব্দসমূহ শব্দজ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ করে ও ভাষাকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে। এতে শব্দের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা জন্মে।
২। দুটি বিপরীতধর্মী শব্দের ব্যবহারে বক্তব্য বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
৩। সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী মনোভাব প্রকাশের জন্যে বিপরীত শব্দের প্রয়োজন হয়।
৪। মনের ভাব যথাযথরূপে প্রকাশ, ভাষার শ্রুতিমাধুর্য এবং সৌকর্য বর্ধনে বিপরীত শব্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫। বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়ের যুক্তিযুক্ত উপস্থাপনে বিপরীত-শব্দের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
৬। বিপরীত-শব্দ ভাবপ্রকাশের অনুকূল হওয়ায় ভাষাশৈলী সহজতর হয়। ৭। বাক্য গঠনে বৈচিত্র্য আনয়ন করে।
বিপরীত শব্দ গঠন
বিপরীত-শব্দ গঠনে কিছু নিয়ম লক্ষ করা যায়। তবে গঠনগত দিক থেকে শব্দের বিপরীতার্থক শব্দগুলো প্রায়ই মূল শব্দের সঙ্গে সম্পর্কশূন্য। যেমন :
১। উপসর্গ যোগে : শব্দের পূর্বে অ, অন্, বি, নির, বে, অনা, অব, দুর, ন, না, নি, নির্ ইত্যাদি উপসর্গ যোগে বিপরীত শব্দ গঠিত হয়।
২। সম্পূর্ণ ভিন্ন শব্দ বা বিপরীত শব্দযোগে : সম্পূর্ণ ভিন্ন শব্দ দ্বারাও বিপরীত-শব্দ গঠিত হয়। যেমন : উত্তম— অধম, ভালো— মন্দ ইত্যাদি।
৩। শব্দের শেষে অন্য শব্দ যোগ করে : শব্দের শেষে হীন, শূন্য, বিহীন, ছাড়া, হারা ইত্যাদি শব্দযোগে বিপরীত শব্দ গঠিত হয়। যেমন : বুদ্ধিমান — বুদ্ধিহীন, যুক্তিপূর্ণ— যুক্তিশূন্য, সভ্য— সভ্যতাবিহীন, লাগাম— লাগামছাড়া, গৃহ— গৃহহারা ইত্যাদি।
আরও দেখুন:
- বিপরীতার্থক শব্দ বা বিপরীত শব্দ | বিপরীত শব্দের আবশ্যকতা | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা
- সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দের নমুনা | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা
- বাক্যে সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা
- সমার্থক শব্দ বা সমার্থশব্দ বা প্রতিশব্দ | সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দের প্রয়োজন | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা
- আমনে বাম্পার ফলন হবে,খাদ্য সংকট হবে না , পেঁয়াজ রপ্তানিও করতে পারব- কৃষিমন্ত্রী