বানান সম্পর্কিত জ্ঞানের প্রয়োজন নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি আমাদের ভাষা ও শিক্ষা সিরিজের বাংলা বানান ও বানানের নিয়ম এর পাঠ |
বানান সম্পর্কিত জ্ঞানের প্রয়োজন
বানান-পদ্ধতি হচ্ছে ব্যাকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনো ভাষার মৌলিক শব্দের গঠন কীরূপ হবে কিংবা যৌগিক শব্দ গঠনের ক্ষেত্রে বানানের নিয়মে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা, তা জানার একমাত্র উপায় এই বানান – পদ্ধতি। যেহেতু ভাষা পরিবর্তনশীল, তাই ভাষার সামগ্রিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যে ব্যাকরণের এই অপরিহার্য অংশটুকু সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই নষ্ট ধারণা থাকা উচিত।
বাংলা বানান – পদ্ধতি মোটামুটি জটিল। কারণ আমাদের বর্ণমালায় এমন কতকগুলো ধ্বনি রয়েছে, যাদের উচ্চারিত রূপ এক ও অভিন্ন। সুতরাং বানান লিখতে গেলে বিভ্রান্তি ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। যেমন : ই, ঈ, উ, ঊ, শ, স, ষ, ন, ণ ইত্যাদি ধ্বনিগুলোর গঠনগত ভিন্নতা থাকলেও উচ্চারণের ক্ষেত্রে লক্ষযোগ্য তেমন কোনো পার্থক্য নেই। অথচ ‘সব’ এবং ‘শব’-এর মধ্যে অর্থপার্থক্য সুস্পষ্ট। তাই বানান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যাবশ্যক।
বাংলা ভাষায় সাধু ও চলিত দুই রীতির ভাষা ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে সাধুরীতিতে সংস্কৃতবহুল সমাসবদ্ধ তৎসম শব্দ বেশি ব্যবহার করা হয়। সাধু রীতির শব্দের বানান সুনির্দিষ্ট ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট রীতির বিধিনিষেধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সে জন্যে সাধু ভাষার বানান ব্যবহারে তেমন অসুবিধা হয় না, কিন্তু চলিত ভাষা মুখের ভাষা যারা গঠিত হওয়ায় তা পরিবর্তনশীল। সে কারণে চলিত ভাষার বানানের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে থাকে।
উভয় ভাষারীতিকে শুদ্ধভাবে ব্যবহার করতে হলে ব্যাকরণের রীতি বা নিয়মকানুন মেনে চলা অবশ্য প্রয়োজনীয়। সাধুরীতি প্রধানত সংস্কৃতনির্ভর বলে সংস্কৃত ভাষার বানানরীতি দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু চলিত ভাষার পরিবর্তনের কারণে বৈয়াকরণ ও বিশেষজ্ঞগণ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু নিয়মকানুন নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও দেখুন: