টেলিভিশন ও জাতীয় জীবনে টেলিভিশনের ভূমিকা প্রতিবেদন রচনা। Essay on Television

টেলিভিশন ও জাতীয় জীবনে টেলিভিশনের ভূমিকা[ Drug addiction and its remedies ] অথবা, টেলিভিশন ও বিশ্ব শিল্প  – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।

টেলিভিশন ও জাতীয় জীবনে টেলিভিশনের ভূমিকা প্রতিবেদন রচনা। Essay on Television
টেলিভিশন রচনা । Essay on Television

টেলিভিশন রচনা

টেলিভিশন ও জাতীয় জীবনে টেলিভিশনে রচনার ভূমিকা :

গ্রিক শব্দ ‘টেলি’ ও লাতিন শব্দ ‘ভিশন থেকে টেলিভিশন শব্দটি এসেছে। টেলি শব্দটির অর্থ হলাে দূরত্ব আর ভিশন অর্থ দেখা। টেলিভিশন মানুষের খুব গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এর মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনাে প্রান্তের যেকোনাে ঘটনা মুহূর্তেই আমাদের সামনে চলে আসে। বিনােদনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন এখন অগ্রগণ্য। বর্তমান পৃথিবীতে টেলিভিশনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টেলিভিশনের আবিষ্কার :

ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী জন বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। তার আবিষ্কৃত টেলিভিশনকে আরও সংস্কার করে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং ১৯৩৬ সালে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে টেলিভিশনের প্রচার করে। টেলিভিশন নিয়ে এখনাে চলছে নানা গবেষণা। পূর্বের মতাে টেলিভিশন এখন আর চোখে পড়ে না। পূর্বে যে টেলিভিশন ওজনে ও আয়তনে বৃহৎ ছিল, এখন তা আর তেমন নেই। বিজ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতির ফলে এখন এলসিডি, এলইডি, থ্রিডি ইত্যাদি প্রযুক্তির টেলিভিশন বাজারে দেখা যায়। এগুলাে প্রযুক্তিগতভাবে এত উন্নত যে, এতে ছবি দেখে জীবন্ত মনে হয়। তাছাড়া এগুলাে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।

টেলিভিশন রচনা । Essay on Television
টেলিভিশন রচনা । Essay on Television

টেলিভিশনের ব্যবহার :

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই টেলিভিশন ব্যবহার করা হয়। মূলত বিনােদনের মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে টেলিভিশন চালু হয়েছে আজ থেকে প্রায় আটচল্লিশ বছর আগে। বিনােদনের পাশাপাশি আমাদের দেশে টেলিভিশনে গণশিক্ষা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, পরিবারপরিকল্পনার মতাে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলাে প্রচার করে থাকে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন :

১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন তার যাত্রা শুরু করে। তবে ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন রঙিন অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করে। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রামের বেতবুনিয়ায় এবং তার পরে টাঙ্গাইলের তালিবাবাদে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপিত হয়। যার ফলে পৃথিবীর যেকোনাে প্রান্ত থেকে প্রেরিত দৃশ্য আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে দেখতে পাই।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল :

বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ কিছু বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চালু আছে। যেমন : এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই, এনটিভি, বাংলাভিশন, একুশে টেলিভিশন, বৈশাখী টেলিভিশন, সময় টেলিভিশন, আরটিভি, মােহনা টেলিভিশন, মাছরাঙা টেলিভিশন, চ্যানেল ২৪, দেশটিভি, একাত্তর (৭১) টিভি ইত্যাদি।

টেলিভিশন রচনা । Essay on Television
টেলিভিশন রচনা । Essay on Television

আমাদের জীবনে টেলিভিশনের উপযােগিতা :

বর্তমানে মানুষের জীবনে টেলিভিশন বিনােদনের প্রধান মাধ্যম। মানুষ তার অবসর কাটায় টেলিভিশনের সামনে বসে। মনের ক্লান্তি দূর করে টেলিভিশন দেখে। একটি টেলিভিশন ঘরে থাকলে সারা দুনিয়ার ঘটনাকে হাতের মধ্যে পাওয়া যায়। যেকোনাে প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের সমস্ত খবর আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। জনকল্যাণ ও জনসচেতনতামূলক যেকোনাে অনুষ্ঠান টেলিভিশনের মাধ্যমেই প্রচার করা হয়ে থাকে। শিক্ষাবিষয়ক অনুষ্ঠানগুলােও টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। টকশোগুলােতে বিভিন্ন মতামত প্রচারিত হয়।

টেলিভিশনের নেতিবাচকতা :

টেলিভিশন যেমন আমাদের আনন্দ দান করে, তেমনি এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অধিক সময় টেলিভিশন দেখলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে পারে। মাঝে মাঝে টেলিভিশনে ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পরিপন্থি অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এ অনুষ্ঠানগুলাে তরুণ মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

cropped Bangla Gurukul Logo টেলিভিশন ও জাতীয় জীবনে টেলিভিশনের ভূমিকা প্রতিবেদন রচনা। Essay on Television

 

উপসংহার :

বিজ্ঞান আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বিজ্ঞানের যুগে সবাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। দুনিয়ার সব খবর এখন মানুষের মুঠোর মধ্যে। টেলিভিশন এ কাজকে আরও সহজ করে দিয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে টেলিভিশন হয়ে উঠেছে অপরিহার্য। তবে টেলিভিশনে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু নীতিমালা থাকা উচিত, যা আমাদের কিশাের-তরুণদের সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে।

আরও পড়ুনঃ

 

 

Leave a Comment