অক্ষরবৃত্ত ছন্দ – বিষয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিষয়ের “ছন্দ ও অলঙ্কার” বিভাগের একটি পাঠ।
অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
উৎপত্তির বিচারে যে ছন্দটিকে আমরা খাঁটি বাংলা অর্থাৎ ‘তদ্ভর’ ছন্দ’ নামে আখ্যায়িত করেছি, তাকেই প্রচলিত ভাষায় বলা হয় অক্ষরবৃত্ত ছন্দ । যে ছন্দে শব্দের আদিতে ও মধ্যে যুগ্মধ্ব’নি থাকলে তা সংশ্লিষ্ট উচ্চারণে এক-মাত্রা এবং শেষে যুগ্মধ্ব’নি থাকলে বিশ্লিষ্ট উচ্চারণে দুই মাত্রা ধরা হয়, সে ছন্দকে অক্ষরবৃত্ত ছন্দ বলা হয়। এ ছন্দে অক্ষর উচ্চারণের ধ্বনি আচ্ছন্ন করে একটি অতিরিক্ত তান বা সুরের ‘তরঙ্গ সৃষ্টি হয়।
ফলে যুক্তাক্ষরবিহীন ও যুক্তাক্ষরবহুল সব চরণই এ ছন্দে দেখা যায়। মন্থর বা ধীর লয় বা গতির এ ছন্দ সাধারণত দুই পর্বের হয় এবং ৬, ৮ ও ১০ মাত্রার পর্বই এ ছন্দে বেশি দেখা যায়। বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা ছন্দ এ ছন্দের অন্তর্ভুক্ত। যেমন— তিনি মরিতে চাহিনা আমি । সুন্দর ভুবনে, । মানবের মাঝে আমি।
বাঁচিবারে চাই এই সূর্যকরে এই । পুষ্পিত কাননে । জীবন্ত হৃদয় মাঝে । যদি স্থান পাই। উপর্যুক্ত চরণগুলোর মাত্রাসংখ্যা যথাক্রমে ৮ + ৬ = ১৪ মাত্রার। প্রতি চরণে পর্ব সংখ্যা দুটি করে। সংজ্ঞার্থ : চোখের দেখা অর্থাৎ দৃষ্টিগ্রাহ্য বিযুক্ত বা যুক্ত অক্ষরকে একটিমাত্র মাত্রাহিসেবে গণনা করে যে ছন্দের অক্ষরকেই মাত্রাগণনার এককরূপে গ্রহণ করা হয়, যাবতীয় বিশ্লেষণ সম্ভবপর অথবা যে-জাতীয় ছন্দে দৃষ্টিগ্রাহ্য অক্ষরকেই মাত্রাগণনার তাকেই বলা হয় ‘অক্ষরবৃত্ত’ ছন্দ। অথবা, যে জাতীয় ছন্দে সর্বপ্রকার মুক্তদল একমাত্রাবিশিষ্ট এবং বদ্ধদল শব্দ শেষে দুই মাত্রা, কিন্তু অন্যত্র একমাত্রা ১ তাকেই বলা হয় ‘অক্ষরবৃত্ত ছন্দ’।

আরও দেখুন: